মারমুখী: বিক্ষোভের সময়ে সেন্ট অগাস্টিন্স ডে স্কুলের অধ্যক্ষের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি অভিভাবকদের। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।
আগামী বছর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা দেবে ওরা। কিন্তু অভিযোগ, স্কুল এখনও তাদের রেজিস্ট্রেশন করায়নি। অভিভাবকদের বক্তব্য, এর ফলে অন্তত ৩০০ জন পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকালে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের সেন্ট অগাস্টিন্স ডে স্কুলে। স্কুলের পাল্টা অভিযোগ, অভিভাবকেরা বিক্ষোভ চলাকালীন স্কুলের ভিতরে ঢুকে পড়েন এবং নিরাপত্তারক্ষীর উপরে চড়াও হন। অধ্যক্ষ স্কুলে এলে তাঁকেও নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ওই স্কুলের সামনে অভিভাবকেরা জড়ো হতে থাকেন। তাঁদের বক্তব্য, নবম শ্রেণিতেই পড়ুয়াদের দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু স্কুল নানা রকম টালবাহানা করে সেই সময়ে রেজিস্ট্রেশন করেনি। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর সেই রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় প্রায় ৩০০ পড়ুয়া বোর্ডের পরীক্ষা কী ভাবে দেবে, তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
কয়েক জন অভিভাবক জানালেন, তাঁরা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন যে, গত বছর ওই স্কুলের সিআইএসসিই বোর্ডের অনুমোদন বাতিল হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই খবর স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানাননি। এ প্রসঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এক জন বলেন, ‘‘সিআইএসসিই বোর্ড আমাদের নতুন ভবনে যেতে বলেছিল। আমরা সেই ভবনে চলে এসেছি। এই সংক্রান্ত নথিও ওদের কাছে জমা দিয়েছি।’’ গত বছর দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা অন্য স্কুলের পরীক্ষার্থী হয়ে পরীক্ষায় বসেছিল। বিক্ষোভকারী অভিভাবকদের প্রশ্ন, দশমের বোর্ডের পরীক্ষা, অর্থাৎ আইসিএসই পরীক্ষা হোম সেন্টারে হয়। তা হলে কেন তাঁদের ছেলেমেয়েরা অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেবে? তবে গত বছর দশম শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছিল। এ বার সেটাও না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে এবং পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়াটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ দিন সরাসরি স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চেয়ে স্কুলের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন অভিভাবকেরা। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের আটকালে সেখানে এক প্রস্ত ধস্তাধস্তি হয়। নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়ে দেন, অধ্যক্ষ না এলে তাঁদের স্কুলের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হবে না। এর পরে অধ্যক্ষ স্কুলে আসতেই অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অভিযোগ, অধ্যক্ষকে নিগ্রহ করা হয়। ঘটনাস্থলে আসে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ। পুলিশের কয়েক জন পদস্থ কর্তাও চলে আসেন।
শেষ পর্যন্ত পুলিশের মধ্যস্থতায় অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়। পার্ক স্ট্রিট থানা জানিয়েছে, স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, আগামী ১০ দিনের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হবে। যদিও এই আশ্বাসবাণীতে ভরসা করছেন না অভিভাবকদের অনেকেই। তাঁদের ছেলেমেয়েরা যাতে এ বছর নির্বিঘ্নে পরীক্ষায় বসতে পারে এবং তাদের রেজিস্ট্রেশন যাতে করে দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে আর্জি জানিয়ে সিআইএসসিই বোর্ডকে চিঠি লিখেছেন তাঁরা। বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু নিয়ম না মানায় স্কুলের অনুমোদন গত বছর বাতিল করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, স্কুল বা অভিভাবক— কোনও তরফেই এখনও পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তারা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy