কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ঝাড়পোঁছের কাজ চলছে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
বিদ্যাসাগর কলেজে আজ, মঙ্গলবার, বিদ্যাসাগরের নতুন মূর্তির আবরণ উন্মোচনের কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার আগেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহকে নিজেদের হেফাজতে নিল লালবাজার। পুলিশের দাবি, ওই মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনার পিছনে রয়েছে রাকেশের প্ররোচনা। তার জেরেই কলেজের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। তবে ঠিক কে কে ওই মূর্তি ভাঙচুর করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয় তদন্তকারীদের কাছে। বিভিন্ন ভিডিয়ো ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশকর্মীদের মারধরের ঘটনায় গত সপ্তাহেই বিমানবন্দর থেকে রাকেশকে গ্রেফতার করেছিল ওয়াটগঞ্জ থানার পুলিশ। আদালতের নির্দেশে রাকেশকে জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। এর পরেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় রাকেশকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখিয়ে ব্যাঙ্কশাল আদালতে আবেদন করে পুলিশ। বিচারক সোমবার রাকেশকে ওই আদালতে হাজির করাতে বলেন। সেই মতো এ দিন আদালতে তোলা হয় রাকেশকে।
সরকারি কৌঁসুলি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং স্নেহাংশু ঘোষ আদালতে দাবি করেন, ওই মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় রাকেশ জড়িত ছিলেন। তাঁর প্ররোচনাতেই বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় মোটরবাইকে। অভিযুক্তের আইনজীবী ফজলে আহমেদ দাবি করেন, আদালত গত ৬ জুন রাকেশকে মূর্তি ভাঙচুরের মামলায় কোর্টে হাজির করানোর নির্দেশ দিলেও লালবাজার তা করেনি। পরে বিচারক রাকেশ সিংহকে আট দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
গত ১৪ মে কলকাতায় ভোটগ্রহণ পর্বের আগে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের রোড শো-কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজ স্ট্রিট ও বিধান সরণি এলাকা। অভিযোগ, ওই পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে গিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় এক ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মামলা দায়ের করে প্রথমে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করে। পরে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয় আরও এক অভিযুক্তকে। রাকেশকে ধরলে এই মামলায় এ নিয়ে মোট ৩৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন বাকিদেরও আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তাঁদের ২১ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনার তদন্তে লালবাজার আগেই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করেছিল। পরে রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওই কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, অতিরিক্ত কমিশনার জাভেদ শামিম ও বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুন্ডু।
লালবাজারের তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রাকেশ সিংহ ওই দিন দলবল নিয়ে ওই পদযাত্রায় অংশ নেন। তাঁর প্ররোচনাতেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তবে লালবাজার এখনও জানতে পারেনি, ওই দিন কারা মূর্তিটি ভেঙেছিল। তবে পুলিশের একটি অংশের দাবি, তারা এমন একটি ভিডিয়ো ফুটেজ পেয়েছে, যাতে ভাঙচুর করতে দেখা যাচ্ছে। সেই ছবি দেখেই অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, রাকেশ সিংহ ছাড়া বাকি ধৃতেরা প্রত্যেকেই ওই পদযাত্রায় ছিলেন বলে কবুল করেছেন। তবে কারা ওই মূর্তি ভাঙল বা সেটি (মোবাইলে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে) তুলে আছাড় মারল, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ধৃতেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy