সোমবার আরজি কর হাসপাতাল চত্বরে। ছবি: সুমন বল্লভ।
আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক ইন্টার্ন এবং এক হাউসস্টাফের ছবি-সহ বিভিন্ন মন্তব্যে তোলপাড় সমাজমাধ্যম। যা নিয়ে এ বার মুখ খুললেন ওই মেডিক্যাল কলেজে আন্দোলনরত আবাসিক চিকিৎসকেরা। তাঁদের দাবি, ‘‘আন্দোলনের মোড় ঘোরাতেই একাংশ ইচ্ছাকৃত ভাবে এই সব ভ্রান্ত বার্তা ছড়াচ্ছেন।’’
ওই আবাসিক চিকিৎসকদের দাবি, তাঁরা আর জি করের ঘটনার নেপথ্যে থাকা প্রকৃত দোষীকে ধরার দাবি তুলেছেন। কারণ, তরুণীর শরীরে যে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তা এক জনের অত্যাচারে সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন আন্দোলনকারীরা। তাই প্রকৃত সত্য উন্মোচনের জন্য বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। সেখানে কেন অহেতুক কয়েক জনের নাম জড়ানো হচ্ছে, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠল সোমবারের আন্দোলন মঞ্চ থেকে।
আবাসিক চিকিৎসক কিঞ্জল নন্দ বলেন, ‘‘যাঁদের নামে এ সব রটানো হচ্ছে, তাঁদের নিজস্ব এবং পারিবারিক সম্মানের কথা সকলকে মনে রাখতে হবে। তাই এমন অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা করছি।’’ আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, বাঁকুড়ার বাসিন্দা যে ইন্টার্নের ছবি দিয়ে সমাজমাধ্যমে তাঁকে নিখোঁজ বলে পোস্ট করা হয়েছে, সেই তরুণ ঘটনার দিন থেকে এখনও পর্যন্ত আর জি করের হস্টেলেই রয়েছেন। ঘটনার রাতে তিনি পালমোনারি মেডিসিন বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন, সেটা সত্যি। তাই পুলিশি তদন্তে সব রকমের সহযোগিতা তিনি করছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। এমনকি, ঘটনার প্রতিবাদে যে আন্দোলন, তাতেও ওই তরুণ শামিল হয়েছেন।
এ দিন তাঁর বাবা বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে আমার ছেলের নামে কিছু ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে। ও ওই রকম ছেলেই নয়। এখন এর বেশি কিছু বলব না।’’ অন্য দিকে, ওই ইন্টার্নকে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের ছেলে এবং গোটা ঘটনায় প্রকৃত দোষী বলে দাবি করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তমলুকের বিধায়ক সৌমেনের দাবি, ‘‘তৃণমূলই এটা করিয়েছে। তৃণমূল তো এখন অসৎ লোকে ভরে গিয়েছে। যে নেতারা অসৎ উপায়ে পয়সা উপার্জন করেন, অর্ধশিক্ষিত, কোনও কোনও নেতার কৃপায় যাঁরা বড় বড় পদে আছেন, সেই সব লোকেরা আমাকে আটকাতে এই পথ অবলম্বন করছেন।’’ সৌমেন জানান, তাঁর ছেলে বোধিসত্ত্ব মহাপাত্র এসএসকেএম থেকে ডাক্তারি পাশ করে সেখানেই ইন্টার্ন ও হাউসস্টাফশিপ করেছেন। এখন পাঁশকুড়া ১ ব্লকের বিএমওএইচ।
ওই ইন্টার্নের পাশাপাশি এক হাউসস্টাফের দিকেও অভিযোগের আঙুল তুলে বিভিন্ন পোস্ট সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই তরুণও কোনও ভাবেই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন আর জি করের আন্দোলনকারী আবাসিক চিকিৎসকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘কেন ওঁদের নিখোঁজ, প্রকৃত দোষী, এ সব বলা হচ্ছে, তা বুঝতে পারছি না। সকলের কাছে অনুরোধ, এমন গুজব যেন বাড়তে দেওয়া না হয়।’’
কিন্তু, রাজ্যের চিকিৎসক মহলের একাংশের মাধ্যমেই তো এমন বার্তা আজ ভাইরাল। তা হলে? এ দিন ‘ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন’ (আইএমএ)-এর রাজ্য শাখা এবং
‘দ্য জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’-এর যৌথ সাংবাদিক বৈঠকেও বিষয়টি গুজব বলেই দাবি করা হয়েছে। আর এর জন্য দায়ী করা হয়েছে তদন্তে পুলিশের ধোঁয়াশা রেখে দেওয়ার প্রবণতাকে।
‘দ্য জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’-এর তরফে অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি দাবি করেছি। কিন্তু তদন্তে এত গোপনীয়তা রাখা হচ্ছে যে, বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে।’’ আবার আইএমএ-র তরফে দ্বৈপায়ন মজুমদার বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমের তদন্ত নয়, প্রশাসনকে দেখতে হবে কোনও নিরপরাধ যেন শাস্তি না পান। আর প্রকৃত দোষীও যেন আড়ালে থেকে না যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy