— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা তৎকাল পরিষেবায় দ্রুত স্ক্রুটিনি বা রিভিউ করা যাবে। তবে এর জন্য লাগবে অতিরিক্ত মূল্য। চলতি বছর থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ এই নিয়ম চালু করেছে। তৎকালে রিভিউ এবং স্ক্রুটিনর ফলও প্রকাশ করে ফেলেছে তারা। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়ারা তৎকালের অতিরিক্ত মূল্য দিতে না পারায় এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
কেন এই বৈষম্য তৈরি করা হল?
সাধারণ ক্ষেত্রে একটি বিষয়ের খাতা স্ক্রুটিনি করতে লাগে ১৫০ টাকা এবং রিভিউয়ের জন্য লাগে ২০০ টাকা। তৎকালে স্ক্রুটিনির জন্য ৬০০ টাকা এবং রিভিউয়ের জন্য ৮০০ টাকা লাগে! অর্থাৎ, তৎকাল পরিষেবা পেতে চার গুণ বেশি খরচ করতে হবে। অভিভাবক এবং পড়ুয়াদের মতে, তৎকাল পরিষেবা পেতে চার গুণ বেশি টাকা লাগার কারণে তাঁরা ইচ্ছা থাকলেও তা করতে পারেননি।
যেমন কল্যাণীর বাসিন্দা, এ বারের এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাবা সুমন্ত বসু বলেন, ‘‘আমার মনে হয়েছিল, দু’টি বিষয়ে ছেলের খাতা তৎকালে রিভিউ করাব। কিন্তু দু’টি খাতা করতে গেলে ১৬০০ টাকা লেগে যেত। এত আর্থিক সঙ্গতি আমার নেই। তাই একটি
খাতাই রিভিউ করাতে পেরেছি। সেই বিষয়ে নম্বরও বেড়েছে। ফলে, অন্য বিষয়ে রিভিউ করালে হয়ত আরও নম্বর বাড়ত। আমার মতো অনেকেই বেশি টাকার কারণে তৎকালের সুযোগ নিতে পারছেন না বলে মনে হয়।’’
যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের যুক্তি, ‘‘তৎকাল পরিষেবা পেতে তো সব ক্ষেত্রেই বেশি টাকা লাগে। ট্রেনে তৎকালে টিকিট কাটতে গেলেও অতিরিক্ত টাকা লাগে। পরীক্ষার খাতার ক্ষেত্রে তৎকাল পরিষেবা দেওয়ার জন্য পরিকাঠামো কিছুটা বদলাতে হয়। তার জন্য তো খরচ আছে। প্রধান পরীক্ষাকদের আলাদা করে খাতাপিছু বেশি ফি দিতে হয়।’’
যদিও শিক্ষকদের একাংশের মতে, ট্রেনের টিকিটের তৎকাল পরিষেবার সঙ্গে রেলের ব্যবসায়িক দিক জড়িত। রেলের সঙ্গে তুলনা টানলে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তৎকাল পরিষেবাতেও কি একটা ব্যবসায়িক দিকই ফুটে উঠছে না? তৎকালে ট্রেনের টিকিট কাটতে যা করা যায়, সেটা কি পরীক্ষার খাতা রিভিউ বা স্ক্রুটিনির জন্যও করা যায়? দু’টি তো এক বিষয় নয়। তাঁদের আরও প্রশ্ন, ‘‘যেখানে সরকারি স্কুলের অধিকাংশ পড়ুয়াই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের, সেখানে চার গুণ বেশি টাকা দিয়ে কত জন এই পরিষেবা নিতে পারবে?’’
‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের প্রশ্ন, ‘‘তৎকাল পরিষেবার জন্য যে চার গুণ বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে, সেই খরচের পুরোটাই কি পরিকাঠামো বদল করার জন্য নেওয়া হচ্ছে? এই তৎকাল পরিষেবার মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ দেখিয়ে দিল, দ্রুততার সঙ্গে রিভিউ বা স্ক্রুটিনি করা সম্ভব। তাই আমাদের দাবি, সাধারণ পরিষেবা যে মূল্যে পাওয়া যায়, সেই মূল্যেই তৎকাল পরিষেবা দেওয়া হোক। কেন তৎকাল পরিষেবা চালু করে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি করা হবে?’’
চিরঞ্জীবের যদিও দাবি, ‘‘কোনও রকম বৈষম্য তৈরি করা হয়নি। যাঁরা তৎকাল চান না, তাঁরাও সুযোগ পাচ্ছেন স্ক্রুটিনি এবং রিভিউয়ের। সেই পরিষেবাও সময় মতোই হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy