ফাইল চিত্র
প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র দেখালেই মিলছে পার্কে প্রাতর্ভ্রমণ ও শারীরচর্চা করার অনুমতি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে শপিং মল, পানশালা বা রেস্তরাঁ খোলার অনুমতি মিললেও সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে এমন কোনও নিয়ম চালু করেনি সরকার। সেই সিদ্ধান্ত নিয়েই এ বার প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরবাসীর একাংশ। সামাজিক মাধ্যমেও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, শপিং মল, পানশালা বা রেস্তরাঁয় ঢুকতে কেন কড়াকড়ি করা হচ্ছে না? প্রাতর্ভ্রমণের মতো এ ক্ষেত্রেও প্রতিষেধক নেওয়ার শংসাপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা হবে না কেন, সেই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ।
করোনার সংক্রমণে রাশ টানতে রাজ্য জুড়ে কড়া বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। তবে গত বুধবার থেকে এই বিধি-নিষেধে কিছুটা ছাড় দেওয়া হবে বলে আগেই ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। তখন বলা হয়েছিল, প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নেওয়া থাকলে এবং সেই সংক্রান্ত শংসাপত্র দেখাতে পারলেই পার্কে প্রাতর্ভ্রমণের অনুমতি মিলবে। পাশাপাশি করোনা বিধি-নিষেধ মেনে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শপিং মল, রেস্তরাঁ ও পানশালা খোলার অনুমতিও দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে কেন
প্রতিষেধকের শংসাপত্র প্রয়োজনীয় নয়, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরবাসীর একাংশের যুক্তি, এটা করা হলে বদ্ধ জায়গায় ভিড়ের সম্ভাবনা যেমন কমবে, তেমনই সংক্রমণের ঝুঁকিও অনেকটা কম হবে। বাগবাজারের বাসিন্দা সোমনাথ পাত্র বলেন, ‘‘সংক্রমণ কমতে না কমতেই যদি সব কিছু খুলে দেওয়া হয়, তা হলে ফের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে। তাই প্রশাসনের উচিত ছিল শপিং মল, রেস্তরাঁ, পানশালায় প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিষেধকের শংসাপত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা। সে ক্ষেত্রে ‘ফুটফল’ হয়তো অনেকটাই কম হত।’’
যদিও অনেকের পাল্টা যুক্তি, রাজ্যের অর্থনীতির চাকা সচল করতে ধীরে ধীরে এগুলি খুলে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। ওই সমস্ত শপিং মল, রেস্তরাঁ ও পানশালায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের রুটি-রুজির প্রশ্নে বিধি-নিষেধে কিছুটা ছাড়ের প্রয়োজন ছিলই। তার উপরে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় এমনিতেই তেমন ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা বিজয় হাজরা বলেন, ‘‘গণপরিবহণই তো চলছে না, শপিং মল বা রেস্তরাঁয় ভিড় হবে কী করে? তা ছাড়া সরকারের তরফেও তো শপিং মল বা রেস্তরাঁয় ঢোকার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অর্থনীতির চাকা সচল করতে বিধি-নিষেধে ছাড়ের অবশ্যই দরকার ছিল। তবে এই সব জায়গায় বিধি-নিষেধ মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য প্রশাসনের তরফে নজরদারি প্রয়োজন।’’
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলছেন, ‘‘শহরের পার্ক বা প্রাতর্ভ্রমণ করার জায়গাগুলিতে কর্মীরা থাকছেন। তাঁরা সকালে হাঁটতে আসা প্রত্যেকের শংসাপত্র পরীক্ষা করছেন।’’ কিন্তু শহরের শপিং মলগুলিতে? পুরসভার তরফে সেখানে কোনও নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়নি। তবে পুলিশের তরফে নজরদারি চলছে বলেই লালবাজার সূত্রের খবর। প্রতিদিন শপিং মলগুলিতে কত ‘ফুটফল’ হচ্ছে এবং সেখানে আদৌ করোনা বিধি-নিষেধ মানা হচ্ছে কি না— তা জানতে নজরদারি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন লালবাজারের এক পুলিশকর্তা।
যদিও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিলেই কেউ সংক্রমিত হবেন না অথবা সংক্রমণ ছড়াবেন না, এমনটা নয়। তবে পার্ক বা প্রাতর্ভ্রমণের মাঠগুলিতে যে হেতু অনেকটা খোলা জায়গা থাকে, তাই সেখানে সংক্রমণের ঝুঁকি কম। সে দিক থেকে বদ্ধ শপিং মল বা রেস্তরাঁয় সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy