গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আশপাশে চাপচাপ রক্ত। সামনে পড়ে রক্তাক্ত মৃতদেহ। পাশেই দেওয়ালে হিন্দিতে লেখা, ‘সিআইডি অফিসার রাজ, সাবধান। তুমি বেশি চালাকি করলে নিজেই ফেঁসে যাবে।’ এর ঠিক নীচে লেখা, ‘কানবালিয়া কে? আপনার ব্যাপারে আমি সব কিছু জানি।’ দেওয়ালের এই লেখার সঙ্গে একটি নোটবইয়ের হস্তাক্ষর মিলিয়েই উল্টোডাঙার ডালকলে রাকেশ সাউ নামে এক শ্রমিকের খুনের কিনারা করল পুলিশ। খুনি সন্দেহে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করা হয়েছে সুমন শেখ ওরফে শাকিল খান নামে এক যুবককে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে অভিযুক্ত। তবে খুনের অস্ত্র উদ্ধার হয়নি।
কেন এই খুন? পুলিশের দাবি, জেরায় শাকিল জানিয়েছে, সে রাকেশের থেকে টাকা পেত। ঘটনার রাতে ডালকলের দরজা খোলা দেখে ভিতরে ঢোকে। রাকেশ তখন ঘুমোচ্ছিলেন। টাকার জন্য তাঁর জামার পকেট হাতড়াতে শুরু করে সে। তখনই রাকেশের ঘুম ভেঙে যায়। শাকিল দাবি করেছে, সেই সময়ে আক্রোশের মাথায় সে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে রাকেশকে খুন করে।
শুক্রবার শাকিলকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে ৩০ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী অরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘ধৃতের সঙ্গে আর কারা ছিল, তা জানা দরকার। গাঁজা খাওয়ার সময়ে গন্ডগোল থেকেই খুন করা হয়েছে বলে সন্দেহ।’’
মঙ্গলবার রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ দেখে, মৃতদেহের পাশেই দেওয়ালে ইট দিয়ে লেখা, ‘সিআইডি অফিসার রাজ সাবধান, কানবালিয়া কে?’— এই কথাগুলি। ওই দেওয়ালেই পেরেকের সঙ্গে ঝোলানো একটি কালো ব্যাগ চোখে পড়ে তদন্তকারীদের। সেখান থেকে মেলে নোটবুকটি। দেখা যায়, কাজের হিসেবের পাশাপাশি বিভিন্ন গানের লাইনও তাতে লেখা। ওই নোটবইয়ে লেখা নাম থেকেই জানা যায়, সেটি শাকিলের।
ইতিমধ্যে কানবালিয়া নামে ব্যক্তির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। খোঁজা হয় রাজকেও। জানা যায়, কানে দুল পরা এক যুবক কানবালিয়া নামে পরিচিত এলাকায়। বুধবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তবে রাজের খোঁজ মেলেনি। জেরায় কানবালিয়া জানায়, প্রায়ই তারা ডালকলে বসে গাঁজা খেত। শাকিলও থাকত। তবে ঘটনার রাতে সে ছিল না।
এর পরে শাকিলের খোঁজ শুরু করেন তদন্তকারীরা। জানা যায়, সোনাগাছিতে তার যাতায়াত রয়েছে। উল্টোডাঙা চত্বরে যে যে ডেরায় শাকিলের যাতায়াত ছিল, সেখানে হানা দেওয়া শুরু করে পুলিশ। এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘ওই ডেরায় বসে গাঁজা খাওয়ার সময়ে নিজের লেখা গান শোনাত শাকিল। গত বুধবার সে জানায়, তার গানের খাতা হারিয়ে গিয়েছে। তাই কয়েক দিন সে আসবে না। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতেই ফের ডেরায় যায় সে। তখনই তাকে ধরা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy