—ফাইল চিত্র
টিকিয়াপাড়া ও দাশনগরের মাঝে টাকা-মোবাইল ছিনতাই করে এক মহিলাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় অভিযোগকারিণীর বয়ান সংগ্রহ করল রেলপুলিশ। সেই বয়ান ও তাঁর শরীরের আঘাতের উপর ভিত্তি করে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
তবে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দা, বছর আঠাশের ওই তরুণীর কথায় অসঙ্গতি রয়েছে বলেও দাবি তদন্তকারীদের। রবিবার রাতে তরুণী যেটুকু কথা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, তার সঙ্গে এফআইআরে উল্লেখ করা কিছু কথার সঙ্গতি না থাকায় ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে রেলপুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তদন্তকারীরা হাওড়া জেলা হাসপাতালে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে এফআইআর দায়ের করেছেন। খড়্গপুরের রেলপুলিশ সুপার অবধেশ পাঠক বলেন, ‘‘অভিযোগকারিণীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি যে অভিযোগগুলি করেছেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওঁর পরিবারের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করা যায়নি।’’
রেলপুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার তরুণী দাবি করেছিলেন, কলকাতার একটি পোশাকের কারখানায় কাজ করেন তিনি। দোলের ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়েই চলন্ত ট্রেনে তাঁকে যৌন নিগ্রহ করে টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে ঠেলে ফেলে দেয় এক যুবক। কিন্তু তরুণীর মঙ্গলবারের বয়ানের সঙ্গে আগের অনেক কথাই মিলছে না। তদন্তকারীদের দাবি, এফআইআরে যৌন নিগ্রহের কথা জানাননি ওই তরুণী।
পরে তরুণী দাবি করেছেন, তিনি লোকাল ট্রেনে ভিক্ষা করেন। গত রবিবার হাওড়ামুখী ট্রেনে ভিক্ষা করে ঘুমিয়ে পড়ায় রামরাজাতলা স্টেশনে নামতে পারেননি তিনি। হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে ঘুম ভাঙে। এর পরে ফের আপ মেচেদা লোকালে উঠে রামরাজাতলায় ফিরছিলেন বলেই দাবি করেছেন তরুণী। তাঁর অভিযোগ, ফাঁকা মহিলা কামরায় ওঠা হলুদ শার্ট ও নীল জিন্স পরা বছর পঁয়ত্রিশের অপরিচিত এক যুবক তরুণীর মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তার পরে টিকিয়াপাড়া ও দাশনগরের মাঝে চলন্ত ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দেয় তাঁকে। ব্যাগে আট হাজার টাকা ছিল।
রেল সূত্রের খবর, হাওড়া স্টেশনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই তরুণী ট্রেন থেকে নেমে বেশ কিছু ক্ষণ হলুদ শার্ট ও নীল জিন্স পরা এক যুবকের সঙ্গে গল্প করছেন। ট্রেন ছাড়ার সময় হলে মহিলা-কামরায় উঠে যান তরুণী। তখনও দরজার কাছে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন ওই যুবক। ট্রেন ছাড়তেই তাতে উঠে পড়েন তিনিও। তরুণীর বর্ণিত যুবক ও সিসি ক্যামেরায় দেখা যাওয়া যুবক একই কি না, তা জানা যায়নি বলেই দাবি তদন্তকারীদের।
রেলপুলিশ সূত্রের খবর, তরুণী জানিয়েছেন তিনি বাড়ি থেকে ছ’হাজার টাকা নিয়ে বেরিয়েছিলেন। বাকি দু’হাজার টাকা কোথা থেকে এল, সে বিষয়েও তরুণী স্পষ্ট কিছু জানাননি বলে তদন্তকারীদের দাবি। তরুণী এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ রয়েছে। কয়েক দিন আগে ২০ হাজার টাকা দিয়ে স্বামীকে বাইকও কিনে দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তাঁর পরিবার কোথায় রয়েছে তা নিয়েও তরুণী কিছু জানাননি বলে দাবি পুলিশের।
ফুটেজে যে যুবককে দেখা গিয়েছে, তা ওই তরুণীকে দিয়ে শনাক্ত করানো হবে বলেও রেলপুলিশ জানিয়েছে। হাওড়া জেলা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসা বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তরুণী। সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। তার পরেই পায়ের অস্ত্রোপচার হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy