Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
SSKM Hospital

বিড়াল ধরার দায় কার? ফের প্রশ্ন তুলে দিল পিজি-র ঘটনা

অগত্যা বছরের পর বছর ধরে সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মর্জি মতো ঘুরে বেড়ানো বিড়ালের আঁচড়-কামড়ে রোগী, তাঁদের পরিজন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়াই যেন অলিখিত ভবিতব্য।

এসএসকেএমে ওষুধের পেটির উপরে বিড়াল।

এসএসকেএমে ওষুধের পেটির উপরে বিড়াল। ছবি: সমাজমাধ্যম থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২৪ ০৮:০৪
Share: Save:

কে ধরবে বিড়াল?

হাসপাতালের ওয়ার্ডের ভিতরে তাদের অবাধ বিচরণ নিয়ন্ত্রণ করার উপায় জানা নেই কারও! অগত্যা বছরের পর বছর ধরে সরকারি হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মর্জি মতো ঘুরে বেড়ানো বিড়ালের আঁচড়-কামড়ে রোগী, তাঁদের পরিজন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের আক্রান্ত হওয়াই যেন অলিখিত ভবিতব্য। সমস্যা যদিও নতুন নয়। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ওয়ার্ডে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে বিড়ালের উৎপাত। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুরসভার দাবি, তাদের বিড়াল ধরার পরিকাঠামো নেই। এমনকি, পশু সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, বিড়াল স্থানান্তরও করা যায় না।

সম্প্রতি বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ সমাজমাধ্যমে এসএসকেএমের মেন ব্লকের ম্যাকেঞ্জি ওয়ার্ডের কয়েকটি ছবি (যার সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি) পোস্ট করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ওয়ার্ডে অবাধে ঘুরছে কালো রঙের বিড়াল। ওষুধের পেটির উপরে, চেয়ারে দিব্য বসে-শুয়ে রয়েছে তারা। দিলীপ দাবি করেছেন, ওই হাসপাতালের যত্রতত্র বিড়াল ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মলমূত্র ত্যাগ করে নোংরা করছে। রোগীদের খাবারেও ভাগ বসাচ্ছে। আঁচড়ে-কামড়ে দিচ্ছে।

শহর থেকে জেলা, সর্বত্রই সরকারি হাসপাতালে বিড়াল-বাহিনীর উৎপাত দেখা যায় বলেই জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। কোথাও বিড়াল তাড়াতে রোগীকে শয্যার উপরে হাতে ছোট লাঠি নিয়েও বসে থাকতে দেখা যায়। আবার খেয়াল না রাখলে রক্ষে নেই। যেমন গত বছরই অভিযোগ উঠেছিল, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে রেডিয়োলজি বিভাগে এক রোগীর শরীরের উপরে উঠে পড়েছিল এক বিড়াল ছানা। সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকেই মাঝেমধ্যে বিড়ালের উৎপাত বন্ধের জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় না। বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বিড়ালের উৎপাত। হাসপাতালগুলির কর্তাদের কথায়, ‘‘বিড়ালের বংশবৃদ্ধি বন্ধ না করা গেলে, তাদের সংখ্যা আরও বাড়তেই থাকবে।’’

কলকাতার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তার কুকুরের নির্বীজকরণের কর্মসূচি আমরা করি। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশিকায় বিড়ালের বিষয়ে কিছু বলা নেই।’’ বিড়াল ধরার পরিকাঠামো তাদের নেই বলেও জানিয়েছেন পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরী। এসএসকেএম ও অন্যান্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কর্মী, রোগী ও পরিজনদের একাংশ বিড়াল-কুকুরদের খাবার দেন। সেই টানেই বিড়ালের অবাধ বিচরণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে ওয়ার্ডগুলি। পিজি-সহ অন্যান্য হাসপাতালের কর্তারা কিন্তু জানাচ্ছেন, বার বার অনুরোধ করা হয়, যত্রতত্র বিড়াল-কুকুরদের খাবার না দিতে।

প্রাণিকল্যাণ সংক্রান্ত এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার সুস্মিতা রায়ের কথায়, ‘‘বিড়াল ধরে অন্যত্র সরানো যাবে না। একমাত্র তাদের স্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা এবং নির্বীজকরণ করা যাবে। কিন্তু বিড়ালের স্থায়ী আশ্রয়স্থল সব ভর্তি। হাসপাতালগুলিও নির্বীজকরণের জন্য খরচ করে না।’’ তা হলে উপায় কী?

প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘কুকুর ধরে এনে নির্বীজকরণ করা হয়। কেউ বিড়াল নিয়ে এলে তাদেরও নির্বীজকরণ করা হয়। কিন্তু বিড়াল ধরে এনে কখনও করা হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘হাসপাতালে বিড়ালের উৎপাত যদি বেড়ে থাকে, দফতরের অধিকর্তাকে পদক্ষেপ করতে বলছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM Hospital PG Hospital cats
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE