Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kali Puja 2021

Kali Puja 2021: বাজি রুখতে ফেল পুলিশ, আদালতে দায় নেবে কে

দেদার বাজি ফাটার অভিযোগ আসা শুরু হয়ে গেলেও নজরদারিতে থাকা পর্ষদের কোনও কর্মীকেই পথে দেখা যায়নি।

নিষিদ্ধ: সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয়েছিল শব্দবাজির তাণ্ডব। পাল্লা দিয়েছিল অন্য আতশবাজিও। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ শহরতলিতে।

নিষিদ্ধ: সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয়েছিল শব্দবাজির তাণ্ডব। পাল্লা দিয়েছিল অন্য আতশবাজিও। বৃহস্পতিবার, দক্ষিণ শহরতলিতে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১১
Share: Save:

বাজির পরীক্ষায় সেই ফেলই করল পুলিশ! আশঙ্কা সত্যি করে কালীপুজোর রাত যত গড়াল, ততই বাড়ল বাজির দাপট। যার বড় অংশই কিন্তু পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি নয়! এই পরিস্থিতিতে গত বছরের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা মনে করিয়ে বহুতলের ছাদ বা গলিঘুঁজির নাগালই পেল না রাস্তায় আটকে থেকে নাস্তানাবুদ হওয়া পুলিশ। এক সময়ে পরিস্থিতি এমন হল যে, বাজি সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে চালু হওয়া পুলিশের হেল্পলাইন নম্বরে বার বার ফোন করেও সাড়া পেলেন না অনেকে। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘এর পরে এই শব্দ-যন্ত্রণার দায় নেবে কে? আদালতেই বা কী ভাবে ব্যাখ্যা করা হবে এই পরিস্থিতির?’’

কালীপুজোর আগের দিনই অবশ্য শব্দ-জব্দে বড়সড় হোঁচট খেয়েছিল কলকাতা পুলিশ। কসবা, আনন্দপুর, যাদবপুর, বেলেঘাটা, মানিকতলা, কাশীপুরের মতো বেশ কিছু এলাকা থেকে দেদার বাজি ফাটার অভিযোগ আসা শুরু হয়ে যায় সন্ধ্যা থেকে। এমন কিছু ঘটলে কী করা হবে, তা নিয়ে পুলিশের তেমন কোনও পরিকল্পনাও ছিল না বলে অভিযোগ। নানা মহলের সমালোচনার মুখে পড়ে রাতের দিকে জায়গায় জায়গায় ‘ব্লক-রেড’ শুরু করে পুলিশ। তাতে ১৮৫৬ কিলোগ্রাম বাজি এবং ৪০৮ লিটার মদ উদ্ধার করার পাশাপাশি প্রায় ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হলেও প্রশ্ন ছিল, এই দিয়ে পুজোর রাতের পরীক্ষায় উতরে যাওয়া যাবে তো?

দেখা গেল, সেই আশঙ্কা সত্যি করে আদালতের ঠিক করে দেওয়া দু’ঘণ্টার (রাত ৮টা থেকে ১০টা) বদলে বিকেল থেকেই বাজি ফাটানো শুরু হয়ে গিয়েছে শহরের নানা জায়গায়। বাজির জন্য কুখ্যাত এলাকাগুলির মধ্যে কসবা, তপসিয়া ও বেলেঘাটায় সব থেকে বেশি নিষিদ্ধ বাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ। পাল্লা দিয়েছে হরিদেবপুর, ঠাকুরপুকুর, পর্ণশ্রী, তারাতলা ও কনভেন্ট রোডের মতো কিছু এলাকাও। বেহালা ও মানিকতলার মতো কিছু থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বেই শোনা গিয়েছে শব্দবাজির তাণ্ডব। বাজি ফাটার উপরে পুলিশের তেমন নিয়ন্ত্রণই ছিল না জোড়াবাগান, শোভাবাজার, বাগবাজার, গিরিশ পার্ক, উল্টোডাঙা বা শিয়ালদহের বেশ কিছু এলাকায়। তবে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ২১৯ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ৮৮ জনকে।

এক সময়ে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝে নিজস্ব দল নিয়ে এলাকায় ঘোরা শুরু করেন কর্তব্যরত ডিসি-রা। দক্ষিণ কলকাতায় নিজে অভিযানে নামেন রিজ়ার্ভ ফোর্সের ডিসি। ভাড়া নেওয়া অটোয় চড়ে চষে ফেলার চেষ্টা হয় গলিঘুঁজি। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। যা নিয়ে পুলিশের বড় অংশের বক্তব্য, কোন বাজি ফাটানো যাবে, আর কোনটি নয়, তা নিয়েই তো পুজোর আগের দিন পর্যন্ত কারও স্পষ্ট ধারণা ছিল না। এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘বুধবার রাতের পরে বৃহস্পতিবার সকালেও রাস্তায় বিক্রি হওয়া
বাজির মধ্যে কোনটা পরিবেশবান্ধব আর কোনটা নয়, তা বোঝা যায়নি। বুধবার রাতের দিকে সবুজ বাজি বিক্রির জন্য কিছু লাইসেন্স দেওয়া হলেও দক্ষিণ কলকাতার কোনও ব্যবসায়ী তা নিতে আসেননি। এর ফলে সবুজ বাজি না পেয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ যেমন খুশি বাজি কিনে ফাটিয়েছেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে, দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ভূমিকাই বা কী ছিল? দেদার বাজি ফাটার অভিযোগ আসা শুরু হয়ে গেলেও নজরদারিতে থাকা পর্ষদের কোনও কর্মীকেই পথে দেখা যায়নি। রাজ্যের ‘বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সম্পাদক শুভঙ্কর মান্নার যদিও দাবি, ‘‘আরও আগে সবুজ বাজি বিক্রির লাইসেন্স পাওয়া গেলে নিষিদ্ধ বাজির একটা বিকল্প নিয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনো যেত।’’ তবে এক বাজি ব্যবসায়ীর মন্তব্য, ‘‘ডামাডোলের এই পরিস্থিতিতে যা হওয়ার আশঙ্কা ছিল, তা-ই হয়েছে। সবুজ বাজির মোড়কে দেদার নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি না হলে এমন পরিস্থিতি হওয়ার কথা নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2021 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy