স্টুডিয়োয় পুজো উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সেই পুলিশ আধিকারিক। নিজস্ব চিত্র
করোনার বছরে দুর্গাপুজোয় অন্য ভূমিকায় থাকছে পুলিশ। যদিও গোটা বাহিনী নয়, এক জন আধিকারিক। ধারাবাহিকতার পাঁচিল নড়াতে এক জনের প্রয়াসকেই আগামীর সূচনা বলছেন প্রশাসনের একাধিক কর্তা। শহরের একটি দুর্গাপুজোর শীর্ষসঙ্গীত তৈরিতে এ বার ডাক পড়েছে এক পুলিশ আধিকারিকের। তাঁকে সঙ্গত দিয়েছেন অন্য পুলিশকর্মীও।
গত প্রায় আড়াই দশক আগে থিম পুজোর শুরু এই শহরে। কয়েক বছর আগে যোগ হয়েছে পুজোর থিম সঙ্গীত। এত দিন সেই সুর বাঁধার ডাক পড়ত খ্যাতনামা শিল্পীদের। এই নিয়ে ক্লাবগুলির মধ্যে চলত প্রতিযোগিতা। সেই ধারায় ছেদ টানল করোনা। লকডাউনের সময়ে রাজ্য পুলিশের ব্যারাকপুর, লাটবাগানের জ্যাজ় অর্কেস্ট্রা ব্যান্ডের পুলিশকর্মীদের গলায় ‘করোনা করোনা’ গান শুনে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন বাগুইআটি থানা এলাকার কেষ্টপুরের একটি ক্লাবের সদস্যেরা। তখনই তাঁরা তাঁদের পুজোর শীর্ষসঙ্গীত ওই পুলিশকর্মীদের দিয়ে তৈরি করানোর সিদ্ধান্ত নেন।
লকডাউনের সময়ে লোকজন যাতে বাড়ি থেকে না বেরোন, সেই জন্য কখনও পুলিশকর্মীরা রাস্তায় ছবি এঁকেছিলেন। কেউ আবার গান বেঁধেছিলেন। কলকাতা পুলিশের কর্মী ও অফিসারদের দেখা গিয়েছিল বেলা বোস গানের সুরে করোনার সচেতনতার বার্তা দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় গাইতে। আবার রাজ্য পুলিশের ব্যান্ডের সদস্যদের দেখা গিয়েছিল হিন্দি গান ‘শুনো না শুনো না’-র সুরে ‘করোনা করোনা’ গান বেঁধে গাইতে। সেই দলের সদস্য এবং ওই গানের লেখক ছিলেন ব্যারাকপুরে কর্মরত রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর এএসআই অপূর্ব মজুমদার।
ওই ক্লাব সদস্যেরা জানাচ্ছেন, ‘করোনা করোনা’ গানটি শুনেই তাঁরা পুলিশ মহলে খোঁজ করে অপূর্ববাবুর সন্ধান পান। সদস্যদের কথায়, লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষের সঙ্গে পুলিশের ব্যবহার ছিল বন্ধুর মতোই। করোনা আক্রান্তের খবর পেলে জীবন বিপন্ন করে পুলিশকর্মীরাই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ক্লাবের সম্পাদক রঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন, “প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে অতিমারির মোকাবিলা করা পুলিশকে কোনও ভাবে সম্মানিত করতে চেয়েছিলাম। কী উপায়ে সেই কাজ করা যায়, বুঝতে পারছিলাম না। তখন গানটি শুনে মনে হয় ওই অফিসারকে দিয়ে আমাদের পুজোর থিম সং করানো যেতে পারে।’’
এ বার এই ক্লাবের পুজোর ভাবনায় উঠে এসেছে লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার কাহিনি। উদ্যোক্তারা জানান, কী ভাবে সেই পরিযায়ী শ্রমিকেরা মাইলের পর মাইল হেঁটে কিংবা সাইকেল চেপে বাড়ি ফিরেছেন, ফেরার পথে মালগাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছেন তাঁদের কেউ কেউ, সে সবই তুলে ধরা হবে।
দুর্গাপুজোর শীর্ষসঙ্গীত তৈরির অভিজ্ঞতা কেমন? অপূর্ববাবুর কথায়, ‘‘এটা খুব সম্মানের প্রস্তাব। এত দিন ধরে যে সমস্যা নিয়ে সবাই লড়ছি। তার কারণেই এই সৃষ্টিশীল কাজ করার সুযোগ পেয়ে ভাল লাগছে। অবশ্যই ধন্যবাদ জানাব পুলিশ প্রশাসনকে। লকডাউনের সময়ে ওই গানটি তৈরির পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বাহিনীর প্রায় সকলেই প্রশংসা করেছিলেন। গানটির সাফল্যের সেটিও কারণ।’’ শীর্ষ সঙ্গীতের যন্ত্রানুষঙ্গে সোমনাথ সাহার পাশাপাশি রয়েছেন বাহিনীর এক কনস্টেবল অভিজিৎ দালাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy