গোয়েন্দাদের লাগাতার জেরার মুখে সে স্বীকার করেছে যে, খুনের পিছনে রয়েছে তার বিকৃত যৌন লালসা। প্রতীকী ছবি।
কোনও তান্ত্রিকের নির্দেশে নয়, বরং নিজের বিকৃত যৌন লালসা মেটাতেই তিলজলার সাত বছরের শিশুকন্যাকে নিগ্রহ করে খুন করেছিল অভিযুক্ত অলোক কুমার। লালবাজারের দাবি, জেরায় প্রথমে তান্ত্রিকের গল্প ফাঁদলেও পরে সে দাবি করেছে যে, নিজের বিকৃত যৌন চাহিদার কথা ঢাকতেই ওই কথা বলেছিল। তার ধারণা ছিল, এর জেরে তার শাস্তি কম হবে। কিন্তু গোয়েন্দাদের লাগাতার জেরার মুখে সে স্বীকার করেছে যে, খুনের পিছনে রয়েছে তার বিকৃত যৌন লালসা।
এক গোয়েন্দাকর্তা জানান, ধৃত অভিযুক্ত বিকৃতকাম। সেই কারণেই প্রতিবেশীর নাবালিকা মেয়েকে জোর করে ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করার পরে খুন করেছিল সে। পুলিশি জেরায় প্রথম থেকে তান্ত্রিকের কথা বললেও অলোকের বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি ছিল। সে নিমতলা এলাকার এক তান্ত্রিকের কথা বলেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে ধৃতকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হলেও কাউকেই সে শনাক্ত করতে পারেনি। পরে স্বীকার করে, পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে ও সাজা কমাতেই তান্ত্রিকের গল্প ফেঁদেছিল।
লালবাজার জানিয়েছে, ২৬ মার্চ ময়লা ফেলতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় ওই শিশুটি। অভিযোগ, তিলজলা থানার পুলিশ নিখোঁজ ডায়েরিকে প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি। পরে ওই আবাসনে পুলিশি তল্লাশি শুরু হলে তেতলার ফ্ল্যাট থেকে বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে জানা যায়, ময়লা ফেলে ফ্ল্যাটে ফেরার সময়ে অলোক শিশুটির হাত ধরে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে যায় এবং খুন করে। অভিযোগ, তার উপরে যৌন নির্যাতনও চালায় সে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে তিলজলা। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়। ঘটনার তদন্তে কলকাতায় আসেন জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান প্রিয়ঙ্ক কানুনগো। শুক্রবার ওই তদন্ত নিয়ে প্রকাশ্যেই বিরোধ বাধে জাতীয় এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সনদের মধ্যে। এর মধ্যেই তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলার পরে প্রিয়ঙ্ক অভিযোগ করেন, সেখানে ক্যামেরায় সব রেকর্ড করা হচ্ছিল বলে তিনি আপত্তি জানালে তিলজলা থানার তৎকালীন ওসি বিশ্বক মুখোপাধ্যায় তাঁকে মারধর করেন। তিনি লিখিত অভিযোগ করলে লালবাজার ওসির বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে এবং তাঁকে সরিয়ে দেয়। লালবাজার জানিয়েছে, ওই ঘটনার তদন্ত করছে গোয়েন্দা বিভাগ। তদন্তে অভিযোগকারী এবং অভিযুক্তকে ডেকে পাঠানো ছাড়াও ক্যামেরার ছবি খতিয়ে দেখা হবে।
ঘনিষ্ঠ মহলে প্রাক্তন ওসির দাবি, প্রথম থেকেই প্রিয়ঙ্ক দুর্ব্যবহার করছিলেন। ভিতরের ক্যামেরা খারাপ থাকায় একটি বডি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছিল, যাতে আপত্তি তোলেন প্রিয়ঙ্ক। তাতে ওসি জানান, আপত্তি থাকলে তিনি ক্যামেরার ফুটেজ মুছে দিতে পারেন। কিন্তু অভিযোগ, তা না করে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সরকারি সম্পত্তি কোনও ভাবেই সিজ়ার লিস্ট না করে কেউ নিয়ে যেতে পারেন না বলেই তাতে বাধা দেওয়া হয় বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন বিশ্বক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy