বোমা পড়ার পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ। রবিবার খন্না হাইস্কুলের সামনে। ছবি স্বাতী চক্রবর্তী
কলকাতা পুরসভার নির্বাচন যাতে গোলমালহীন, অবাধ এবং নিরপেক্ষ হয়, সেই ব্যাপারে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রকে ব্যক্তিগত ভাবে দায়বদ্ধ থাকতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তার পরেও রবিবার ভোটে যে-হারে গোলমাল ও ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাতে আদালতের দেওয়া সেই দায়িত্ব পালনে পুলিশের সফলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শুধু আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি নয়, কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে এ দিন কার্যত রাজ্যের শাসক দলের প্রতি পক্ষপাতেরও অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির। হাই কোর্টের নির্দেশ, বৃহস্পতিবার পুরভোটের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রধান বিচারপতির এজলাসে রিপোর্ট দিতে হবে সিপি-কে।
কলকাতায় এ দিনের পুরভোটে লালবাজারের ভূমিকার ‘সমালোচনা’ করতে গিয়ে অনেকেই ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ টেনেছেন। সে-বার নির্বাচন কমিশন কলকাতার ভোটের প্রাক্কালে সৌমেন মিত্রকে পুলিশ কমিশনারের পদে নিযুক্ত করেছিল। ‘নিরপেক্ষ’ ও ‘অবাধ’ ভোট করিয়ে আমজনতা এবং বিরোধীদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। তবে ভোটের পরেই তাঁকে বদলি হতে হয়। ঘটনাচক্রে, সেই সৌমেনবাবুই বর্তমানে কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং চলতি মাসের শেষেই তাঁর অবসর নেওয়ার কথা।
এ দিন বন্দর এলাকায় সিপিএম প্রার্থীর উপরে হামলা চালানো হয় এবং বেলেঘাটায় বিরোধী প্রার্থীরা হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। মধ্য কলকাতায় ভোটকেন্দ্রের ভিতরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দফায় দফায় গোলমাল হয়েছে ব্রেবোর্ন রোড, পোলক স্ট্রিট এলাকায়। দক্ষিণ শহরতলির অনেক জায়গায় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন বলেও অভিযোগ। টাকি বয়েজ স্কুলের সামনে বেলেঘাটার বিধায়ককে দলবল নিয়ে জমায়েত করতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, এই সবই ঘটেছে পুলিশের চোখের সামনে। বিরোধী শিবিরের বড় অংশের অভিযোগ, প্রতিটি ক্ষেত্রেই ‘ঠুটো জগন্নাথ’-এর ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে।
অভিযোগ উঠেছে, বহু ভোটকেন্দ্রে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের অবাধ যাতায়াত চললেও পুলিশকে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। শ্যামপুকুরে বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন পুলিশকর্মীরা। শহর ঘুরে দেখা গিয়েছে, কোথাও সিসি ক্যামেরার মুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে বা কাগজ সেঁটে দেওয়া হয়েছে ক্যামেরার লেন্সে। সব মিলিয়ে জনমানসে প্রশ্ন উঠছে, পুরভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করানোর যে-আশ্বাস পুলিশ দিয়েছিল, লালবাজার কি আদৌ তা পূরণ করতে পেরেছে?
লালবাজারের কর্তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাহিনীর ব্যর্থতা বা পক্ষপাতের অভিযোগ মানতে নারাজ। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বলেন, ‘‘মোটের উপরে শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। যেখানেই অভিযোগ এসেছে, পুলিশ গিয়েছে। যেখানে প্রয়োজন, সেখানে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৯৫ জনকে।’’ এ দিন বেলেঘাটায় খন্না হাইস্কুলের সামনে বোমাবাজির ঘটনায় রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। টাকি বয়েজ স্কুলের সামনে বোমাবাজির অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করা হলেও তাঁর নাম বা পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি যুগ্ম কমিশনার (সদর)। এই ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, ‘‘নাম বলা যাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy