প্রতীকী ছবি।
এ যেন সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়! সোনা লুট করার পরে নিজেই থানায় এসে ডাকাতির গল্প ফেঁদেছিল এক যুবক। পুলিশের নজর ঘোরাতে নিজেই ফাটিয়েছিল নিজের মাথা। কিন্তু এত কিছুর পরেও শেষরক্ষা হল না। গিরিশ পার্কে সোনা লুটের ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেইঅভিযোগকারী-সহ আরও এক জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। লুট হওয়া সোনাও উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃত দু’জনের নাম নীতীশ রায় ও নীতিন রায়। সম্পর্কে তারা দুই ভাই। ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। ডাকাতির অভিযোগ জানাতে গিরিশ পার্ক থানায় আসে বছর তিরিশেরনীতীশ। ডাকাতেরা সন্ধ্যায় একটি ট্যাক্সিতে করে আসে এবং ঘরে ঢুকে কয়েক কোটি টাকার সোনা লুট করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ জানায় সে। এমনকি, ডাকাতেরা বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে তার মাথা ফাটিয়ে অজ্ঞান করে দিয়ে চলে যায় বলেও পুলিশকে জানায় নীতীশ।অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। দফায় দফায় ঘটনাস্থলে গিয়ে খতিয়ে দেখা হয় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। পাশাপাশি, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অভিযোগকারী নীতীশকেও। তবে তার বক্তব্যে বেশ কিছুঅসঙ্গতি পান তদন্তকারীরা। তাতেই সন্দেহ হয় তাঁদের। তাকে থানায় আটকে রেখে দফায় দফায় চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তখনই সোনা লুটের কথা স্বীকার করে নেয় অভিযুক্ত। ওই কাজে তার ভাই নীতিনও সঙ্গে ছিল বলে জানায় সে। রাতেইনীতিনকে দমদম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পাশাপাশি, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উল্টোডাঙা রেল কলোনিতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় লুট হওয়া প্রায় দেড় কেজি সোনা। পুলিশ জেনেছে, ওই সোনা বেশ কিছু দিন আগেই সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
তদন্তে জানা গিয়েছে, নীতিন দমদমের নয়াপট্টি রোডেথাকত। ওড়িশার বাসিন্দা পারশ শাহ নামে এক ব্যক্তির গিরিশ পার্ক এলাকায় সোনার কারবার রয়েছে। সেই ব্যবসা দেখাশোনা করত নীতীশ। সেই সূত্রেই ওই ব্যবসার বিষয়ে খুঁটিনাটি জানত সে। বেশ কয়েক দিন ধরেই ওই সোনাহাতানোর পরিকল্পনা করছিল নীতীশ। সেই মতো ডাকাতির ছক কষে সে। সঙ্গে নেয় তার ভাইকেও। পরিকল্পনা মতো সোমবার রাতে ‘কাজ’ শেষ করে প্রতিবেশীদেরও ডাকাতির কথা জানিয়েছিল নীতীশ।এমনকি, স্থানীয় বাসিন্দারা একটি ট্যাক্সিকেও ঘটনার সময়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘নীতীশ রাতে আমাদের এসে বলল, ওকে নাকি বেঁধে রেখে, মাথায় বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে সোনা ডাকাতি হয়েছে। ওর মাথায় আঘাত থাকায় আমরা সে কথা বিশ্বাসও করেছিলাম। কোনও সন্দেহ হয়নি।’’
এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই অভিযোগকারীর বক্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি ছিল। তাতেই সন্দেহ নয়। এর পরে দফায় দফায় জেরা করায় ঘটনার কথা স্বীকার করে নেয়।’’ এই ঘটনায় আরও এক জন জড়িত বলে জেনেছে পুলিশ। তার খোঁজ চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy