দখলচিত্র: রাস্তার একাংশ আটকে তৈরি টালা প্রত্যয়ের মণ্ডপ। পাশের একফালি জায়গা দিয়েই চলছে যাতায়াত। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
বারোয়ারি পুজোর অনুদান এক ধাক্কায় ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাড় বেড়েছে বিদ্যুৎ বিলেও। পাশাপাশি ভিআইপি গেট, ভিআইপি পাস তুলে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। কিন্তু সেই বৈঠকে রাস্তা আটকে পুজো বন্ধ করার ব্যাপারে বিশেষ শব্দ খরচ করা হয়নি। পুজোর এখনও এক মাস বাকি। এর মধ্যেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের ভোগান্তি শুরু হয়ে গিয়েছে। উত্তর ও পূর্ব কলকাতার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ধরা পড়ল সেই ছবি।
• টালা পার্ক প্রত্যয়: টালা সার্কাস ময়দানে লোহা, বাঁশের কাঠামো দিয়ে কয়েক মাস ধরে তৈরি হচ্ছে বিশাল মণ্ডপ। কিন্তু পার্ক ছেড়ে মণ্ডপের বেশ খানিকটা অংশ বেরিয়ে এসেছে খেলাতবাবু লেনের উপরে। প্রায় ৩০ ফুটের রাস্তার একাংশ দিয়েই চলছে গাড়ি। যদিও দু’টি গাড়ি মুখোমুখি এসে গেলে পিছোতে হচ্ছে যে কোনও একটিকে।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: কোষাধ্যক্ষ শুভঙ্কর সাহার দাবি, ‘‘রাস্তায় ১৪ ফুট ছাড়া রয়েছে। সেখান দিয়ে এখন যেমন গাড়ি যাচ্ছে, পুজোর সময়েও দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স-সহ অন্য গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে।’’
• হাতিবাগান সর্বজনীন: অরবিন্দ সরণি থেকে ক্ষুদিরাম বসু রোডে ঢুকলেই দেখা যাবে, দু’পাশের ফুটপাত ছাড়া মাঝের পুরো অংশই পুজো কমিটির অফিস এবং মণ্ডপের দখলে। লোহা, বাঁশের কাঠামোয় চলছে মণ্ডপ তৈরির তোড়জোড়। ওই রাস্তা দিয়ে বড়তলা থানার দিকে যাওয়া গেলেও মণ্ডপ তৈরির জন্য বন্ধ গাড়ি চলাচল।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: ২৮ ফুটের রাস্তার দু’পাশে সাত ফুট করে ছাড়া রয়েছে। সেখান দিয়ে মোটরবাইকও যেতে পারবে। আহ্বায়ক শাশ্বত বসুর দাবি, ‘‘বড়তলা থানার দিকে যাওয়ার জন্য পাশেই বিকল্প রাস্তা কার্তিক বসু লেন রয়েছে।’’
• নলিন সরকার স্ট্রিট: ‘মণ্ডপ নির্মাণের কাজ চলছে। রাস্তা বন্ধ, তাই আমরা দুঃখিত’— গলিতে ঢোকার মুখেই বোর্ড লাগিয়েছেন উদ্যোক্তারা। মেরেকেটে ২০ ফুট চওড়া গলির একফালি জায়গা খালি রেখে বাকিটা জুড়ে লম্বা ধাঁচের মণ্ডপ। অরবিন্দ সরণির যানজট এড়াতে ওই গলি দিয়ে সহজে বিডন স্ট্রিট ও শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে যাওয়া যায়। তবে এখন সেই পথ বন্ধ।
নলিন সরকার স্ট্রিটের পুজোমণ্ডপের জন্য বন্ধ রাস্তা। গলিতে ঢোকার মুখে সে কথা জানিয়ে বোর্ড লাগিয়েছে পুজো কমিটি।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: পুজোর সভাপতি জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই বাইপাস রোডে ছোট গাড়ি ঢুকে গেলে, ঘোরানো যাবে না। তাই বোর্ড লাগানো হয়েছে।’’
• শিকদারবাগান: বিধান সরণির টাউন স্কুলের উল্টো দিকের গলিতে এ বারও মণ্ডপ হয়েছে রাস্তা আটকে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই গলি দিয়ে এপিসি রোড হয়ে শিয়ালদহের দিকে যাওয়া যায়। কিন্তু রাস্তা জুড়ে মণ্ডপ তৈরি শুরু হওয়ায় গাড়ি ঢোকার পথ পুরো বন্ধ। এমনকি, মণ্ডপের পাশের একচিলতে জায়গা দিয়ে ভাল মতো হাঁটারও উপায় নেই। অগত্যা মণ্ডপের ভিতর দিয়েই যাতায়াত করছেন লোকজন।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: উদ্যোক্তাদের তরফে শুভ্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মণ্ডপের দু’পাশে চার ফুট করে ছাড়া রয়েছে। উত্তর কলকাতায় মাঠ কোথায়? তা হলে তো মণ্ডপ না করে প্রতিমা পাড়ার রকে বসিয়ে পুজো করতে হবে। পাশে তো বিকল্প মোহনবাগান লেনও রয়েছে।’’
• দমদম পার্ক ভারতচক্র: রাস্তা দখল করেই তৈরি হচ্ছে বিশাল মণ্ডপ। হাঁটাচলার জন্য মণ্ডপের পাশে বানানো হয়েছে কাঠের পাটাতনের রাস্তা। তা দিয়েই চলাচল করছেন পথচারীরা। পুজোর সময়ে এই মণ্ডপের সামনের রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা।
রাস্তা দখল করে তৈরি হচ্ছে দমদম পার্ক ভারতচক্রের বিশাল মণ্ডপ। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: সম্পাদক প্রতীক চৌধুরী বলেন, ‘‘দমদম পার্কের একটি গলি আর একটির সঙ্গে যুক্ত। তাই একটি গলি বন্ধ হলেও সমস্যা হয় না। ভিড় সামলাতে পুলিশই সন্ধ্যায় রাস্তা বন্ধ করে। তবে বাসিন্দাদের ছাড় দেওয়া হয়।’’
• দমদম তরুণ দল: দমদম পার্ক উপ-ডাকঘরের উল্টো দিকের গলি আটকে চলছে ৪২ বছরের পুজোর প্রস্তুতি। রাস্তার উপরে ইটের বেদি বানিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপে ঢোকার রাস্তা।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য: আগে ডাকঘরের সামনের রাস্তায় পুজো হলেও মানুষের কথা ভেবে তা গলির ভিতরে করা হয়। উদ্যোক্তাদের তরফে বিশ্বজিৎ প্রসাদের দাবি, ‘‘মণ্ডপ হচ্ছে গলির শেষ প্রান্তে। ওই গলিতে ঢোকা-বেরোনোর আরও বিকল্প
রাস্তা রয়েছে।’’
দক্ষিণের মতো উত্তরেও রাস্তা আটকে পুজোর তালিকা দীর্ঘ। এই ধরনের পুজো সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া গেলে তা-ও সামনে
আনা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy