সিগন্যালের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে। প্রতীকী ছবি।
ব্যস্ত সময়ে কখনও সিগন্যাল পেরোতে চার বার থামতে হয়, কখনও সিগন্যালে দাঁড়াতে হয় দু’তিনশো গাড়ির পিছনে। কোথাও আবার সিগন্যাল পেরিয়ে যাওয়ার জন্য সময় মেলে মাত্র ৩০ সেকেন্ড। না-পারলে আটকে থাকতে হবে কতক্ষণ, কেউ জানে না। নিক্কো পার্ক, সল্টলেক স্টেডিয়াম বা অন্য যে কোনও রাস্তা হয়ে ই এম বাইপাসের দিকে বেরোনোর সময়ে বিধাননগর থেকে আসা গাড়িচালকদের এমনই হাঁসফাঁস অবস্থা হয় বলে অভিযোগ। ফলে সকালের ব্যস্ত সময়ে তো বটেই, বিকেলের পর থেকেও বিধাননগরের মধ্যে ঘুরে ঘুরে সিগন্যালের ফাঁক খুঁজতে হয় গাড়িচালকদের।
চিংড়িঘাটা মোড়ে একটি বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় এক মহিলার মৃত্যু এবং আরও সাত জনের আহত হওয়ার ঘটনার পরে তদন্তে নামা পুলিশের সামনে উঠে আসছে এমনই বিভিন্ন সমস্যার দিক। কম সময়ে সিগন্যাল পেরোনোর তাড়াহুড়োয় আরও বেশি সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ত দফতর এবং কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের সঙ্গে বৈঠকে বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের তরফে সিগন্যালের সময় বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে খবর। তাদের দাবি, বিধাননগর থেকে বাইপাসে ওঠার রাস্তাগুলিতে কমপক্ষে চার বার অন্তর এক বার তিন মিনিটের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া প্রয়োজন। এতে সেক্টর ফাইভ থেকে বাইপাসের দিকে আসা গাড়িচালকদের যানজটে কম আটকে থাকতে হবে। বিধাননগর ছেড়ে বেরোনোর রাস্তার মুখে যানজটও কমবে।
বিধাননগর থেকে সল্টলেক গেট, সিএ ব্লক, সেকেন্ড অ্যাভিনিউ, দত্তাবাদ রোড, সল্টলেক স্টেডিয়ামের কাছের রাস্তা, ব্রডওয়ে রোড এবং চিংড়িঘাটা মোড় দিয়ে বাইপাসের দিকে বেরোনো যায়। বাইপাসে সংযুক্ত হওয়ার মুখে এই সমস্ত রাস্তার সব ক’টি ট্রাফিক সিগন্যালই নিয়ন্ত্রণ করে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি ব্যবহার হয় চিংড়িঘাটা মোড়ের দিকের রাস্তা। বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রের খবর, চিংড়িঘাটা মোড়ের ওই জায়গাটি নবদিগন্ত ট্র্যাফিক গার্ডের অন্তর্গত। সেখানে গড়ে তিন মিনিট করে সিগন্যাল খোলা থাকে। কিন্তু বিধাননগরের দিক থেকে বাইপাসে ওঠার জন্য গাড়িগুলিকে সময় দেওয়া হয় মাত্র ৩০ সেকেন্ড! এতেই সিগন্যাল পার করতে এক-একটি গাড়িকে গড়ে তিন থেকে চার বার থামতে হয়। এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, ‘‘যখন সিগন্যাল খোলে, তখন হুড়মুড়িয়ে একে অপরকে টেক্কা দিয়ে বেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। চার বার অন্তর এক বার সম্পূর্ণ তিন মিনিট সময় পাওয়া গেলে গাড়ির এই চাপ হয় না।’’
পরিস্থিতি আরও খারাপ দত্তাবাদ বা সল্টলেক গেটে। সেখানে সিগন্যাল সবুজ হলে হাতে গোনা কয়েকটি গাড়িই সিগন্যাল পেরোতে পারে, সেটুকুই সময় পাওয়া যায়। সল্টলেক স্টেডিয়াম বা তার পরের ব্রডওয়ে রোডের অবস্থা বরং অপেক্ষাকৃত ভাল। ব্রডওয়ে রোডে বাইপাসে ওঠার আলাদা রাস্তাও তৈরি করে দেওয়া হয়েছে।
তবে সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে চিংড়িঘাটা মোড়ে একের পর এক দুর্ঘটনা। ওই জায়গায় বিকল্প রাস্তা তৈরি এবং সিগন্যালের সময় বাড়ানো যায় কি না, তা নিয়ে সোমবারই আলোচনা হয়েছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ এবং বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের মধ্যে। সেখানে একাধিক বিষয়েআলোচনার পরেও কোনও সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়নি। মঙ্গলবার পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কলকাতা এবং বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাতে বিধাননগর কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে খবর। সম্প্রতি নবদিগন্ত ট্র্যাফিক গার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক আধিকারিককে বদলি করা হয়েছে। নতুন আধিকারিক এ দিনের বৈঠকে ছিলেন। আজ, বুধবার এ বিষয়ে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy