অর্চনা: দেব দীপাবলি উপলক্ষে বাজেকদমতা ঘাটে চলছে গঙ্গারতি। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
প্রচার ছিল আগে থেকেই। বারাণসীর অনুকরণে এই প্রথম কলকাতায় গঙ্গাবক্ষে দেব দীপাবলি পালন ঘিরে সাধারণ মানুষের উৎসাহ ও কৌতূহলও ছিল পুরো মাত্রায়। যার ফলে রবিবার সন্ধ্যায় বাবুঘাটে প্রবল ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হল কলকাতা পুলিশকে।
কার্তিক পূর্ণিমার উৎসব উপলক্ষে এ বছর বাবুঘাটের বাজেকদমতলা ঘাটে দেব দীপাবলি উৎসবকে ঘিরে ছিল সাজো সাজো রব। এ দিন বিকেল থেকেই উৎসাহীরা ভিড় জমাতে শুরু থাকেন। সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান শুরু হতে ভিড়ের চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে, বাজেকদমতলা ঘাটে প্রবেশপথ ব্যারিকেড করে বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ভিতরে ঢুকতে না পেরে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভিড় যে মাত্রাতিরিক্ত হয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়ে অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা পুরসভার মেয়র পারিষদ তারক সিংহ বলেন, ‘‘অনেকেরই বারাণসী যাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই এ দিন ভিড় স্বভাবতই বেশি হয়েছিল। সব মানুষ যাতে দেব দীপাবলি দেখতে পারেন, তার জন্য বাইরে তিনটে বড় স্ক্রিন টাঙানো হয়েছিল।’’ যদিও এ দিন সেখানে উপস্থিত অনেকেরই ক্ষোভ, ‘‘স্ক্রিনে দেখার চেয়ে ঘরে বসে টিভিতে দেখা ভাল ছিল!’’
বেহালা থেকে সপরিবার রমাকান্ত সাহা এ দিন সন্ধ্যায় দেব দীপাবলির অনুষ্ঠান দেখতে হাজির হয়েছিলেন বাবুঘাটে। তবে চক্ররেলের এক পাশে পর্দায় ছবি দেখে কিছুতেই মন ভরল না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুরসভা আগে থেকে ঘটা করে প্রচার করেছে, অথচ অনুষ্ঠানে আসা অতিথিদের ভিড় সামলাতে ব্যর্থ।’’ এ দিন দেব দীপাবলিকে ঘিরে প্রায় দু’হাজার আসনের ব্যবস্থা ছিল। তবে মেয়র পারিষদ তারক বলেন, ‘‘এ দিন প্রায় ছ’হাজার মানুষ হাজির ছিলেন। এই প্রথম আমরা দেব দীপাবলি পালন করছি। আগামী বছর দূরদূরান্তের মানুষ যাতে স্বচ্ছন্দ ভাবে দেব দীপাবলি দেখতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে।’’
এ দিন দেব দীপাবলিকে ঘিরে গঙ্গার পাড়ে সুদৃশ্য নৌকা ও আশপাশে প্রদীপ জ্বালানোর ছবি ছিল দেখার মতো। রংবাহারি আতশবাজিও ফাটানো হয়। যদিও সেই বাজির শব্দমাত্রা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। এ প্রসঙ্গে তারক বলেন, ‘‘আতশবাজির শব্দমাত্রা নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমরা অভিজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে পরীক্ষা করে এনেছি। সোম ও মঙ্গলবার দু’দিনে তিন লক্ষ টাকার আতসবাজি ফাটানো হবে।’’ এ দিন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করতে এসে সাংসদ সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বারাণসীর সাংসদ নরেন্দ্র মোদী হওয়ায় ওখানকার ঘাট তিন হাজার কোটি টাকায় সংস্কার করা হয়েছে। অথচ কলকাতার একাধিক
গঙ্গার ঘাট সংস্কার করতে অর্থের দাবি করা হলে কেন্দ্র আমাদের বঞ্চিত করছে। কেন্দ্রের বঞ্চনার জন্য কলকাতার গঙ্গার ঘাটগুলি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’’ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের দাবি, ‘‘বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, আমরা নাকি হিন্দু ভোট টানতে দেব দীপাবলি উৎসব পালন করলাম। এসব মিথ্যা কথা। আমাদের রাজ্যে সব রাজ্যের মানুষ বসবাস করেন। সব রাজ্যের সংস্কৃতিকে যাতে আমাদের রাজ্যে ফুটিয়ে তোলা যায়, মুখ্যমন্ত্রী সেই চেষ্টাই করে চলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy