উঠোনের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় ৫০ লাখ টাকার সোনা ও হিরের গয়না। নিজস্ব চিত্র।
মাটি খুঁড়ে উদ্ধার হল চোরাই সোনা ও হিরের গয়না। চোরাই লাখ টাকা পাওয়া গেল খড়ের চাল থেকে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি শিবাঙ্গী আগরওয়াল নামে হিন্দুস্থান পার্কের এক বাসিন্দা গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর তিনতলার ঘরে রাখা বেশ কিছু সোনা ও হিরের গয়না সঙ্গে নগদ প্রায় ১ লাখ টাকা খোয়া গিয়েছে। ওই দিন সকালেও তিনি গয়না-টাকা যথাস্থানে দেখেছিলেন। কিন্তু বিকেলে বাড়ি ফিরে আর সে সবের সন্ধান পাননি।
পুলিশ প্রাথমিক তদম্তের পর দেখে, গয়না যে আলমারিতে ছিল তার তালা ভাঙা হয়নি। ঘরের সমস্ত তালাও অটুট। সেখান থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহ হয় যে, বাড়ির ভিতরের কোনও লোকই এই চুরির সঙ্গে যুক্ত। পুলিশ ওই পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে পরিচারকদের সঙ্গেও কথা বলে।
আরও পড়ুন: ট্যাংরার ঘটনায় ‘নট ভেরিফায়েড’ লিখে বিতর্কে পুলিশ
জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশের সন্দেহ গিয়ে পড়ে ওই বাড়ির পরিচারিকা অঞ্জলি দাসের উপরে। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘দু’টি কারণে আমাদের সন্দেহ হয়। প্রথমত ওই মহিলা প্রথম থেকে দাবি করছিলেন যে, তিনি আগেই কাজ ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন। মালিক ছাড়েননি। সেই সঙ্গে জানা যায়, চুরির ঘটনার কয়েক দিন আগেই ওই মহিলা মুর্শিদাবাদে তাঁর দেশের বাড়িতে গিয়েছিলেন।”
গড়িয়াহাট থানার তদন্তকারীরা অঞ্জলির বিষয়ে সবিস্তার খবর নিতে গিয়ে জানতে পারেন, চুরির দিন দুপুরে দুই ব্যক্তি ওই বাড়িতে এসেছিলেন। তাঁদের দু’জনেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। সেই সূত্র কাজে লাগিয়ে অঞ্জলিকে ফের জেরা করতেই তিনি জানান, ওই দিন দুপুরে তাঁর মামা এসেছিলেন দেখা করতে। দ্বিতীয় ব্যক্তি সম্ভবত তাঁর মামার সঙ্গেই এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানান অঞ্জলি।
আরও পড়ুন: প্রতিবাদের সুরেই শেষ হল বইমেলা
এর পর অঞ্জলির কাছ থেকে জোগাড় করে তাঁর মামার মুর্শিদাবাদের ঠিকানায় হানা দেয় পুলিশ। রবিবার রাতে মুর্শিদাবাদের লালগোলার পিরতলা গ্রামে হানা দিয়ে লাল্টু শেখ নামে এক ব্যাক্তিকে আটক করে পুলিশ। জেরায় জানা যায়, লাল্টু অঞ্জলির প্রথম স্বামীর ছেলে। পুলিশের কাছে লাল্টু স্বীকার করেন যে, শেখ ইমরানকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ওই দিন কলকাতার হিন্দুস্থান পার্কের বাড়িতে অঞ্জলির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। শেখ ইমরান অঞ্জলির বর্তমান স্বামী। লাল্টুর কাছ থেকে ইমরানের হদিশ জানার পর তাঁকেও আটক করা হয়। দু’জনকে জেরা করে লাল্টুর পিরতলার বাড়ির উঠোনের মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয় ৫০ লাখ টাকার সোনা ও হিরের গয়না। ওই বাড়িতেই গোয়ালঘরের খড়ের চালে লুকনো ছিল চুরির এক লাখ টাকা। সেই টাকাও উদ্ধার করে পুলিশ।
গড়িয়াহাট থানার পুলিশ অঞ্জলি, ইমরান এবং লাল্টুকে গ্রেফতার করেছে। তবে পুলিশের অভিযোগ, এ ক্ষেত্রেও বাড়ির মালিকের কাছে পরিচারিকার সঠিক ঠিকানা ছিল না। কোনও নথিও জমা দেননি তিনি থানায়। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘সন্দেহ এড়াতে অঞ্জলি সৎ ছেলে এবং স্বামীকে দিয়ে চোরাই মাল পাচার করে দিয়েছিল। আমরা অঞ্জলিকে হাতেনাতে পেয়েছিলাম বলে আসল ঠিকানাটা জানতে পেরেছি। তা না হলে এদের ঠিকানা পেতেই ঘাম ছুটে যেত পুলিশের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy