ফাইল চিত্র।
পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে ঘোড়ার মলদ্বারে পরানো হবে ‘স্টুল ব্যাগ’। কলকাতা পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে আজ, শুক্রবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের উত্তর গেটের সামনে গাড়ি টানা ঘোড়াদের স্টুল ব্যাগ পরিয়ে এই উদ্যোগের আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) অরিজিৎ সিংহ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় প্রাথমিক ভাবে কিছু ঘোড়াকে স্টুল ব্যাগ পরানো হবে।’’ বিভিন্ন রাস্তার পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার সামনে ও ময়দানে যত্রতত্র ঘোড়ার বিষ্ঠা পড়ে থাকতে দেখে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র। এই বিষ্ঠা যে পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, সে বিষয়ে আগেই জাতীয় পরিবেশ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।
পুলিশের এক কর্তা বললেন, ‘‘মানুষের শরীরে যে ডায়াপার পরানো হয়, তার সঙ্গে ঘোড়ার স্টুল ব্যাগের অনেক তফাত। মানুষের ক্ষেত্রে ডায়াপার আট-দশ ঘণ্টার মধ্যে বদলাতে হয়। কিন্তু ঘোড়ার বিষ্ঠা যাতে রাস্তায় বা খোলা জায়গায় না পড়ে, তার জন্য রাবারের তৈরি ‘স্টুল ব্যাগ’ এক বার পরালে বহু দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। দিনের শেষে স্টুল ব্যাগটি এক বার পরিষ্কার করে নিলেই হল।’’
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র এ দিন বলেন, ‘‘মাসকয়েক আগে পুলিশ কমিশনার জানিয়েছিলেন, ভিক্টোরিয়া ও ময়দান এলাকায় ঘোড়াগুলি যেখানে-সেখানে মলত্যাগ করে পরিবেশ নোংরা করছে। তিনি বলেছিলেন, জার্মানির মতো বেশ কিছু দেশে ঘোড়াকে ‘স্টুল ব্যাগ’ পরানোয় রাস্তাঘাট পরিষ্কার থাকে। এখানেও তেমন করা যায় কি না, জানতে চান। পরে জার্মানি থেকে স্টুল ব্যাগের দু’টি নমুনা আনিয়ে এখানেই কোনও সংস্থাকে দিয়ে তা তৈরি করানো হয়।’’ কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে পাইলট প্রকল্প হিসাবে পুলিশ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে এই কাজ শুরু হল। আপাতত ২০০টি স্টুল ব্যাগের খরচ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বহন করেছে। এর পর থেকে কলকাতা পুলিশ ওই খরচ দেবে।’’ কল্যাণবাবু আরও জানান, পুলিশের উদ্যোগে ঘোড়ার বিষ্ঠা থেকে সার তৈরি হবে। যা ময়দান এলাকায় গাছে দেওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, জার্মানি থেকে স্টুল ব্যাগের নমুনা আনিয়ে এখানে তা তৈরি করানোর পরে মাউন্টেড পুলিশের ঘোড়াদের সেগুলি পরানো হয়। তাতে সাফল্য মিলেছে। ঘোড়ার বিষ্ঠা খোলা রাস্তায় পড়ে থাকলে তা থেকে মানুষের দেহে সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন পশু চিকিৎসকেরা। কলকাতা ঘোড়সওয়ার পুলিশের পশু-চিকিৎসক সুরজিৎ বসু বললেন, ‘‘রাস্তায় পড়ে থাকা ঘোড়ার বিষ্ঠা মানুষের শরীরের ক্ষতস্থানের সংস্পর্শে এলে ধনুষ্টঙ্কার হতে পারে। অনেক সময়ে ওই বিষ্ঠা গাড়ির চাকার মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সেটাও বেশ বিপজ্জনক।’’
রাজ্য প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ঘোড়ার মলে নানা ধরনের রোগের জীবাণু থাকে, যা মানুষের শরীরে চলে আসতে পারে। অসুস্থ ঘোড়ার মল থেকেও নানা জীবাণু, ছত্রাক ও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy