শাড়ি না সালোয়ার কামিজ? শিক্ষিকা কী পরে ক্লাস নেবেন, তা নিয়েই এ বার টানাপড়েন। প্রতীকী ছবি
শাড়ি না সালোয়ার কামিজ? শিক্ষিকা কী পরে ক্লাস নেবেন, তা নিয়েই এ বার টানাপড়েন।
দক্ষিণ কলকাতার মাধ্যমিক বোর্ডের অধীন একটি মেয়েদের স্কুলে পোশাক সংক্রান্ত এই দ্বৈরথ শুরু হয়েছে প্রাথমিক বিভাগের এক সঙ্গীতশিক্ষিকা ও প্রধানশিক্ষিকার মধ্যে। ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, সালোয়ার কামিজ পরে ক্লাস নিতে আসায় তাঁর সব ক্লাস বাতিল করা হয়েছে। এতে ছাত্রীদের সঙ্গীতশিক্ষাও শিকেয়উঠেছে বলে দাবি। এর সমাধান চেয়ে তিনি মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর এবং রাজ্য মহিলা কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে এই ঘটনা নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
নিউ আলিপুরের ওই বেসরকারি স্কুলের গানের শিক্ষিকা সোমা ভাদুড়ীর অভিযোগ, মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন তিনি শাড়ি পরে যাওয়ায় তাঁকে পরীক্ষা হলে গার্ডদিতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মাধ্যমিকের পরে সালোয়ার কামিজ পরে স্কুলে গেলে তাঁকে কার্যত বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সোমার কথায়, ‘‘এক দিন বাস থেকে নামার সময়ে পায়ে শাড়ি জড়িয়ে মুখ থুবড়েপড়ি। সহযাত্রীরা রক্ষা না করলে বাসের তলায় চাপা পড়তাম। তার পরেই স্কুলে জানাই, আমার পক্ষে সালোয়ার কামিজ পরে আসা সুবিধাজনক। কিন্তু প্রধান শিক্ষিকা জানান, স্কুলের ঐতিহ্য মেনে শাড়ি পরেই ক্লাস নিতে হবে। এমনকিএ-ও প্রস্তাব দেওয়া হয় যে, বাড়ি থেকে সালোয়ার পরে স্কুলে এসে শাড়ি পরে নিতে পারি। কিন্তু প্রশ্ন হল, আজকের দিনেও এমন মনোভাব কেন?”
প্রাথমিক বিভাগের একমাত্র সঙ্গীত শিক্ষিকা সোমাই। ফলে তিনি ক্লাস নিতে না পারায় স্কুলের সঙ্গীতশিক্ষা কার্যত শিকেয়উঠেছে বলে খবর। সোমার দাবি, সপ্তাহে ১২টি ক্লাস নেওয়ার কথা তাঁর। অথচ সেই সময়ে অন্য বিষয়েরক্লাস দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা স্কুলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ফোনে কিছুবলব না।’’
মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর সূত্রের খবর, এ বিষয়ে ওইশিক্ষিকার থেকে জেনে তারা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কাছে স্মারকলিপি দেন। সংগঠনের সাধারণসম্পাদক রঞ্জিত শূরের বক্তব্য, ‘‘দেশের সব নাগরিককে খাওয়া-পরার স্বাধীনতা দিয়েছে সংবিধান।সেখানে ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে এই ধরনের ফতোয়ার কোনও গুরুত্বনেই। আমরা ওই শিক্ষিকার পাশে রয়েছি।’’
এ বিষয়ে স্কুলের কাছে জানতে চেয়েছে রাজ্য মহিলা কমিশনও। কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকা এখনও কমিশনের চিঠির উত্তর দেননি। এক পক্ষেরই অভিযোগ এখনও পর্যন্ত শুনেছি। পোশাক যদি মার্জিত হয়, তবে তা পরতেসমস্যা কোথায়?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy