দরজা খোলার আগে তৈরি হচ্ছে স্কুল। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার আগে তৈরি হচ্ছে স্কুল। মঙ্গলবার, হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
কোনও স্কুল অভিভাবক ও পড়ুয়াদের জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা ক্যান্টিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনও স্কুল আবার ঠিক করেছে, আপাতত টিফিন পিরিয়ডই রাখা হবে না। কোনও কোনও স্কুল কর্তৃপক্ষ আবার অভিভাবকদের সতর্ক করে বলেছেন, দলবদ্ধ ভাবে নয়, পড়ুয়ারা যেন একা বা অভিভাবকদের সঙ্গেই স্কুলে আসে। এমনকি, একটি স্কুল আবার জানিয়েছে, চাইলে কোনও পড়ুয়া পিপিই পরেও স্কুলে আসতে পারে।
আগামী ১২ তারিখ রাজ্যের সরকারি, সরকার পোষিত, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং আইসিএসই ও সিবিএসই স্কুলগুলির দরজা খুলে যাচ্ছে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য। স্কুল খোলার দু’দিন আগে স্কুলগুলির ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। এক দিকে যেমন বিভিন্ন স্কুলে জীবাণুনাশের কাজ চলছে, অন্য দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে অনলাইন বা সামনাসামনি বৈঠকে শেষ মুহূর্তের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন।
সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে যে, কেরলের মলপ্পুরমের দু’টি স্কুলে দশম শ্রেণির ১৯২ জন পড়ুয়ার করোনা সংক্রমণ হয়েছে। কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ওই দুই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরাও। কেরলের এই খবরে শহরের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ কিছুটা হলেও দ্বিধাগ্রস্ত। ছেলেমেয়েদের এখনই স্কুলে পাঠানো ঠিক হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের অনেকেই। কোনও কোনও পড়ুয়া আবার জানিয়েছে, অফলাইনে নয়, তারা অনলাইনেই পরীক্ষা দিতে চায়। যদিও বেশির ভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষই পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা মেনে স্কুলে আসার পরামর্শ দিয়েছেন।
যেমন, ডন বস্কো পার্ক সার্কাসের অধ্যক্ষ, ফাদার বিকাশ মণ্ডল জানিয়ে দিয়েছেন, ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শুধু দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে আসবে। দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা ১৫ তারিখ থেকে আসবে। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘দীর্ঘ সময় ধরে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস হবে বলে পড়ুয়ারা টিফিন আনতে পারবে। তবে বড় ব্যাগ নয়, ছোট ব্যাগে টিফিন আনবে তারা। স্কুলের ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে। স্কুলে স্যানিটাইজ়ার
থাকবে। তবে নিজেদের সঙ্গেও স্যানিটাইজ়ার রাখা ভাল। সঙ্গে মাস্ক তো থাকবেই।’’
হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের কী কী নিয়ম মানতে হবে, সে বিষয়ে জানাতে আজ, বুধবার অভিভাবকদের পর্যায়ক্রমে স্কুলে ডাকা হচ্ছে। শুভ্রজিৎবাবু বলেন, ‘‘১২ তারিখ থেকে যারা স্কুলে আসবে, তাদের প্রত্যেককে একটি করে কোভিড কিট দেওয়া হবে। কিটের মধ্যে থাকবে একটি তরল সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, টিসু ও মাস্ক । স্কুলে আসার সময়ে নিজেদের আনা মাস্ক ব্যবহার করলেও স্কুলে যেন সবাই একই ধরনের এবং একই মানের মাস্ক পরে। স্কুলের দেওয়া মাস্ক অনেকটা স্কুলের পোশাকের মতোই হবে।’’ শুভ্রজিৎবাবু জানান, টিফিনের বিরতির সময় অনেকটা কমিয়ে আনছেন তাঁরা। স্কুলে ঢোকার ও বেরোনোর গেটের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। হেয়ার স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, করোনা সতর্কতা মেনে কী ভাবে স্কুল চালানো হবে, সে বিষয়ে আজ, বুধবার শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক হবে। পরে তা অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।
সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কৃষ্ণ দামানির কথায়, ‘‘কী ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে হবে, সে বিষয়ে অভিভাবকদের বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, প্রত্যেক পড়ুয়াকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। গত ১৪ দিনের মধ্যে কোনও পড়ুয়া কোভিড রোগীর সংস্পর্শে এসেছিল কি না, তা জানাতে হবে সেখানে।
শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ক্লাসরুমে যে সব বেঞ্চে পড়ুয়ারা বসবে না, সেই বেঞ্চগুলিকে আলাদা করে চিহ্নিত করে পায়া কাপড় দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভিডিয়ো বার্তার মাধ্যমেও অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সর্তকবার্তা দেওয়া হবে। ব্রততীদেবী বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা স্কুলের পোশাক পরেই স্কুল করবে। তবে যারা গণপরিবহণে আসবে, তারা চাইলে পিপিই পরেও আসতে পারে। তবে বেশি ক্ষণ পিপিই পরে থাকলে অসুবিধা হতে পারে। তাই স্কুলে আসার পরে পিপিই খুলে রেখে সাধারণ স্কুলের পোশাক পরে নিতে বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy