E-Paper

বন্ধ দুই সরোবর, তবে পুলিশের সামনেই ছটে তাণ্ডব শব্দবাজির

যদিও ‘ঢিলেঢালা’ এই পুলিশি ব্যবস্থার উল্টো ছবির দেখা মিলল সুভাষ সরোবর এবং রবীন্দ্র সরোবরে। দুই সরোবরের দ্বার আটকে দুপুর থেকেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পুলিশকে।

(বাঁ দিকে)রবীন্দ্র সরোবরে পুলিশের পাহারা, শব্দবাজি ফাটাচ্ছে কিশোরেরা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে)রবীন্দ্র সরোবরে পুলিশের পাহারা, শব্দবাজি ফাটাচ্ছে কিশোরেরা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র।

চন্দন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫০
Share
Save

নোনাডাঙার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন ঝিলপাড়ে ছটের ভিড়ের মধ্যে কমবয়সিদের জটলা। চার দিকে বক্স, তাসার বিকট আওয়াজের মধ্যে তাদেরই এক-এক জন পকেট থেকে চকলেট বোমা বার করে আগুন জ্বালিয়ে ছুড়ে দিচ্ছে উপরে। কান ফাটানো আওয়াজে কেঁপে উঠছে চার দিক! কিছু ক্ষণ এ ভাবে চলার পরে কমবয়সিদের মধ্যে থেকেই এক জন বলে উঠল, ‘‘সবাই সরে যা। এটা ‘ব্ল্যাক-ক্যাট’। চকলেটের বাবা!’’ কথা শেষ হওয়ার আগেই বাজির সলতেতে আগুন লাগাল কিশোর। তীব্র আওয়াজে চার দিক কেঁপে উঠলেও পুকুরপাড় থেকে মাত্র ২০-২৫ মিটার দূরে রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর, নড়াচড়াও করতে দেখা গেল না।

যদিও ‘ঢিলেঢালা’ এই পুলিশি ব্যবস্থার উল্টো ছবির দেখা মিলল সুভাষ সরোবর এবং রবীন্দ্র সরোবরে। দুই সরোবরের দ্বার আটকে দুপুর থেকেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল পুলিশকে। ছটকে কেন্দ্র করে সরোবরে নামা তো দূর, ছটের কোনও গাড়িকেও ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি। দুপুরের দিকে কমবয়সিদের অনেকে রবীন্দ্র সরোবরে ঢুকতে চাইলে ধমক দিয়ে তাদের ফেরত
পাঠানো হয়। বার বার গাড়ি করে ঘুরে গিয়েছেন পুলিশকর্তারাও। পুলিশের পাশাপাশি পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরাও ছিলেন রবীন্দ্র সরোবর পাহারায়। সরোবর রক্ষায় পুলিশকে সক্রিয় হতে দেখা গেলেও তার ছিটেফোঁটা সক্রিয়তাও চোখে পড়ল না শহরের বাকি অংশে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশ
আন্দোলনের কর্মীদের পাশাপাশি শহরের সচেতন নাগরিকদের বড় অংশ। তাঁদের প্রশ্ন, সরোবর রক্ষায় পুলিশ তৎপর হলেও শহরের বাকি অংশে কেন তা চোখে পড়ে না? সর্বত্র পুলিশ কড়া না হলে আদৌ কি পরিবেশ রক্ষা সম্ভব?

এর উত্তর না মিললেও পুলিশের ঢিলেঢালা মনোভাবের ফলে উৎসবের নামে কতটা বেলাগাম হতে পারে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য— সেই ছবি দেখা গেল এ দিন শহর ঘুরে। ছটে কোথাও দেদার শব্দবাজি, কোথাও ডিজে বক্সের শব্দ-তাণ্ডব দেখা গিয়েছে। চলন্ত গাড়ির মাথায় বিপজ্জনক ভাবে বসে নিজস্বী তুলতেও দেখা গিয়েছে কাউকে কাউকে। এ দিন বিকেলে রাসবিহারী কানেক্টরে গিয়ে দেখা গেল, গাড়িতে বিশাল বিশাল বক্স সাজিয়ে রুবির দিকে চলেছে শোভাযাত্রা। তার পিছনে তাসার দল।
সমানে নেচে চলেছেন শোভাযাত্রায় হাঁটা ছেলে-মেয়েরা। পিছনে গাড়ির লম্বা লাইন। শোভাযাত্রা থেকে মাঝেমধ্যে ফাটছে বাজি। যানজট সরাতে পুলিশ সক্রিয় হলেও বাজি ফাটানো বন্ধে কোনও তৎপরতা সে ভাবে চোখে পড়েনি। যা নিয়ে প্রশ্ন করতে ওই পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘সবাই তো বাচ্চা! এদের কী বলব? উৎসবে একটু আনন্দ তো করবেই। সব জায়গায় কি আইন দেখানো যায়?’’ একই ছবি সুভাষ সরোবর সংলগ্ন কাদাপাড়া রোডেও। রাস্তার ধারে ছটের জন্য তৈরি অস্থায়ী পুকুরেও দেখা গেল দেদার নিয়মভঙ্গের ছবি। ধর্মতলা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ চত্বরেও ছিল শব্দ-তাণ্ডব। গঙ্গা-ফেরত ছট-পুণ্যার্থীদের গাড়ি থেকেও ফাটানো হয়েছে দেদার বাজি।

যদিও গোটা শহর জুড়ে পুলিশ সক্রিয় ছিল বলেই দাবি করেছে লালবাজার। তাদের দাবি, বিধিভঙ্গ করা আটকাতে এ দিন দুপুর থেকেই রাস্তায় নামানো হয়েছিল অতিরিক্ত বাহিনী। নিয়ম ভঙ্গে তারা কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘বাজির দৌরাত্ম্য আটকাতে লাগাতার ব্যবস্থা চলছে। ছটও ব্যতিক্রম নয়। নিয়ম ভঙ্গে আইনানুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chhath Puja 2024 Rabindra Sarovar

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।