যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। ছবি: সংগৃহীত।
শাসকদল তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে হেনস্থা এবং মানসিক চাপ তৈরির অভিযোগ তুলে স্বেচ্ছাবসর নিতে চাইলেন কলকাতার যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়। তিনি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে চিঠি দিয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, বিজেপির কাছে ভাল সুযোগসুবিধা পাওয়ার জন্যই হয়তো এই সব ‘মিথ্যা অভিযোগ’ আনছেন অধ্যক্ষ। পঙ্কজের রাজনৈতিক মত এবং পথ আগেই প্রকাশ্যে এলেও আট বছর ধরে তিনি যে অধ্যক্ষ পদে রয়েছেন, সে কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে তারা। প্রসঙ্গত, একাধিক বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমে বিজেপির প্রতিনিধি হিসাবে উপস্থিত থাকেন পঙ্কজ। এর পাশাপাশি বিজেপির ইকনমিক সেলের কোঅর্ডিনেটরের দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
অধ্যক্ষের বক্তব্য, কলেজে ভর্তির সময়ে যে ফি বা টাকা নেওয়া হয়, তাতে ছাড় দিতে হবে, এই দাবি তুলে সম্প্রতি তাঁকে হেনস্থা করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যেরা। গত বৃহস্পতিবার তাঁকে আটকে রেখে ঘরের ভিতর ঢুকে অশালীন আচরণ করা হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “প্রতিনিয়ত নানা বিষয় নিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে। কলেজে শিক্ষার পরিবেশকে নষ্ট করা হচ্ছে। আমার সুগার, প্রেশার রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমি এই মানসিক চাপ নিতে পারছি না।” অধ্যাপক হিসাবে নিজের ৩৫ বছরের কর্মজীবনে এমন অভিজ্ঞতার মুখে তাঁকে পড়তে হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি। কলেজের ফি-তে ছাড় দেওয়ার প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ জানান, অনেক পড়ুয়াই রাজ্য সরকারের দেওয়া স্কলারশিপ বা বৃত্তির জন্য আবেদন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দু’টি বিষয়ের জন্য আবেদন করা যায় না বলে জানিয়েছেন তিনি। কলেজের নিয়মের কথা জানিয়ে স্বেচ্ছাবসর নিতে ইচ্ছুক অধ্যক্ষ বলেন, “যে পড়ুয়ারা কোনও সেমেস্টারে ফার্স্ট ক্লাস পায়, তাঁদের ক্ষেত্রে আমরা পরবর্তী সেমেস্টারে টিউশন ফি নিই না। আর যে ছাড়ের জন্য বলা হচ্ছে, তা আমরা দিই ফর্ম ফিলআপের সময়।” যে ছাত্ররা তাঁকে ‘হেনস্থা’ করছেন, তাঁরা ছাড় পাওয়ার প্রাথমিক শর্ত হিসাবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির স্বাক্ষরিত আয়ের শংসাপত্র দাখিল করেননি বলে অভিযোগ অধ্যক্ষের।
বিজেপি করার জন্য এই ‘হেনস্থা’ কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ বলেন, “এরা যখন কিছু পারে না, তখন ওটাকে (রাজনীতি) ব্যবহার করে।” কোনও নির্দিষ্ট দল করা অপরাধ নয়, এ কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণ টানেন তিনি। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী যদি একই সঙ্গে দলের সভানেত্রী হিসাবে থাকতে পারেন, তা হলে অধ্যক্ষ হয়ে রাজনৈতিক মত রাখা কোনও অপরাধ নয়।” ২০২৬ সালের জুলাই মাসে অবসরগ্রহণের কথা ছিল পঙ্কজের। তবে তিনি ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসেই স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে হোয়াটসঅ্যাপ-বার্তা পাঠিয়েছেন পরিচালন সমিতির সভাপতিকে। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে কিছু জানানোর ‘দায়’ তাঁর নেই বলে জানিয়েছেন পঙ্কজ। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “উনি অধ্যক্ষ না বিজেপি মুখপাত্র, সেটাই গুলিয়ে ফেলছেন। এই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছেন, যাতে বিজেপির তরফে ভাল কোনও সুযোগসুবিধা পাওয়া যায়।” এর পাশাপাশি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তৃণাঙ্কুর বলেন, “শুনেছি উনি প্রতি দিন কলেজে আসেন না। ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার দিকগুলি নিয়েও ভাবেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy