Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

বেতন-অসন্তোষের জেরেই কি খুন কারখানার মালিক

পুলিশ সূত্রের খবর, বন্ধ কারখানার তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা গিয়েছিল, ঘরের মেঝেতে চাপ চাপ রক্ত। আর এক কোণে মেঝেতে চিৎ হয়ে পড়ে আছেন মালিক সন্দীপ সাউ। গোটা মুখ, শরীর রক্তে ভর্তি। আরও দেখা যায়, তাঁর মাথায়-মুখে ভারী কিছু দিয়ে থেঁতলানো হয়েছে।

সন্দীপ সাউ

সন্দীপ সাউ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৯ ০০:২২
Share: Save:

ধারালো অস্ত্র নয়, ভারী কোনও বস্তু দিয়ে বারবার থেঁতলে খুন করা হয়েছিল বেলঘরিয়ার কারখানা মালিককে। মৃতদেহ ভাল ভাবে পরীক্ষা করার পরে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, সে বিষয়টি এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয় বলেই দাবি পুলিশের।

পুলিশ সূত্রের খবর, বন্ধ কারখানার তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখা গিয়েছিল, ঘরের মেঝেতে চাপ চাপ রক্ত। আর এক কোণে মেঝেতে চিৎ হয়ে পড়ে আছেন মালিক সন্দীপ সাউ। গোটা মুখ, শরীর রক্তে ভর্তি। আরও দেখা যায়, তাঁর মাথায়-মুখে ভারী কিছু দিয়ে থেঁতলানো হয়েছে। যদিও ওই ঘর থেকে রক্তমাখা তেমন কোনও বস্তু উদ্ধার হয়নি। ফলে সেটি লোহার কোনও জিনিস, না ইট সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। তবে কারখানার কর্মচারীদের সঙ্গে বেতন সংক্রান্ত বিষয়ে সন্দীপের ঝামেলা চলছিল বলে জানা গিয়েছে। ফলে এই খুনের ঘটনায় ওই কর্মীরা জড়িত না কি অন্য কেউ, সেটাই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, সম্প্রতি ব্যবসায় মন্দা চলায় একটি মেশিন বিক্রি করে দিয়েছিলেন সন্দীপ। পাশাপাশি, কয়েক মাস ধরে কর্মীদের বেতন দিতে না পারায় অসন্তোষও তৈরি হয়েছিল। এক ব্যবসায়ী মনোজ সাউ বলেন, ‘‘কারখানায় সব সময়ে কর্মচারীরা থাকতেন। কিন্তু শনিবার দুপুর থেকে ওঁদের কারও দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।’’ শিল্পতালুকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। কিন্তু একটি বাড়ির চারতলায় যেখানে সন্দীপের কারখানা, সেখানে কোনও ক্যামেরা নেই। এমনকি কারা সেখানে কাজ করতেন, তারও নির্দিষ্ট তথ্য পাননি তদন্তকারীরা।

শিল্পতালুকের অন্য কারখানার কর্মীরা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যে স্কুটি চালিয়ে আসতে দেখা যেত সন্দীপকে। কিন্তু বাইরের কাউকে কখনও তাঁর সঙ্গে ঝামেলা করতে দেখা যায়নি। রোজ যে সন্দীপ কারখানা খুলতেন, তেমনও নয়। কর্মীদের দাবি, ওই শিল্পতালুকের ভিতরে কখনওই তেমন গোলমালের ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর বিমল সাহা বলেন, ‘‘বিষয়টি অনভিপ্রেত। এক জন মানুষকে কে বা কারা এমন নৃশংস ভাবে খুন করে তালা বন্ধ করে চলে গেল, বোঝা যাচ্ছে না। এতে অন্যদের মধ্যেও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। পুলিশকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলেছি।’’

আদতে ওড়িশার বাসিন্দা সন্দীপ আগরপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। নীলগঞ্জ রোডের শিল্পতালুকে একটি চারতলা বাড়ির একেবারে উপরের তলায় ছিল তাঁর এমব্রয়ডারির কারখানা। সেখানে কাজ করতেন জনা পাঁচেক কর্মী। শনিবার দুপুরে যখন সন্দীপের ভাই অনিল বাড়িতে খেতে গিয়েছিলেন, সে সময়ে কারখানায় ওই কর্মচারীরা ছিলেন। এক ঘণ্টা পরে ফিরে অবশ্য কাউকেই দেখতে পাননি অনিল। বরং তিনি দেখেন, কারখানার দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ। গোটা এক দিন নিখোঁজ থাকার পরে রবিবার সন্ধ্যায় সন্দীপের স্ত্রী শুভস্মিতা সাউকে নিয়ে কারখানার তালা ভাঙতেই উদ্ধার হয় দেহটি।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Murder Belgharia Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy