বেকবাগানের প্রচারসভায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। ডান দিকে, ফার্ন রোডে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
ভরা চৈত্রে বালিগঞ্জ উপনির্বাচন। হাতে সময় আর দিন পনেরো। প্রচারের মধ্যগগনে সূর্যের তেজ গা পোড়ালেও রবিবারকে হাতছাড়া করতে নারাজ প্রতিদ্বন্দ্বীরা। তাই সকাল থেকেই পথে নেমেছিলেন সব দলের প্রার্থী।
প্রচারে তাঁরা রাস্তায় যেমন ঘুরলেন, তেমনই দেখা গেল বাড়ি বাড়ি ঢুকে হাত মেলাতে। ভোট চাওয়ার পাশাপাশি পোষ্যকে দেখে খুনসুটিতে মেতে উঠতেও দেখা গেল প্রার্থীকে। কেউ আবার সটান হাজির হলেন চায়ের আড্ডায়। পাড়ায় পাড়ায় ছোট বৈঠক করতেও দেখা গেল কোনও প্রার্থীকে। সব মিলিয়ে রবিবার দিনভর প্রচারে সরগরম থাকল বালিগঞ্জ বিধানসভাকেন্দ্র।
দিন কয়েক ধরেই চড়া হচ্ছে রোদ। এলাকা ঘুরে প্রচার করতে তাই সকাল সকালই বেরিয়ে ছিলেন প্রার্থীরা। বালিগঞ্জ বিধানসভার তিলজলার ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের বস্তিতে সকালেই প্রচার সারেন সিপিএম প্রার্থী সায়রা শাহ হালিম। স্থানীয় একটি স্কুল সংলগ্ন এলাকা থেকে সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ শুরু হয় তাঁর প্রচার। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পৌঁছে যান ভোটারদের দরজায়।
প্রাতর্ভ্রমণ ফেরত মানুষের সঙ্গেও শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেল। কখনও বয়স্কদের পা ছুঁয়ে, আবার কখনও তাঁদের হাত ধরে চাইলেন আশীর্বাদ। এ দিন প্রচারের ফাঁকে এক পোষ্যের সঙ্গে খুনসুটি করতে দেখা গেল সায়রাকে। ভোটারের কাছে পোষ্যের খোঁজও নিলেন তিনি। সকালটা এ ভাবে কাটলেও বিকেলে বেকবাগান এলাকায় হাঁটলেন সিপিএম প্রার্থী। এ দিন প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থীকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না তিনি। সায়রা বলেন, ‘‘দল বদলালেই কি সব হয়? এত দিন বিজেপিতে থেকে তিনি যে যে কথা বলেছিলেন, ভোটারেরা তো তা ভুলে যাননি! ভোট বাক্সে ঠিক জবাব পাবেন।’’
অন্য দিকে, ফার্ন রোড এলাকায় এ দিন সকাল থেকে প্রচার সারেন এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী কেয়া ঘোষ। মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি চায়ের দোকানে বসেও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলতে, মানুষের সমস্যা শুনতে দেখা গেল প্রার্থীকে। এ দিন বিজেপি প্রার্থী বলেন, ‘‘এলাকার সমস্যা সমাধানই মূল লক্ষ্য। বিরোধী প্রার্থীদের নিয়ে ভাবছি না।’’
বাকিরা বাড়ি বাড়ি প্রচার সারলেও এলাকায় ছোট ছোট সভাতেই রবিবার জোর দিলেন তৃণমূল প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। এ দিন সন্ধ্যায় বেকবাগান ও তিলজলা এলাকায় দু’টি ছোট সভা করেন বাবুল। জায়গায় জায়গায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন তিনি। বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ করলেও তা পাত্তা দিতে নারাজ প্রার্থী। বাবুল বলেন, ‘‘বালিগঞ্জের মতো এমন একটি আসনে প্রার্থী হতে পেরে আমি আনন্দিত। প্রচারে বেরিয়ে মানুষের চোখে সরকারের প্রতি বিপুল আস্থা দেখতে পাচ্ছি।’’ বিরোধীদের কটাক্ষ প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রার্থী বলেন, ‘‘দলবদল করে আমি তো ইতিহাস তৈরি করিনি। এর আগেও অনেক দলবদল হয়েছে, অনেকেই দলবদল করেছেন। আমি বিজেপি কেন ছেড়েছি তা স্পষ্ট করে বলেছি। কোনও কিছুই অন্ধকারে নেই।’’
প্রার্থীদের প্রচার, প্রতিশ্রুতি, কটাক্ষ আর পাল্টা জবাব যেমন নিয়ে আসছে বালিগঞ্জে ভোটের মেজাজ, তেমনই ভোটারদের আড্ডাতেও ফিরল ভোট প্রসঙ্গ। সেখানেও উঠল দলবদল প্রসঙ্গ। ফার্ন রোডের এক চায়ের দোকানের আড্ডায় মজা করে এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘আমাদের হয়েছে যত জ্বালা! এ বার জিতে যদি আবার কেউ দলবদল করেন তখন না আবার আমাদের অফিস-কাজ মাথায় তুলে সকাল সকাল ভোটের লাইনে দাঁড়াতে হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy