E-Paper

টাকা হাতছাড়া হওয়া ঠেকাতেই কি খুন দুষ্কৃতী

গত বৃহস্পতিবার বিধাননগর কমিশনারেটের নারায়ণপুর থানার অদূরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল রাজারহাট-গোপালপুরের দুষ্কৃতী বাবাই। নারায়ণপুর থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে।

An image of death

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৩ ০৮:১৬
Share
Save

গর্জন করলেও বাঘ ছিল খাঁচায় বন্দি। জেল থেকেই সে নিয়ন্ত্রণ করত সিন্ডিকেট-ব্যবসা। নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহের বরাত যেন দেওয়া হয় তার লোকদেরই— জেল থেকে প্রোমোটারের কাছে এমন নির্দেশও পাঠাত সে। সেই ব্যবসার টাকা অন্যের হাতে চলে যাওয়া ঠেকাতে সম্প্রতি জেল থেকেই তৎপর হওয়ার কারণে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার ডাকসাইটে দুষ্কৃতী দেবজ্যোতি ঘোষ ওরফে টাক বাবাইকে খুন হতে হল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নিজের এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকাতেও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টারই কি চরম মাসুল দিতে হল তাকে— সেই প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা অবশ্য জেরায় স্বীকার করেছে যে প্রতিশোধ নিতেই প্রকাশ্য রাস্তায় বাবাইকে গুলি করে খুন করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বিধাননগর কমিশনারেটের নারায়ণপুর থানার অদূরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল রাজারহাট-গোপালপুরের দুষ্কৃতী বাবাই। তাকে খুনের অভিযোগে নারায়ণপুর থানার পুলিশ সুজয় দাস ও বিক্রম মাহাতো নামে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, পুরনো শত্রুতার শোধ তুলতে তারা খুন করেছে বাবাইকে।

তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, জেরায় সুজয়ের দাবি, ২০০৪ সালে বাবাইয়ের দলে ছিল সে। বাবাইয়ের কথা মতো ১০ লক্ষ টাকার চুক্তিতে সে এক প্রোমোটারকে খুন করেও টাকা পায়নি। বরং বাবাই তার পরিবারকে শেষ করে দিয়েছে বলেই দাবি সুজয়ের। অন্য দিকে, বিক্রম জেরায় জানিয়েছে, গুড় বাপি নামে এক দুষ্কৃতীর অধীনে সে অনেক বছর আগে কাজ করত। বাপিকে বাবাই খুন করলে বিক্রম সমস্যায় পড়ে। তাই বাবাইকে খুন করতে বিক্রমকে কাজে লাগায় সুজয়। পুরনো রাগের কারণে এই খুনের জন্য কোনও টাকাই নেয়নি বিক্রম। ধৃতদের এই সব দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ধৃতদের শনাক্তকরণ প্যারেডে দাঁড় করানো হবে বলেও পুলিশ জানিয়েছে। ঘটনার পুনর্নির্মাণ করার কথা ভাবা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বাবাই প্যারোলে মুক্ত হয়ে হাওড়া জেল থেকে বাইরে এসেছিল। ঘটনার দিন নারায়ণপুর থানায় হাজিরা দিয়ে বাইরে এসে গাড়িতে বসে থাকার সময়ে তার উপরে হামলা হয়। গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করেও বাঁচেনি সে। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বেকসুর খালাস হয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টায় ছিল বাবাই। সেই খবর ছিল তার বিরোধী গোষ্ঠীর কাছে। ধৃতেরা ছাড়া বাবাই-বিরোধী শিবিরে আর কে কে রয়েছে, তার খোঁজ চলছে।

রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার পুরনো দুষ্কৃতী বাবাইয়ের বিরুদ্ধে অতীতে জেলে বসেই টাকা চেয়ে প্রোমোটারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ছিল। বর্তমানেও জেলে বসেই ব্যবসা সামলাচ্ছিল সে। তার পিছনে রাজনৈতিক মদতও ছিল বলে অভিযোগ। বাগুইআটি এলাকায় শাসক দলের ঘনিষ্ঠদের একাংশ তার হয়ে প্রোমোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলেও খবর। কিন্তু তদন্তকারীরা জেনেছেন, সম্প্রতি টাকা বাবাইয়ের কাছে পৌঁছচ্ছিল না। এলাকার অনেক প্রোমোটারকে নির্মাণ সামগ্রী দেওয়ার বিনিময়ে বড় অঙ্কের টাকা পাওনা ছিল বাবাইয়ের। কিন্তু সম্প্রতি সে তাঁদের কাছে খবর পাঠাচ্ছিল যাতে তার পাওনা টাকা অন্য কারও হাতে না দেওয়া হয়।

তবে কি বাবাইয়ের টাকা অন্য হাতে চলে যাচ্ছিল? তা আটকাতেই বাবাইকে খুন হতে হল কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে পুলিশ। নারায়ণপুর এলাকার খবর, বাগুইআটি তল্লাটের পাশাপাশি, নারায়ণপুর-রাজারহাটের দিকেও ‘নজর’ দিয়েছিল বাবাই। তারই মূল্য তাকে চোকাতে হল কি না— তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Mysterious death Miscreant police investigation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।