ব্যবসায়ীর বাড়ির চুরির তদন্তে নেমে পরিচারক সেজে চুরির একটি চক্রের সন্ধান পেল নিউ আলিপুর থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই চক্রের ছ’জনকে। ধৃতেরা বিহারের বাঁকা জেলার বাসিন্দা। তার মধ্যে রয়েছে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে চুরি করা পরিচারকও। পুলিশ জানায়, ধৃতদের পরিবারের ২৯ জন শহরে বিভিন্ন এলাকায় পরিচারক হিসেবে কাজ করে। মূলত ‘টার্গেট’ বেছে নিয়ে তারা কাজে যোগ দিত। পরে সুবিধে মতো চুরি করে পালিয়ে যেত।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই পরিচারকের নাম পবন যাদব। ২০১৪ সালে বিধাননগর পুলিশও চুরির অভিযোগে তাকে পাকড়াও করেছিল। পরে সে জামিনে ছাড়া পায়। অক্টোবরে সে নিউ আলিপুরের এম ব্লকের ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঠিকা পরিচারকের কাজে যোগ দেয়। তাকে কাজে লাগিয়েছিল নীতীশ যাদব নামে তারই এক আত্মীয়। পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, ২১ অক্টোবর ওই ব্যবসায়ী থানায় অভিযোগ করেন তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার হিরে এবং সোনার গয়না চুরি হয়েছে।
তদন্তকারীরা জানান, বাঁকার বহু লোক শহরে পরিচারকের কাজ করে। সেই মতো ভবানীপুর, বালিগঞ্জ এলাকায় খোঁজ নিয়ে পবনের ছবি জোগাড় করা হয়। অভিযোগকারী ব্যবসায়ী পবনকে শনাক্ত করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছবির সূত্র ধরেই জানা যায় পবন ২০১৪ সালে বিধাননগর পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল। নিউ আলিপুর থানার পুলিশ পবনকে না পেলেও তার মায়ের ফোন ঘেঁটে কয়েকটি সন্দেহজনক নম্বর পায়। তদন্তকারীরা দেখেন কামেশ্বর যাদব নামে এক জনের সঙ্গে একাধিক বার ওই ফোন থেকে কথা হয়েছে। কামেশ্বরের স্ত্রী সুনীতার খোঁজও পায় পুলিশ। অবশ্য তাদের খোঁজে বিহারে তল্লাশি চালিয়েও কোনও লাভ হয়নি। ফের পবনের মায়ের ফোনের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে আসানসোলের কুলটিতে প্রেমবাহাদুর সিংহ নামে এক জনকে কেউ গয়না দিয়েছে বিক্রির জন্য। পুলিশ প্রেমের বাড়িতে হানা দিয়ে ৩৫ ভরির একটি সোনার হার মাটির তলা থেকে উদ্ধার করে। প্রেম এবং তার সঙ্গী যোগেশ দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, প্রেমের কাছ থেকেই কামেশ্বর এবং সুনীতার খোঁজ পেয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জানা যায় ওই দম্পতি পবনের দিদি এবং জামাইবাবু। প্রেমের সঙ্গেও পবনের আত্মীয়তা রয়েছে। প্রেমকে জেরা করে পুলিশ পবন এবং নীতীশের মধ্যে যোগাযোগের কথা জানতে পারে। তদন্তকারীরা জানান, দু’জনে দিল্লিতে ছিল। কিন্তু পুলিশ দিল্লি পৌঁছনোর আগেই তারা পঞ্জাবের পাটিয়ালায় পালিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে পবন এবং নীতীশ গ্রেফতার হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে তাদের কলকাতায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসানসোলের বিভিন্ন এলাকার ১১ জন গয়না বিক্রেতাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। যাঁদের কাছে চোরাই গয়না বিক্রি করতে গিয়েছিল চক্রের সদস্যেরা। তাঁদের সামনে ধৃতদের হাজির করাতেই সকলেই দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy