প্রতীকী ছবি।
হিমশীতল লাশকাটা ঘরে ‘শুয়ে’ আছেন তিনি। বছর তিরিশের যুবতীর নাম-ধাম কিছুই নিশ্চিত জানেন না তদন্তকারীরা। তাঁদের কাছে তাঁর পরিচয় ‘রূপা’। কারণ, গত ৪ ডিসেম্বর বাগবাজারে গঙ্গার ঘাটে ভেসে আসা ওই যুবতীর এক হাতে ‘রূপা’ শব্দটি লেখা, অন্য হাতে আঁকা রয়েছে ত্রিশূল। পরনে হলুদ-সবুজ রঙের শাড়ি।
পুলিশ সূত্রের খবর, নানা ভাবে চেষ্টা করেও ওই যুবতীর নাম, ঠিকানা জানা যায়নি। তা-ও পুলিশ মর্গে দেহটি সংরক্ষণ করে তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ময়না-তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্টও শীঘ্রই মিলবে বলে তদন্তকারীদের আশা। লালবাজারের খবর, অন্য বেওয়ারিশ দেহের ক্ষেত্রে মূলত দাঁত এবং ডিএনএ পরীক্ষার উপযোগী নমুনা রেখে দেহের অন্ত্যেষ্টি করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তদন্তকারীরা মোটামুটি নিশ্চিত, ওই মহিলাকে খুনই করা হয়েছে। কারণ, দেহটি যে ভাবে বস্তায় পুরে জলে ফেলা হয়েছিল তা স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে হয় না। দ্বিতীয়ত, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও খুনের ইঙ্গিত রয়েছে।
কী রকম? তদন্তকারীরা জানান, আপাতদৃষ্টিতে মহিলার দেহে আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছেন, মহিলাকে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।
পুলিশ জানায়, ৪ ডিসেম্বর গঙ্গায় একটি মোটা বস্তা ভাসতে দেখে বাগবাজার ঘাটের স্থানীয় লোকজন উত্তর বন্দর থানায় খবর দেন। বস্তাটি তুলে সেটির মুখ খুলতেই ভিতরে মহিলার দেহ মেলে। তাঁর হাতে উল্কি করে দেবনাগরী হরফে ‘রূপা’ লেখা ছিল। তদন্তকারীদের মতে, অনেকেই হাতে নিজের নাম উল্কি করেন। সেই যুক্তি থেকেই প্রাথমিক ভাবে মহিলার নাম ‘রূপা’ বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ওই নামে এখনও পর্যন্ত ৪০ জনেরও বেশি নিখোঁজ রয়েছেন। একাধিক পরিবার দেহটি দেখলেও কেউই মহিলাকে শনাক্ত করতে পারেননি।
লালবাজার জানায়, ওই যুবতীকে শনাক্ত করার জন্য ইতিমধ্যেই গঙ্গা তীরবর্তী বিভিন্ন কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশকে তিন বার চিঠি পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরাও বিভিন্ন থানায় নিখোঁজের তালিকা পরীক্ষা করে দেখেছেন ওই মহিলাদের সঙ্গে বাগবাজার ঘাট থেকে উদ্ধার হওয়া ‘রূপা’-র মিল রয়েছে কি না। লালবাজারের এক কর্তা জানান, যুবতীর দেহ শনাক্ত করার জন্য ফের রাজ্যের থানাগুলিকে চিঠি পাঠানো হবে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী রাজ্যের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে ‘ন্যাশনাল মিসিং পার্সনস পোর্টাল’ও। তবে এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘অনির্দিষ্ট সময় তো দেহ সংরক্ষণ করা যাবে না। তাই দ্রুত রহস্য সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy