—প্রতীকী চিত্র।
ঘটনার পরে ২৪ ঘণ্টারও বেশি কেটে গিয়েছে। এখনও জানা যায়নি, মানিকতলায় লোহার পুরনো জ্বালানির ট্যাঙ্কে বিস্ফোরণ কী থেকে হল। কলকাতা পুলিশের অনুরোধ পেয়েও শুক্রবার রাত পর্যন্ত ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিকদের কেউ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উঠতে পারেননি। তাই ফের প্রশ্ন উঠেছে, যে বিস্ফোরণে এক জনের মৃত্যু হয়েছে, লোহার টুকরো প্রায় ১০-১৫ ফুট দূরে উড়ে গিয়ে পড়েছে, সেই বিস্ফোরণ কী ভাবে হল, তা জানার বিষয়ে তৎপরতা এত কম কেন? কী থেকে এমনটা ঘটল, তা জানা না গেলে দ্রুত পদক্ষেপই বা করা হবে কী করে? লালবাজারের কর্তারা যদিও বলেছেন, ‘‘ফরেন্সিক দল পৌঁছনোর পরেই বিস্ফোরণের বিষয়টি স্পষ্ট হবে। এখন ঘটনাস্থল ঘিরে রাখা হয়েছে।’’
বৃহস্পতিবার মানিকতলা মেন রোডের লোহা মার্কেট এলাকায় একটি বাতিল লোহার ট্যাঙ্ক গ্যাস কাটার দিয়ে কাটার সময়ে বিস্ফোরণে পরশ রায় নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। ঘটনার অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে, পরশ প্রায় ১৫ ফুট দূরে ছিটকে পড়েন। এর পরেই ওই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে আশপাশের বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন। অনেকেই দাবি করেন, ওই চত্বরে এমন বহু বাতিল ট্যাঙ্ক কেটে লোহার ছাঁট বার করা হয়। সেই ছাঁট বিক্রিই এই চত্বরের বড় ব্যবসা। স্থানীয়দের বড় অংশেরই প্রশ্ন, যে কাজে এমন বিস্ফোরণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, সেই কাজ এত খোলাখুলি ভাবে দিনের পর দিন চলে কী করে?
হাওড়ার আন্দুলের মৌড়িগ্রামে ‘ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন’ (আইওসি)-এর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কাটাই তো বটেই, ট্যাঙ্ক সাফ করারও কিছু নিয়ম রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ট্যাঙ্কের চেম্বার পরিষ্কার করার দিন দুয়েক আগে সেটির ভাল্ভে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বার করে দিতে হয়। ট্যাঙ্কের ভিতরে পেট্রল বা ডিজ়েল যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য সেটির ভাল্ভের মধ্যে এক ধরনের বিষাক্ত গ্যাস রাখতে হয়। ট্যাঙ্ক বাতিল হওয়ার পরেও বহু বছর গ্যাস জমে থাকতে পারে। ঢাকনা খোলা অবস্থায় বছরের পর বছর থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে ট্যাঙ্ক গ্যাসের প্রভাবমুক্ত হয় না। এ ক্ষেত্রে তেমনই কিছু ঘটেছে কি না, দেখা প্রয়োজন।’’
এখনও ঘটনাস্থলে না পৌঁছনো ফরেন্সিক দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘আমাদের উপরে বহু এলাকার দায়িত্ব। তাই যেতে দেরি হচ্ছে। তবে রিপোর্ট যা পেয়েছি, তাতে মনে হচ্ছে, এক কালের পেট্রল ‘ভেপার’ তৈরি হয়ে রয়ে গিয়েছিল। গ্যাস কাটারের ব্যবহার সেই ভেপারকে জ্বালানি বানিয়ে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। লালবাজারে কড়া রিপোর্টই দেওয়া হবে।’’ সেই রিপোর্টে পুলিশ তৎপর হবে তো? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy