E-Paper

গরমের দুপুরে খাওয়ার লোক কোথায়? ধুঁকছে ভাতের হোটেলগুলি

কম খরচে দুপুরের খাওয়া সারার আস্তানা, এ শহরের ভাতের হোটেলগুলির এই গরমে কী অবস্থা? চিকিৎসকদের বড় অংশেরই প্রশ্ন এই ধরনের হোটেলের খাবার নিয়ে।

ফাঁকা: গরমের চোটে ভিড় নেই শিয়ালদহ এলাকার একটি ভাতের হোটেলে।

ফাঁকা: গরমের চোটে ভিড় নেই শিয়ালদহ এলাকার একটি ভাতের হোটেলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৪ ০৭:১০
Share
Save

গরমের দুপুরে স্ট্র্যান্ড রোডের ধারে ভাতের হোটেলে এক হাতে ধরে মাংসের হাড় চিবোনোর চেষ্টা করে চলেছেন এক ব্যক্তি। অন্য হাত ব্যস্ত ঘাম মুছতে। তাঁকে দেখিয়ে ভাতের দোকানের মালিক বললেন, ‘‘আজ এখনও পর্যন্ত মাংস-ভাত খাওয়ার লোক এই এক জনই! বেশির ভাগই ডাল-ভাত খাচ্ছেন। কয়েক দিন বৃষ্টি পড়ায় খানিকটা গরম কমেছিল। তাই মাংস করেছিলাম। গরম বাড়তে থাকলে মেনু থেকে মাংস বাদ দেব!’’

সপ্তাহ দুয়েক আগেও প্রায় প্রতিদিনই গরমের নিত্যনতুন রেকর্ড গড়ে আলোচনায় থেকেছে কলকাতা। এই গরমেও পেশার তাগিদে বা প্রয়োজনে রাস্তায় বেরিয়ে খেতে হয় অনেককেই। কম খরচে দুপুরের খাওয়া সারার আস্তানা, এ শহরের ভাতের হোটেলগুলির এই গরমে কী অবস্থা? চিকিৎসকদের বড় অংশেরই প্রশ্ন এই ধরনের হোটেলের খাবার নিয়ে। তাঁদের পরামর্শ, গরমে যতটা সম্ভব কম তেল-মশলাযুক্ত খাবার খেতে হবে। কারণ, রাস্তার খাবার বা জল থেকে গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ইনফেকশন (জিআই) বা হেপাটাইটিস-এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

চিকিৎসকদের সেই সতর্কবাণী মনে রেখেই দুপুরে ভাতের হোটেল থেকে ভিড় সরেছে। ফলে, অনেক হোটেলই মাছি তাড়াচ্ছে। কেউ বা ক্রেতার অভাবে দোকানই বন্ধ রাখছেন। ভাতের হোটেলের মালিকদের দাবি, ‘‘যত জন রোজ খেতেন, তার ১০ ভাগের এক ভাগও আসছেন না। রান্না খাবার অবিক্রীত পড়ে থাকছে।’’ চাঁদনি চকের একটি ভাতের হোটেলে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ জন খান। মালিক জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এখানে আনাজ-ভাত ৩০ টাকা, ডিম-ভাত ৪০ টাকা, মাছ বা মাংস-ভাত ৬০ টাকা করে। গত ১০ দিনে হাতে গোনা কয়েক জন খেয়েছেন।’’

একই দাবি হাতিবাগানের ভাতের হোটেলের মালিক তপনকুমার ঘোষালের। তপন বলেন, ‘‘প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০০ জন খেতেন। আজ দুপুরে জনা দশেকের বেশি লোক আসেননি। আমরা গরমে আমের ডাল, আমের চাটনি রাখছি।’’ ধর্মতলা চত্বরের ডেকার্স লেনে দেখা গেল, সুপের ক্রেতাই বেশি। এক ক্রেতা বললেন, ‘‘এই গলিতে খিচুড়ি, পোলাও সবই মেলে। কিন্তু হালকা খাব বলেই চিকেন সুপ খাচ্ছি।"

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বললেন, ‘‘হালকা খাবার খাওয়া এই সময়ে জরুরি। কারণ, এই আবহাওয়ায় ব্যাক্টিরিয়া দ্রুত প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ফলে খাবার নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কী জল পান করছি, সে দিকেও খেয়াল রাখা জরুরি। নয়তো হেপাটাইটিস-এ ভোগাতে পারে।’’ মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘গরমে বাইরে খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ, তেল-মশলার ব্যবহার ও তার গুণমান কেমন, কেউ জানেন না।’’ চিকিৎসকদের পরামর্শ, শুকনো খাবার যা দ্রুত নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কম, তেমন খাবার খাওয়া ভাল। বেশি ফল খেতে হবে। তবে রাস্তার কাটা ফল নয়। বক্ষরোগ চিকিৎসক রাজা ধর বললেন, ‘‘কী খাবেন, সেই সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ কোন পরিবেশে খাবেন। অত্যন্ত গরম থেকে হঠাৎ খুব ঠান্ডা ঘরে ঢুকে খাওয়া বা উল্টোটা শরীরের পক্ষে সমান বিপজ্জনক।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

pice hotel Summer Heatwave

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।