Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Noise Pollution

জোড়া উৎসবের শব্দ ‘তাণ্ডবে’ কাঁপছে শহর

সরশুনা, গল্ফগ্রিন, যাদবপুর, টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন, বাগবাজার, উল্টোডাঙা, মানিকতলা ও টালা এলাকাতেও পুজো ঘিরে একই রকম শব্দের তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ। রাতেও বক্স, ডিজে বাজিয়ে চলেছে নাচ।

An image of Sound Box

পুজোমণ্ডপে এ ভাবেই বক্স বাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪৬
Share: Save:

বিশ্বকর্মা পুজোর এক দিন আগে, অর্থাৎ রবিবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল মণ্ডপে বক্স বাজানোর তোড়জোড়। দুপুর পেরোতেই তা তারস্বরে বাজতে শুরু হয়। যা বেজে চলেছিল রাত পর্যন্ত। বিশ্বকর্মা পুজোর এক দিন আগে থেকে শুরু হওয়া শব্দের এই ‘তাণ্ডবে’ অতিষ্ঠ বহু এলাকার বাসিন্দারা আওয়াজ কমানোর অনুরোধ জানিয়ে থানায় ফোনও করেন উদ্যোক্তাদের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাতে কাজ হয়নি বলে অভিযোগ।

এই অভিযোগ শুধু বেহালা এলাকার নয়, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বহু জায়গার। বিশ্বকর্মা পুজোর পরদিন গণেশ চতুর্থী থাকায় এই দৌরাত্ম্যে জুড়ে গিয়েছে আরও একটি দিন।

দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরের ব্যানার্জি পাড়ার বড় অংশ মুড়ে ফেলা হয়েছিল মাইক এবং বক্সে। উপলক্ষ, একটি অটো রুটের ইউনিয়ন পরিচালিত বিশ্বকর্মা পুজো। রবিবার থেকে শুরু হওয়া সেই উৎসব মঙ্গলবারেও শেষ হয়নি। এক বাসিন্দা বলছেন, ‘‘বাড়ির জানলার কাছে একটি মাইক লাগিয়ে দিয়েছে। সকাল সকাল শুরু হয়ে যাচ্ছে তাণ্ডব, মধ্যরাতেও থামছে না। দরজা-জানলা বন্ধ করেও দু’বছরের মেয়েকে ঘুম পারাতে পারছি না। আওয়াজে কেঁপে উঠে যাচ্ছে মেয়েটা।’’

সরশুনা, পর্ণশ্রী, গল্ফগ্রিন, যাদবপুর, টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশন, বাগবাজার, উল্টোডাঙা, মানিকতলা ও টালা এলাকাতেও পুজো ঘিরে একই রকম শব্দের তাণ্ডব চলেছে বলে অভিযোগ। রাতেও বক্স, ডিজে বাজিয়ে চলেছে নাচ। বহু ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসন বধির থেকেছে বলে দাবি স্থানীয়দের। ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের প্রশ্ন, বিশ্বকর্মা পুজোতেই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে দুর্গাপুজো বা কালীপুজোয় কী হতে চলেছে? একই আশঙ্কা পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদেরও।

এই শব্দের দাপটে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছেন শিশু, বয়স্ক এবং পোষ্যেরা। বাইপাসের ধারের বাসিন্দা মহিতোষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘এ বছর বিশ্বকর্মা পুজো নিয়ে মাতামাতির মধ্যেই পরদিন আবার গণেশ চতুর্থী। থানায় ফোন করেও কাজ হচ্ছে না। শুধু বলছে, ওই পুজোটা বিধাননগর এলাকার। এ দিকে আওয়াজে পোষ্যটা মাঝেমধ্যে চিৎকার করে উঠছে।’’

দিন দিন উৎসবের আবহে শব্দের দাপট বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সুভাষ বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে সব থেকে বেশি শব্দবিধি ভঙ্গের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আসলে শুধু উৎসব যাপন নয়, বরং নিজেকে জাহির করার একটা প্রবণতা এখন কাজ করছে। আর তাতেই একের পর এক বিধিভঙ্গ।’’

যদিও পুলিশের দাবি এ সব ক্ষেত্রে নজরদারি চলে, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘শহরের সর্বত্র নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। রাতেও বেশি সংখ্যক টহলদারি দল রাস্তায় ছিল। বহু জায়গায় বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।’’ অথচ মঙ্গলবার রাতে সরশুনার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বিশ্বকর্মা পুজোর একাধিক বিসর্জন থানার সামনে দিয়ে নিশ্চিন্তে ডিজে বাজিয়ে গিয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy