ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা নয়, ডিসেম্বর মাসের শেষেই বইমেলা করে ফেলতে চায় ‘পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড’।
গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় সম্প্রতি বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মে-জুন মাসে বইমেলা করার কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু তা সম্ভব হল না। তা বলে এ বছর বইমেলা পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে, এমন ভাবনা এখনও আমরা ভাবছি না। পরিস্থিতি ভাল হলে ডিসেম্বর মাসে বইমেলা হতেই পারে।”
অনেকেরই অবশ্য প্রশ্ন, প্রতি বছরই তো জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা হয়। এ বছর তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা যখন রয়েছে, তখন একেবারে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করেই তো বইমেলা করা যেত। এত তাড়াহুড়ো কেন?
ত্রিদিববাবুর মতে, “তাড়াহুড়ো করছি না। তবে বইমেলা যে দিন-ক্ষণ মেনে প্রতি বছর শুরু হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে চাইছি না। পরিস্থিতি যখন ভাল থাকবে, তখনই বইমেলা করে ফেলতে চাইছি। করোনা পরিস্থিতি তো ঘুরে-ফিরে ভাল বা খারাপ হচ্ছে। গত বছরের শীতেই করোনা পরিস্থিতি সব চেয়ে বেশি ভাল ছিল।”
ত্রিদিববাবুর বক্তব্য, করোনার কারণে পৃথিবী জুড়েই আন্তর্জাতিক বইমেলার তারিখ বদলাচ্ছে। লন্ডন বইমেলা প্রতি বছর মার্চে হয়। করোনার জন্য তা হয়নি। পরে জুন মাসে করার কথা ভেবেছিলেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে সময়েও করা যায়নি। লন্ডন বইমেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে তবেই তাঁরা বইমেলার আয়োজন করবেন।
গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বললেন, “প্রকাশকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাইরের প্রকাশকেরাও অনেকে জিজ্ঞাসা করছেন, বইমেলা হওয়ার মতো পরিস্থিতি আছে কি না। তবে যখনই হোক না কেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি নিয়েই তা করা হবে।”
ত্রিদিববাবুর মতে, বছরের শেষে বইমেলা হলে চলতি বছর ও পরের বছর— দু’বছরের বইমেলা একসঙ্গে হয়ে যেতে পারে। অনলাইন ও অফলাইন, দু’ভাবেই বইমেলা করার ভাবনা রয়েছে তাঁদের।
এ বছরের শেষে বইমেলা হলে কতগুলি প্রকাশনা সংস্থা তাতে অংশ নিতে চাইবে, তা নিয়ে অবশ্য সংশয় রয়েছে। কলেজ স্ট্রিটের একটি প্রকাশনা সংস্থার কর্ণধার পার্থশঙ্কর বসু বললেন, “বইমেলায় তো বিভিন্ন প্রকাশকেরা নতুন বইয়ের সম্ভার নিয়ে হাজির হন। এ বছর সে ভাবে নতুন বই প্রকাশিত হল কোথায়? করোনা পরিস্থিতি কিছুটা ভাল হওয়ার পরে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়া খুলেছে ঠিকই, কিন্তু বিক্রিবাটা খুবই কম। এই অবস্থায় বইমেলা করতে গেলে আমাদের স্টলের খরচটুকু উঠে আসবে তো?”
আর এক প্রকাশক বুলবুল ইসলামের মতে, “গোটা বছর ধরে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোট ও মাঝারি প্রকাশকেরা। শুধু গল্পের বই নয়, স্কুল-কলেজ না খোলায় পাঠ্যপুস্তকের বিক্রিও অনেকটাই কম। অনলাইনে বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। এ বছর করোনা পরিস্থিতি ভাল হলেও কত জন বইমেলায় অংশ নিতে ইচ্ছুক হবেন, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়।”
কলেজ স্ট্রিটের আর এক প্রকাশক তপনকুমার বিশ্বাস জানালেন, তাঁরা বইমেলা উপলক্ষে ১২ থেকে ১৫টি নতুন বই বার করেন। এ বছর বইমেলা হয়নি বলে নতুন বই বেরিয়েছে মাত্র দু’-তিনটে। তপনবাবুর বক্তব্য, “গত দু’বছরে আমাদের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে। সরকারি প্রকল্পের কিছু বই আছে। সেই সব বইও বিক্রি না হয়ে পড়ে রয়েছে। বইমেলা হলে কিছুটা আমরা হয়তো অক্সিজেন পাব। আমাদের নতুন বইয়ের খসড়া তৈরি আছে। বইমেলা হলে সেগুলি ছাপতে দেব। তবে ডিসেম্বর হোক বা জানুয়ারি, করোনা পরিস্থিতি কেমন থাকে, তা দেখেই বইমেলাকরতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy