যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হস্টেলের সুপার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
যাদবপুরে ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির পঞ্চম বৈঠক বসতে চলেছে শুক্রবার। সেই বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয় এবং সেই সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসে কি না, সে দিকে নজর থাকবে। এরই মধ্যে যাদবপুরের প্রাক্তন এবং বর্তমান মিলিয়ে আরও কিছু ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চলেছে লালবাজার।
পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক, শুক্রবারই ১৫ জন বিধায়ককে নিয়ে মৃত ছাত্রের বাড়ি যাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন নম্বর গেটের সামনে এবিভিপির অবস্থান বিক্ষোভে গিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছিলেন, ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে নিয়ে শুক্রবার তিনি নদিয়ার বগুলায় মৃত ছাত্রের বাড়িতে যাবেন। তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলবেন।
শুক্রবার শুভেন্দুকে কালো পতাকা দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র। জানা যায়, ছাত্র সংগঠন আরএসএফের তরফে বিরোধী দলনেতাকে কালো পতাকা দেখানো হয়। শুভেন্দু বেরিয়ে যাওয়ার পরেই এবিভিপির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আরএসএফ। তাদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় হামলা চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চার নম্বর গেটের সামনে হুলস্থুল বেঁধে যায়। দু’পক্ষের মারামারিতে জখম হন বেশ কয়েক জন। এক যুবকের নাক, মুখ ফেটে রক্ত পড়তে দেখা যায়। আহত হন তথাগত রায়চৌধুরী নামে এক রূপান্তরকামীও। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে লালবাজারে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশের তরফে বৃহস্পতিবার আরও এক বার তলব করা হয় ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায়কে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় রজতকে। তদন্তকারীদের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রজতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস হিসাবে তাঁর ভূমিকা কী? ডিনের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যাদবপুরে র্যাগিং-বিরোধী কোনও গোষ্ঠী বা দল (স্কোয়াড) আছে কি না। তদন্তকারীদের দাবি, রজত তাঁদের জানিয়েছেন, র্যাগিং-বিরোধী স্কোয়াড বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে। যদি সেখানে কিছু খামতি থাকে, তবে তা শুধরে নেবেন বলেও তদন্তকারীদের জানিয়েছেন তিনি। হস্টেলে সিসি ক্যামেরা রয়েছে কি না, ছাত্রের পড়ে যাওয়ার কথা তিনি কী ভাবে জানতে পেরেছিলেন, এ সব প্রশ্নও রজতকে জিজ্ঞেস করা হয় বলে সূত্রের খবর।
এই আবহেই যাদবপুরের হস্টেলের এক সুপার জানান যে, র্যাগিংয়ের কথা তিনি জানতেন। নতুন ছেলেরা হস্টেলে এলে সিনিয়রেরা যে ‘ইন্ট্রো’ নিতেন, তা-ও তাঁর জানা ছিল। কিন্তু তার ফলে যে কারও মৃত্যু ঘটতে পারে, ধারণা করতে পারেননি তিনি। ওই সুপারের দাবি, হস্টেলে সিনিয়রদের প্রভাব ছিল। কর্তৃপক্ষও র্যাগিংয়ের কথা জানতেন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তাঁর আরও দাবি, রাতে কোনও গোলমাল হলে কোনও দিনই কর্তৃপক্ষকে পাশে পাননি সুপারেরা। রেজিস্ট্রার এবং ডিন অফ স্টুডেন্টসের পরে সুপারকেও লালবাজারে তলব করা হতে পারে বলে একটি সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy