E-Paper

আড়ালে থাকার অভ্যাস ভেঙে ফোন করাই জেলযাত্রা সুগম করল সুবোধের

নিজেকে আড়ালে রাখতে যেখানে কখনও কোনও দুষ্কৃতীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করত না সুবোধ, সেখানে গত ১৫ জুন ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়িতে গুলি চালানোর পরে কেন নিজেই ফোন করল সে?

সুবোধ সিংহ।

সুবোধ সিংহ। —ফাইল চিত্র।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৪ ০৭:৪৭
Share
Save

যে কোনও অপরাধমূলক ঘটনায় তার যোগসূত্র বার করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হত পুলিশকে। কারণ, ‘অপারেশন’ বাস্তবায়িত করা দুষ্কৃতীরা জানতেই পারত না যে, পুরো ঘটনার মাথায় রয়েছে বিহারের কুখ্যাত দুষ্কৃতী সুবোধ সিংহ। কিন্তু, বেলঘরিয়ায় ব্যবসায়ীর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনায় সহজেই মিলেছিল ওই গ্যাংস্টারের যোগসূত্র। যার নেপথ্যে ছিল, ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই ব্যবসায়ীকে খোদ সুবোধের করা ফোন। এবং পরবর্তী সময়েও তার নাম করেই অন্য দুষ্কৃতীরা ফোন করেছিল।

নিজেকে আড়ালে রাখতে যেখানে কখনও কোনও দুষ্কৃতীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করত না সুবোধ, সেখানে গত ১৫ জুন ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের গাড়িতে গুলি চালানোর পরে কেন নিজেই ফোন করল সে? তদন্তকারীদের মতে, অজয়কে প্রাণে মেরে ফেলা লক্ষ্য ছিল না সুবোধের। বরং তাঁর উপরে হামলা চালানোর মধ্যে দিয়ে ব্যারাকপুরের ব্যবসায়ীদের মনে আতঙ্ক তৈরি করাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। যাতে সমস্ত ব্যবসায়ীকে এক ছাতার তলায় এনে তৈরি ‘সিন্ডিকেট’ থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের ‘তোলা’ আদায় করা যায়। যার একটি বড় অংশ হাতে পাওয়াই ছিল সুবোধের আসল লক্ষ্য। সেই কারণে ওই গ্যাংস্টার নিজেই
অজয়কে ফোন করে আশ্বস্ত করতে চেয়েছিল। মারার জন্য গুলি চালানো হয়নি। তাই ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বরং তার লোক গিয়ে কথা বলে আসবে। কোনও সমস্যা হলে সেটা তার মতো দুষ্কৃতী বুঝে নেবে বলেও বার্তা দিতে চেয়েছিল সুবোধ।

পুরনো তদন্তকারীদের মতে, সামাজিক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই মুম্বইয়ের মতো ব্যারাকপুরেও ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট তৈরি করে সেখান থেকে তোলা আদায় করতে চেয়েছিল ওই গ্যাংস্টার। পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়, বিহার, মহারাষ্ট্র— এই পাঁচ রাজ্য জুড়ে মূলত ‘অপারেশন’ চালাত সুবোধ। সেখানে আচমকা ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলকে কেন বেছে নিল ওই গ্যাংস্টার? পুলিশ সূত্রের খবর, ব্যারাকপুর সুবোধের পুরনো চেনা জায়গা। এই শিল্পাঞ্চলে তার কয়েক জন ‘লিঙ্কম্যান’ রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে যাবতীয় খবর দীর্ঘ দিন ধরে জোগাড় করার পরে সেখানে সিন্ডিকেট তৈরির ছক কষেছিল সুবোধ। সেই কাজে সাফল্য পেতে মরিয়া হয়ে উঠে সে নিজেই ফোন করেছিল অজয়কে।

সূত্রের খবর, দেশের অন্যতম সোনা-ডাকাত সুবোধ ক্রমশ নিজের অপরাধের সাম্রাজ্য গুটিয়ে আনতে চাইছিল। বদলে বিপুল আর্থিক তহবিল তৈরি করে রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে শুরু করেছিল ঘনিষ্ঠ মহলে। সেই পদক্ষেপের আগে পুরনো শাগরেদদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও ছিল। জানা যাচ্ছে, সুবোধের পুরনো সঙ্গীদের অনেকে এখন নিজের মতো করে দল তৈরি করে নিয়েছে। যেমন, মণীশ শুক্লকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত অনীশ ঠাকুরকে জোগাড় করে দিয়েছিল ফুল্লু সিংহ। এখন ফুল্লুও নিজের মতো করে দল তৈরি করেছে। অনীশ ও ফুল্লু, দু’জনেই
এখন জেলে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Subodh Singh Miscreant police investigation

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।