আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
কেউ গিয়েছিলেন বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ প্রতিবাদে শামিল হতে সঙ্গে মা-বাবাকেও নিয়ে গিয়েছিলেন। কেউ কাজ সেরে বন্ধুদের নিয়ে খাবার আনতে গিয়ে কৌতূহলবশত আরজি করের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘রাত পাহারার রাতে’, বুধবার আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশি যাঁদের গ্রেফতার করেছে, সেই দলে আছেন এমনই কয়েক জন। এই গ্রেফতারির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তাঁদের অধিকাংশের পরিবার। রাজনীতির দাদাদের ঘনিষ্ঠ ‘রাঘব বোয়াল’দের আড়াল করে বেছে বেছে গ্রেফতার করার অভিযোগ করছেন তাঁরা। তবে লালবাজারের দাবি, তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই গ্রেফতারি হয়েছে।
হাসপাতালে হামলায় শনিবার পর্যন্ত ৩০ জনের গ্রেফতারির কথা লালবাজার জানিয়েছে। বুধবারের সেই রাতে ১টা পর্যন্ত বিধান সরণির বাড়িতে ছিলেন পেশায় সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার কারশিনী রাজ গুপ্ত। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তার প্রমাণ আছে, দাবি পরিবারের। তাঁর সঙ্গে গ্রেফতার হন সঙ্গী অভিজিৎ সাউ এবং শান্তনু ঘোষ। কারশিনীর বান্ধবী অঙ্কিতা দাস জানান, ওঁরা বাড়ি থেকে বেরোনোর অনেক আগেই ভাঙচুর শুরু হয়েছিল। রাতে বাড়িতে খাবার না আসায় দু’টি মোটরবাইকে চার জন শ্যামবাজারে যান। সেখান থেকে কৌতূহলবশত আরজি করের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। অঙ্কিতার কথায়, “গ্রেফতারির সময় পুলিশ শুধু জানতে চায়, এখানে কেন? আর কিছুই শোনেনি।” ধৃতদের সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই, দাবি অঙ্কিতার। হাওড়ার সন্ধ্যাবাজারের ২৩ বছরের চিরাগ ঝাঁঝারিয়ার বাবা রামকুমার ও মা কবিতা ঝাঁঝারিয়ার দাবি, তাঁদের ছেলে ছাত্র। ঘটনার দিন বন্ধুদের ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে রাত ১টা ৫০ মিনিটে বেরোন। আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এর প্রমাণ আছে বলে দাবি করে তাঁদের প্রশ্ন, ভাঙচুরের অনেক পরে শ্যামবাজারে পৌঁছলেও চিরাগকে গ্রেফতার করা হল কেন?
মানিকতলার মুরারিপুকুর রোডের সৌরভ দে-কে হামলার পরের দিন বাড়ি থেকে গ্রেফতার কর হয়। ধরা হয় পড়শি যুবক সৌম্যদীপ মাহিশকেও। সৌরভের জেঠিমা শোভা চক্রবর্তী জানান, কাউকেই ভাঙচুরের ভিডিয়োয় দেখা যায়নি। রেলিংয়ের উপর দাঁড়িয়ে ছিলেন শুধু। তাঁর কথায়, “বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে কেউ হামলা করতে যায়?” সৌম্যদীপের মা রাখি মাহিশ জানান, রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খাবার সরবরাহ করে বাড়ি ফিরেছিলেন ছেলে। খাওয়া সেরে ‘পাঁচ মিনিটের জন্য যাচ্ছি’ বলে বেরোন। মায়ের কথায়, “পরের দিন সমাজমাধ্যমের ছবি দেখে ও নিজে আমাকে দেখায়। দেখেছিলাম, দাঁড়িয়ে আছে। সন্ধ্যার পরে পুলিশ চোর-ডাকাতের মতো তুলে নিয়ে গেল।” পরিবারের এক জন বলেন, “বড় মাথাদের গ্রেফতার করল না। যাঁদের নামে কোনও দিন কোনও অভিযোগ নেই, তাঁদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে।” একই অভিযোগ মুরারিপুকুর রোডের শুভদীপ কুণ্ডুর পরিবারেও।
লালবাজারের দাবি, প্রমাণের ভিত্তিতে কোনও রং না দেখে গ্রেফতার করা হচ্ছে। শুক্রবারের পরে আরও পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছেন। তৌসিফ আহমেদ চুল কেটে চেহারা বদলেও ধরা পড়েন। দাবি, তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক দাদাদের যোগ আছে। হামলার তদন্তে সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছে। মীনাক্ষী বলেন, “নিশ্চয় যাব। তবে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy