Advertisement
০১ অক্টোবর ২০২৪
Durga Puja 2024

অনুদান না নেওয়ার ‘সাজা’ ছাড়ে কোপ, বিপাকে উদ্যোক্তারা

সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা না নিলে অন্য দুই পরিষেবায় ছাড় না পাওয়ার কথা শুনে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সল্টলেকের সিজি, বিসি, বিএল, শরৎ আবাসনের মতো অনেক পুজোই এ বার অনুদান নিচ্ছে না।

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:১৪
Share: Save:

আর জি করে চিকিৎসক-ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে পুলিশ-প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। এমনকি, প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। বিচারের দাবিতে পথে নেমে অনেকেই চেয়েছিলেন, পুজোয় সরকারি অনুদান নেওয়া বন্ধ হোক এ বছর। কিন্তু অনুদান ফেরাতে গিয়ে অন্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। বিভিন্ন থানা থেকে প্রত্যাখ্যানকারীদের জানানো হচ্ছে, অনুদান ফেরালে বিদ্যুতের বিল ও দমকল পরিষেবায় ছাড় মিলবে না।

সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা না নিলে অন্য দুই পরিষেবায় ছাড় না পাওয়ার কথা শুনে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। সল্টলেকের সিজি, বিসি, বিএল, শরৎ আবাসনের মতো অনেক পুজোই এ বার অনুদান নিচ্ছে না। আবাসিকেরা নিজেদের মধ্যে ভোটাভুটি করে অনুদান প্রত্যাখ্যান করেছেন। একটি ব্লকের পুজোকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বললেন, ‘‘বিদ্যুৎ ও দমকল, এই দুই বিভাগের পরিষেবার জন্য বাড়তি প্রচুর টাকা লাগবে। হয়তো সামনের বছর আমাদের পুজো কালো তালিকাভুক্তও হতে পারে।’’ খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় মূলত সল্টলেকেই অনুদান প্রত্যাখ্যানের সংখ্যা বেশি। কারণ, ব্লক-অধ্যুষিত সল্টলেকের পুজোগুলির সঙ্গে শাসকদলের নেতাদের খুব বেশি প্রত্যক্ষ যোগাযোগ নেই।

গার্ডেনরিচ ও নেতাজিনগরের দু’টি পুজো কমিটি অনুদান না নেওয়ায় সমস্যা যে হচ্ছে, তা আকারে-ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিচ্ছে। এমনও খবর যে, অনুদান প্রত্যাখ্যান ঠেকাতে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি পুজো কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। অনুদান না নিয়ে পুজোর খরচ কমিয়েছে বেহালার সবেদাবাগান পুজো কমিটি। উদ্যোক্তা শুভাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজো হবে অনাড়ম্বর। এমনকি, পুজো ও সন্ধ্যারতি ছাড়া ঢাক না বাজানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছি।’’ পর্ণশ্রী থানা এলাকার বেহালা মধ্যপাড়া আবাহনীর অন্যতম উদ্যোক্তা শুভায়ু বাগচী জানান, এ বার ওই পুজোর ৫০তম বছর। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়ম রক্ষার জন্য ছোট করে পুজো হবে।’’ তবে, অনুদান না নেওয়ায় পরবর্তী কালে হেনস্থার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না উদ্যোক্তারা।

পাশাপাশি, পুজোকে কেন্দ্র করে কলকাতার একাধিক জায়গায় চাঁদা আদায়ে জুলুমের অভিযোগ সামনে আসছে। পঞ্চসায়র থানা এলাকার একটি পুজো কমিটির তরফে বাড়তি চাঁদা দাবি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘যেখানে একাধিক পুজো কমিটি উৎসবে কাটছাঁট করছে, সেখানে এ বার দ্বিগুণ চাঁদা দাবি করছে স্থানীয় ক্লাব। ১০০-২০০ টাকা বেশি হলে মানা যায়। দ্বিগুণ টাকা কোথা থেকে দেব?’’

সরকারি সূত্রের দাবি, অনুদান না নিলে ছাড় না পাওয়ার লিখিত নিয়ম নেই। তবে কেন থানাগুলি অতিসক্রিয় হয়ে পুজো কমিটিগুলিকে এমন বলছে? বিধাননগরের এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ অনুদান নিলেন না। পরে দেখলেন, বিদ্যুতের বিল বেশি এসেছে। তখন তিনি চিন্তিত হবেন। পুজোর অনুদান অনেকটা প্যাকেজের মতো। একটা না-নিলে আর একটা পাওয়া যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE