নিরুপায়: শৌচাগার ব্যবহার করতে করুণাময়ী মোড়ে গিয়েছেন মহিলা অনশনকারীরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
পর্যাপ্ত পানীয় জল নেই। নেই শৌচালয়। তারই মধ্যে গত ১২ দিন ধরে বসে রয়েছেন চার মহিলা-সহ ১৭ জন অনশনকারী! তারও এক দিন আগে থেকে বিক্ষোভ অবস্থানে বসেন কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাঁদের অভিযোগ, পানীয় জল ও শৌচালয়ের অভাবে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি, তীব্র গরমে স্নান করতে রিকশা করে দূরের শৌচাগারে যেতে হচ্ছে।
উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেনের শিক্ষকদের দাবি, ‘‘জল, শৌচালয়ের মতো ন্যূনতম ব্যবস্থা না থাকায় অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমনকি, অনশনের জেরে কয়েক জন সামান্য হাঁটার ক্ষমতাও হারিয়েছেন। এ জন্য হুইলচেয়ারের ব্যবস্থা হয়েছে।’’ যদিও তাঁদের বক্তব্য, সমস্যা তাতেও হচ্ছে। এক অনশনকারীর কথায়, ‘‘একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সম্প্রতি চারটি পরিবেশবান্ধব শৌচাগারের (বায়ো টয়লেট) ব্যবস্থা করেছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। তা ছাড়া ওই ছোট শৌচাগারে স্নান করা যায় না। তীব্র গরম থেকে রেহাই পেতে স্নানের জন্য সাড়ে আটশো মিটার দূরের করুণাময়ীর ‘পে অ্যান্ড ইউজ়’ শৌচাগার ব্যবহার করতে হচ্ছে। এতটা পথ হুইল চেয়ারে যাওয়া অসম্ভব। তাই আমাদের রিকশায় যেতে হচ্ছে।’’ সংগঠনের নেত্রী পৃথা বিশ্বাস বলেন, ‘‘এমনিতেই টানা অনশনে শরীর দুর্বল। মেয়েদের সমস্যাটা আরও বেশি।’’
এই অনশন মঞ্চের বিপরীতের মাঠে ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবসে আসা মানুষের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। পানীয় জলের পর্যাপ্ত গাড়িও ছিল। অনশনকারীদের প্রশ্ন, ‘‘এত দিন ধরে অনশন চলছে যেখানে, কয়েকটা জলের গাড়ি কি সেখানে পাঠাতে পারত না প্রশাসন?’’ চলতি বছরের মার্চে এসএসসি-র প্রার্থীরা চাকরির দাবিতে ধর্মতলায় প্রেস ক্লাবের পাশে টানা ২৮ দিন অনশন চলেছিল। সে বারেও অনশনকারীদের অভিযোগ ছিল, শৌচালয়, জলের ব্যবস্থা নেই। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ব্রিগেড থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় প্রশাসন অসংখ্য পরিবেশবান্ধব শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে পারে। পারে না শুধু এ সব ক্ষেত্রেই।
অসুস্থ হয়ে পড়া এক অনশনকারীকে হুইলচেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে পরিবেশবান্ধব শৌচাগারে। বুধবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নৈতিক সমর্থন জানাতে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে এসেছিলেন সব্যসাচী দত্ত। অথচ যখন এই অনশন শুরু হয়, তখন তিনিই ছিলেন বিধাননগরের মেয়র। তা হলে অনশনকারীদের জন্য পানীয় জল এবং পরিবেশবান্ধব শৌচাগারের ব্যবস্থা করেননি কেন তিনি? তাঁর উত্তর, প্রশাসনের তরফে তাঁকে করতে দেওয়া হয়নি। বর্তমানে বিধাননগর পুরসভার দায়িত্বে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে ওঁরা জলের জন্য আবেদন করেনি। এ নিয়ে আমার বিশেষ কিছু জানা নেই।’’
এ দিকে, অনশনরত প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করে দিতে এপিডিআর-এর পক্ষ থেকে বুধবার বিধাননগর পুর কমিশনারকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। এপিডিআর নেতৃত্ব জানায়, প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে, অনশনকারীরা লিখিত আবেদন করলে ভাল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy