Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2024

অনুমতি না নিয়েই শংসাপত্রের ছবি মণ্ডপে, ক্ষুব্ধ বেহালার যুবক

কেন মণ্ডপসজ্জায় দরকার পড়ল শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র? জাগরণী সঙ্ঘের এক কর্তা আশিস সাহা জানান, এ বার তাঁদের পুজোর থিম ছিল ‘নেপথ্যে।’

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫৬
Share: Save:

ছৌ নাচের মুখোশ থেকে শুরু করে ফেলে দেওয়া জিনিস, মাটির ভাঁড়, রান্নাঘরের ব্যবহার্য সামগ্রী— কলকাতার পুজোয় মণ্ডপসজ্জায়কী না থাকে! কিন্তু শিক্ষাগতযোগ্যতার শংসাপত্র ডাউনলোড করে, তার প্রিন্ট আউট নিয়ে মণ্ডপ সাজানো হল এ বার। যাঁর স্নাতকোত্তরের শংসাপত্রের ছবি এই ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, নন্দন ভৌমিক নামে বেহালার ঠাকুরপুকুরের সেই বাসিন্দা এর বিন্দুবিসর্গ জানতেন না বলে দাবি করেছেন। পরে বিষয়টি জেনে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তিনি। নন্দন ওই পুজো কমিটির কাছে অভিযোগ করার পাশাপাশি সমাজমাধ্যমে কলকাতা পুলিশের অফিশিয়াল পেজে লিখিত ভাবে সব জানিয়েছেন। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ নথি সমাজমাধ্যমে দেওয়ার বিষয়ে আমরা কতটা সচেতন?

নন্দন জানান, অন্য অনেকের মতো তিনিও পেশাগত কারণে লিঙ্কডইন নামে চাকরি-সংক্রান্ত একটি সমাজমাধ্যমে স্নাতকোত্তরের শংসাপত্র আপলোড করে রেখেছিলেন। পুজোর মধ্যেই তাঁর এক বন্ধু জানান, উল্টোডাঙার জাগরণী সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাবের পুজোয় ওই শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। নন্দনবলেন, ‘‘আমাকে মণ্ডপের ছবি তুলে পাঠায় ওই বন্ধুটি। আমি দেখে অবাক হয়ে যাই। আমি এ ভাবে মণ্ডপসজ্জায় শংসাপত্র ব্যবহারের অনুমতিকাউকে দিইনি। অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও শংসাপত্রে রয়েছে। কেন ওরা আমার ওই নথি অনুমতি না নিয়ে ব্যবহার করছে? ওই পুজোর কর্তাদের কাছে জানতে পারি, মণ্ডপসজ্জার দায়িত্বে থাকা শিল্পীই এই কাজ করেছেন। পুজোকর্তারা এই বিষয়ে কিছু জানেন না।’’

কেন মণ্ডপসজ্জায় দরকার পড়ল শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র? জাগরণী সঙ্ঘের এক কর্তা আশিস সাহা জানান, এ বার তাঁদের পুজোর থিম ছিল ‘নেপথ্যে।’ এই থিমে সন্তানদের জন্য বাবার আত্মত্যাগ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাবা অনেক কষ্ট করে ছেলেমেয়েকে বড় করে তোলেন। পড়াশোনা শেখান। তাই সন্তানদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্র শুধু তাদের নয়, বাবারও কষ্টার্জিত ফল। কিন্তু অনেকেই সেই অবদান মনে রাখেন না— এমনই ভাবনায় সেজেছিল মণ্ডপ। এর জন্য বেশ কয়েকটি ভাল নম্বর পাওয়া শিক্ষাগত যোগ্যতার শংসাপত্রের দরকার ছিল।

নন্দন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে স্নাতকোত্তরে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এখন তিনি একটি সংস্থায় কর্মরত। আশিস বলেন, ‘‘কাজটা খুবই ভুল হয়েছে। আসল শংসাপত্র ডাউনলোড করে ব্যবহার করার কোনও দরকার ছিল না। ইচ্ছেমতো নম্বর বসিয়ে শংসাপত্র বানিয়ে নিলেই চলত। শিল্পী কেন এমন করলেন, জানি না। উনি এখন এখানে নেই। ফিরলেই ওঁকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করব।’’

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যম থেকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে নানা ধরনের সাইবার অপরাধঘটছে। তাই সমাজমাধ্যমে কী আপলোড করা হচ্ছে, সেই বিষয়ে সব সময়ে সচেতন থাকতে হবে। সরাসরি টাইমলাইনে আপলোড না করে, কাউকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ নথি পাঠাতে হলে মেসেজের মাধ্যমে সরাসরি পাঠানো যেতে পারে। তাতে সাইবার জালিয়াতির আশঙ্কাকম থাকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2024 Durga Puja Pandal Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy