ফাইল চিত্র।
বাড়তে বাড়তে আলুর দাম এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, আলুসেদ্ধ-ভাত মুখে দেওয়াটাও এখন বিলাসিতার সমান।
চাল, ডাল, ভোজ্য তেল থেকে শুরু করে আনাজপাতি— সব কিছুরই দাম এখন আকাশছোঁয়া। রান্নার গ্যাসের এক-একটি সিলিন্ডার হাজার টাকা পেরিয়ে গিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির কোপে পড়ে সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকাই দায়। এরই মধ্যে নতুন দুঃসংবাদ বয়ে এনেছে আলু। কারণ, আলুর দামও চলে যাচ্ছে নাগালের প্রায় বাইরে।
শহরের বিভিন্ন বাজারে জ্যোতি আলু এখন গড়ে ৩০ টাকা কেজি দরে বিকোচ্ছে। চন্দ্রমুখীর দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা। অথচ, মাসখানেক আগেও এই দুই ধরনের আলুর দাম কেজিতে ১০-১৫ টাকা করে কম ছিল।
আলুর দাম এতটা অস্বাভাবিক হারে বাড়ল কেন?
ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশের মতে, গত শীতের মরসুমে অতিবৃষ্টির জেরে আলু চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই কারণেই জোগানে ঘাটতি থাকায় আলুর দাম এতটা বেড়েছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, অক্টোবর থেকেই আলুর বীজ পোঁতা শুরু হয় এই রাজ্যে। সেই আলু ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে তৈরি হয়ে যায়। কিন্তু এ বার অতিবৃষ্টির জেরে বহু জায়গায় খেতের আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
আনাজের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে-র কথায়, ‘‘গত শীতে ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে আলুর ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক আলু নষ্ট হয়েছে। নতুন আলু ওঠার সময়ে দাম নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু এখন অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।’’ তা হলে আগামী দিনে আলুর দাম কি আরও বাড়তে পারে? কমলবাবুর কথায়, ‘‘হিমঘরে কত পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে, তার উপরেই সবটা নির্ভর করছে। আশা করছি, হিমঘর থেকে আলু বেরোলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’
কমলবাবু আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও সাধারণ মানুষের রাতের ঘুম ছুটেছে। মঙ্গলবার সকালে মানিকতলা বাজারে এসেছিলেন রমেন দত্ত। রমেনবাবুর খেদ, ‘‘সব জিনিসেরই দাম বেড়েছে। শুধু আলু-ভাতে খেয়ে যে বাঁচব, সেই উপায়ও আর নেই। বাজারে এলেই আগে অন্তত চার কেজি আলু কিনতাম। এখন রীতিমতো মেপে কিনতে হচ্ছে।’’
আলুর দাম গত কয়েক দিনে হঠাৎ এতটা বেড়ে যাওয়ায় অবাক শহরের আলু ব্যবসায়ীরাও। আনাজের দাম নিয়ন্ত্রণে গঠিত রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের আর এক সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলের কথায়, ‘‘অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য গত বছরের তুলনায় এ বার আলুর উৎপাদন অনেকটাই কম হয়েছে। বৃষ্টিতে আলুর ধসা রোগের জন্যও অনেক আলু নষ্ট হয়েছে।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, ‘‘হিমঘরগুলি বন্ধ ছিল। এ বার খুলতে শুরু করেছে। আগামী দিন দশেকের মধ্যে দাম কমবে বলে আশা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy