Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ধৃতের বিচার হোক সাবালক হিসেবে, আর্জি পুলিশের

দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরে খুন ও গণধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ধৃতের বয়স ১৬ বছরের বেশি হলেই তাকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার দাবি উঠেছিল। কেন্দ্রও সেই মর্মে আইন সংশোধন করেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০২:১১
Share: Save:

অপরাধ এবং অভিযোগের গুরুত্ব বুঝে পঞ্চসায়র গণধর্ষণ-কাণ্ডে ধৃত নাবালককে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করে বিচার শুরু হোক। বৃহস্পতিবার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে ধৃতকে পেশ করে এমনই আবেদন জানাল কলকাতা পুলিশ।

দিল্লিতে নির্ভয়া-কাণ্ডের পরে খুন ও গণধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ধৃতের বয়স ১৬ বছরের বেশি হলেই তাকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার দাবি উঠেছিল। কেন্দ্রও সেই মর্মে আইন সংশোধন করেছে। তবে এর আগে এ রাজ্যের কোনও ঘটনার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত নাবালককে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার দাবি পুলিশ জানিয়েছিল কি না, মনে করতে পারেননি অনেকেই। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান মুরলীধর শর্মা বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, এটাই প্রথম। ঘৃণ্য অপরাধের কথা মাথায় রেখে এই নাবালকই প্রথম, যাকে সাবালক হিসেবে বিবেচনা করার আর্জি জানানো হল।’’

লালবাজার সূত্রের খবর, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড কলকাতা পুলিশের ওই আবেদন গ্রহণ করেছে। আগামী পাঁচ ডিসেম্বরের মধ্যে কলকাতা পুলিশকে বোর্ডের কাছে ওই নাবালকের আর্থ-সামাজিক এবং মানসিক অবস্থা সম্পর্কে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই রিপোর্টে দেখা হবে, ধৃত নাবালকের অবস্থান তার পরিবারে এবং সমাজের ঠিক কোন জায়গায়। দেখা হবে, কোন স্তরের মানুষের সঙ্গে সে মেলামেশা করে এবং নানা বিষয় সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া কতটা সাবালক সুলভ।’’ সেই সঙ্গে আজ, শুক্রবারই আদালতে অভিযোগকারিণীর গোপন জবানবন্দির দিন পাওয়া গিয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

পঞ্চসায়র-কাণ্ডে ওই নাবালকের যুক্ত থাকার বিষয়টি জানা গেল কী ভাবে? পুলিশ সূত্রের দাবি, মঙ্গলবার রাতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে নরেন্দ্রপুরের কাঠিপোতা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এই ঘটনায় ধৃত ট্যাক্সিচালক উত্তম রামকে। সেখানে জেরার মুখে উত্তম বলে, ‘‘গাড়ি চালাচ্ছিলাম আমি। মহিলা আমার পাশেই সামনের আসনে বসেছিলেন। ওঁর সিটটা কিছুতেই পিছোনো যাচ্ছিল না। কালুই (নাম পরিবর্তিত) তখন চেয়ারটা ধরে পিছনে টেনে দেয়..!’’ এক তদন্তকারীর কথায়, ‘‘তখনই আমরা চেপে ধরি। কে এই কালু?’’ জেরার মুখে উত্তম নাবালকের উপস্থিতির কথা জানায়। পুলিশের দাবি, গাড়ির পিছনের দিকের কাচ তোলা থাকায় প্রথমে কোনও ফুটেজ মেলেনি।

লালবাজার জানায়, জেরায় উত্তম বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলেও নাবালক তা করেনি। সে জানিয়েছে, প্রথমে উত্তম এবং পরে সে ওই মহিলাকে ধর্ষণ করে। গত ১১ নভেম্বর ঘটনার দিন সকাল থেকেই উত্তমের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছিল কালু। বিকেলে যে যার বাড়ি চলে গেলেও সন্ধ্যায় মদ্যপান করবে বলে ফের তারা দেখা করে। উত্তম যখন মহিলাকে গাড়িতে তোলে, তখন গাড়ির পিছনের আসনেই বসে ছিল ওই নাবালক। নানা জায়গায় ঘুরে শেষে কাঠিপোতা এলাকায় পৌঁছে দু’জনে মিলে ধর্ষণ করার পরে এক জায়গায় মহিলাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় তারা। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা এ দিন বলেন, ‘‘ধৃতেরা সম্ভবত বুঝেছিল, পুলিশ তাদের খুঁজছে। উত্তম জেরায় বলেছে, গত ১৩ নভেম্বর কাঠিপোতা এলাকায় পুলিশ যখন তদন্ত চালাচ্ছে, সে গোটাটা দূরে দাঁড়িয়ে দেখেছে।’’

তদন্তকারীরা জানান, নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে স্কুল ছেড়ে দিয়েছিল ওই নাবালক। সে কাঠিপোতা এলাকাতেই ভ্যানরিকশা চালাত। তার বাবা জমিতে মাটি কাটার কাজ করেন। পরিবারে এ ছাড়াও রয়েছেন তার দাদা এবং মা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy