দখল: কালীঘাটে মহিম হালদার স্ট্রিটের মোড়ে মণ্ডপে অবরুদ্ধ রাস্তা। শনিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বারোয়ারি পুজোর অনুদান এক ধাক্কায় ১০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাড় বাড়ল বিদ্যুৎ বিলেও। পাশাপাশি, পুজোয় ভিআইপি গেট ও ভিআইপি পাস তুলে দেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি। কিন্তু সেই বৈঠকে রাস্তা আটকে পুজো বন্ধ করার ব্যাপারে বিশেষ শব্দ খরচ করা হয়নি। পুজোর এখনও মাসখানেক বাকি। এর মধ্যেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। শনিবার দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ধরা পড়ল সেই ছবিই।
মুদিয়ালি ক্লাব: মণ্ডপ লাগোয়া বাড়ির দেওয়ালে ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ লেখা বিশাল পোস্টার। বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা জায়গার উপরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা মই, বাতিস্তম্ভ। ৮৫ বছরের পুরনো এই পুজোর মণ্ডপ এ বারও তৈরি হচ্ছে রাস্তা আটকে। এ জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড থেকে সতীশরঞ্জন দাস রোড হয়ে আব্দুল রসুল অ্যাভিনিউয়ে যাওয়ার পথ একেবারে বন্ধ।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: পুজোর দশ দিন রজনী সেন রোড দিয়ে লেক প্লেস রোডের রাস্তাও বন্ধ করে দিতে হয়। ওই পথ ভিআইপি গেট হিসেবে ব্যবহার করেন তাঁরা। পুজোকর্তা মনোজ সাউয়ের দাবি, ‘‘রাস্তার উপরে হলেও মণ্ডপে ঢোকা বা বেরোনোর গেট এত বড় রাখা হয় যে, অনায়াসে দমকলের গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্স চলে যেতে পারে। পুরনো পুজো। বললেই তো আর রাস্তা থেকে মণ্ডপ সরিয়ে নেওয়া যায় না!’’
মুদিয়ালির মণ্ডপের পাশে যাতায়াতের এক চিলতে জায়গা। শনিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
একডালিয়া এভারগ্রিন: মণ্ডপের কাঠামো এখন থেকেই একডালিয়া রোডের একাংশ বন্ধ করে দিয়েছে। বাঁশ, দড়ি-সহ অন্যান্য সরঞ্জামও চলে এসেছে খোলা থাকা রাস্তার বাকি অংশের উপরে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বড়জোর আর দিন কয়েক একডালিয়া রোডের একাংশ গাড়ির জন্য খোলা থাকবে। তার পরে সব বন্ধ। পুজোর সময়ে দশ দিন কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সরণি (ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্স) ধরে একডালিয়া রোডে ঢোকার চেষ্টাই বৃথা। ৭৭ বছরের পুরনো পুজোর জন্য ‘রাস্তার নিয়ম’ বদলাতেই হয়।
রাস্তা আটকে একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো। শনিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: মণ্ডপের বাইরে থেকেও প্রতিমা দেখা যায়। তাই মণ্ডপে ঢোকার চাপ সে ভাবে থাকে না। তবু ভিড় সামাল দিতে গড়িয়াহাট রোড থেকে একডালিয়া রোড বন্ধ রাখতে হয়। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কলকাতায় রাস্তা ছাড়া দুর্গাপুজো হয় না কি? সকলের তো আর মাঠ নেই! মুখ্যমন্ত্রী রাস্তা থেকে পুজো তুলে দিতে বলবেন না।’’
ত্রিধারা সম্মিলনী: মণ্ডপ তৈরি শুরু হয়ে গিয়েছে রাস্তার একাংশ আটকেই। কাঠামোর কাজ চূড়ান্ত হওয়ার পরে সময় যত গড়াবে, পুজোর চাপে মনোহর পুকুর রোড হয়ে রাসবিহারী অ্যাভিনিউয়ে যাওয়ার রাস্তা ততই বন্ধ হয়ে আসবে বলে স্থানীয়দের দাবি। অশ্বিনী দত্ত রোড দিয়েও তখন চলাচল করা শক্ত।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: গাড়ির জন্য রাস্তার একাংশ খোলা থাকে। অন্যতম উদ্যোক্তা লাল্টু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘রাস্তা যদি কখনও বন্ধ হয়, তা মানুষের ভিড়ে। আমাদের কিছু করার নেই।’’
কালীঘাট যুবমৈত্রী: কালীঘাটের দমকল কেন্দ্র পার করে কালীঘাট মন্দিরে যাওয়ার পথে এক দিকের রাস্তা এখন থেকেই বন্ধ। গাড়ি চলছে এক লেন ধরে। কারণ, সেখানেই মহিম হালদার স্ট্রিটের সংযোগস্থলে তৈরি হয়েছে পুজো মণ্ডপ।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: অন্যতম উদ্যোক্তা অমিত পাল বলেন, ‘‘প্রতিবার মুখ্যমন্ত্রী নিজে আসেন। তিনি যদি রাস্তা থেকে পুজো সরানোর নির্দেশ দেন, তা হলে তা-ই করা হবে।’’
পুলিশ কী বলছে: কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্র্যাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘এই ধরনের পুজো নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করছি আমরা। সাধারণ মানুষের সমস্যা কমানোর চেষ্টা করা হবে।’’
রাস্তা আটকে পুজোর তালিকা দীর্ঘ। এই ধরনের পুজো সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া গেলে তা-ও সামনে আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy