Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Goons

violence: জামিনে বেরোতেই ‘জানে মেরে দিতে’ হামলা

সিনেমার দৃশ্য বলে মনে হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে বাস্তবে ঠিক এমনটাই ঘটেছে খাস কলকাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সামনে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:৫৩
Share: Save:

বহু দিন হাজতে কাটিয়ে জামিন পাচ্ছে এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী। আর তাকে প্রাণে মারার জন্য আগ্নেয়াস্ত্র, চপার, লাঠি ও ইট-পাথর নিয়ে হাজতের বাইরেই হাজির ‘চিরশত্রু’ আর এক দুষ্কৃতী দলের জনা ষাটেক লোক! জামিনে মুক্ত ব্যক্তি বেরিয়ে আসতেই তাকে ঘিরে ধরে চপারের কোপ!

শেষে পালিয়ে যাওয়ার জন্য শূন্যে গুলি!

সিনেমার দৃশ্য বলে মনে হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে বাস্তবে ঠিক এমনটাই ঘটেছে খাস কলকাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের সামনে। যার জেরে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সংলগ্ন ডি এল খান রোড। শেষ পর্যন্ত পুলিশি হস্তক্ষেপে ঘটনাস্থল থেকেই ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে খবর। ধৃতদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, চপার, লাঠি এবং বেশ কয়েকটি লোহার রড উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। আরও অনেকেই অবশ্য আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃতদের শুক্রবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের চেষ্টার পুরনো একটি মামলায় শিয়ালদহ আদালত জামিন দিয়েছিল বহু বার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া, কসবার কুখ্যাত দুষ্কৃতী মুন্না পাণ্ডেকে। বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা ছিল তার। দুপুর ২টো নাগাদ সেখানেই জনা ষাটেকের দলবল নিয়ে হাজির হয় মুন্নার বহু দিনের ‘শত্রু’ বিশ্বজিৎ পোদ্দার ওরফে সোনা পাপ্পু। মুন্না হাজত থেকে বেরোতেই তার উপরে চড়াও হয় পাপ্পুর সঙ্গীরা। পুলিশের দাবি, গোপন সূত্রে এই হামলার আগাম খবর পেয়ে গিয়েছিল তারা। তাই হেস্টিংস থানার পাশাপাশি লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখা ও গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকেরা ঘিরে ফেলেন ওই দলটিকে। কোনও মতে তাঁরা ছাড়িয়ে নেন মুন্নাকে। সেই সময়ে পুলিশের সঙ্গে পাপ্পুর দলের কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায়। পুলিশ ২৫ জনকে ধরে ফেললেও সোনা পাপ্পু তার এক সহযোগী আখতার আলিকে নিয়ে বন্দুক উঁচিয়ে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের কাছ থেকে একটি দেশি পিস্তল, কার্তুজ, লোহার রড, লাঠি ও চপার উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ এর পরে ধৃতদের সবাইকে লালবাজারে নিয়ে আসে। দ্রুত এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয় মুন্নাকে। সে এখন সেখানেই চিকিৎসাধীন। পরে তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হেস্টিংস থানায় একটি মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

কসবার এই দুই দুষ্কৃতী দলের মধ্যে গন্ডগোল বহু দিনের। এক কালে ওই এলাকা লোহা পাপ্পু বলে এক দুষ্কৃতীর অধীনে ছিল। তার মৃত্যুর পরে দ্রুত এলাকার দখল নেয় সোনা পাপ্পু। এ দিকে, দ্রুত উঠে আসে মুন্নাও। ওই এলাকার নির্মাণকাজের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে শুরু হয় দুই দুষ্কৃতী দলের দীর্ঘ লড়াই। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮-র মধ্যে তিন বার গ্রেফতার হয় মুন্না। পাপ্পুও ইতিমধ্যেই একাধিক বার হাজতবাস করেছে। দু’জনের বিরুদ্ধেই খুন, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রয়েছে।

লালবাজারের এক কর্তা যদিও বলেছেন, ‘‘এখন এই ধরনের ‘গ্যাং ওয়ার’ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। প্রেসিডেন্সি জেলের বাইরে এমন কিছু ঘটতে পারে বলে আগাম খবর ছিল। সেই মতোই কাজ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডা দমন শাখা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Goons Presidency Jail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy