খেলাধুলো: শীতের ময়দানে ব্যাডমিন্টনে ব্যস্ত তরুণ-তরুণীরা। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
শীতের এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সব চেয়ে কম ছিল শনিবার। আর পারদ ভাল মতো নামতেই শীতের আমেজ মাখা জনতার ভিড় উপচে পড়তে শুরু করল শহরের বিনোদন এলাকাগুলিতে। এ দিন সব চেয়ে বেশি ভিড় চোখে পড়েছে চিড়িয়াখানায়। এই মরসুমে এ দিনই প্রথম ২৫ হাজার দর্শকের উপস্থিতি দেখা গেল সেখানে। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের ধারণা, এ বারের শীতে অতীতের ভিড়ের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে। বড়দিনের আশপাশে তো বটেই, নতুন বছরের শুরুর দিনগুলিতেও সব মিলিয়ে প্রায় এক লক্ষেরও বেশি মানুষের ভিড় এ বার চিড়িয়াখানায় দেখা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসও বলছে, এ বছর এমনটা হওয়ার মতো পরিস্থিতি অনুকূল। শুক্রবার ভোরে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে এক ডিগ্রি কম। শনিবার পারদপতন হয়েছে আরও কিছুটা। আলিপুরের হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি কম। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪.৯ ডিগ্রির আশপাশে রয়েছে। সেটিও স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস কম বলে আবহাওয়া দফতরের বক্তব্য। সেই সঙ্গে তারা এ-ও জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিনে ঠান্ডা পড়তে পারে আরও। উত্তরের জেলাগুলির মতো না হলেও দক্ষিণবঙ্গেও শীত ভালই মালুম হবে বলে তাঁদের ধারণা। যা নিয়ে এ দিনই পরিবারের সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে পড়া এক তরুণী বললেন, ‘‘কলকাতায় শীত তো মাত্র কয়েক দিন থাকে। তাতে জমাটি ঠান্ডা পড়লে ভালই হয়। পরে কী পরিস্থিতি হয়, তার ঠিক নেই। তাই আজই বেরিয়ে পড়েছি। প্রথমে চিড়িয়াখানা ঘুরে ময়দানে এসে ছোট পিকনিক মতো করে খাওয়াদাওয়া সেরে ফেরার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
এ দিন চিড়িয়াখানার পরেই ভিড়ের নিরিখে এগিয়ে ছিল জাদুঘর। কিন্তু চেনা চেহারায় দেখা যায়নি ময়দান চত্বরকে। অন্যান্য বারের তুলনায় এ দিন যেন অনেকটাই ফাঁকা ছিল শহরের ফুসফুস। বদলে রেড রোড জুড়ে রবিবারের ম্যারাথনের প্রস্তুতি আর সেনার অনুষ্ঠান চলেছে। তার মধ্যেও এ দিন দুপুরে ময়দানে হাজির একটি পরিবারের সদস্যেরা বললেন, ‘‘বড়দিন যত এগিয়ে আসবে, ততই ভিড় বাড়বে। তাই সকাল-সকাল ট্রেন ধরে বারাসত থেকে চলে এসেছি।’’ আর একটি পরিবারের সদস্যদের মন্তব্য, ‘‘ময়দানে গীতাপাঠ হচ্ছে দেখছি। সে দিকটা ঘুরে ঘোড়ায় চড়ে নিয়েছি। এর পরে আরও কিছুটা সময় কাটিয়ে ফিরব।’’ ওই চত্বরে পুলিশকে তেমন ঝক্কি পোহাতে না হলেও বাড়তি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে হয়েছিল চিড়িয়াখানার জন্য।
চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বললেন, ‘‘এত দিন রোজ ১৩-১৪ হাজারের মধ্যে লোক হচ্ছিল। এই প্রথম ২৫ হাজার পেরিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি হল। তবে, ভিড়ের পুরনো সব রেকর্ডই এ বার ভেঙে যাবে বলে মনে হচ্ছে। চিড়িয়াখানার চারটে গেটই আমরা খুলে দিয়েছি। আগাম টিকিট কেটে আসা যাচ্ছে, তার উপরে অনলাইনেও টিকিটের দাম মেটানোর সুযোগ রয়েছে। পশু-পাখি দেখার বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’’
তবে, এ দিন তেমন ভিড় চোখে পড়েনি নতুন খোলা আলিপুর জেল মিউজ়িয়ামে। সেখানে হাজির তনিমা ঘোষ নামে এক মহিলার মন্তব্য, ‘‘এ দিকে চিড়িয়াখানা আর নিউ টাউনের দিকে ইকো পার্ক এখন বেশি ভিড় টানে। ইকো পার্কের মেলার আগামী কালই শেষ দিন। তাই বন্ধুদের অনেকেই শুনছি, ও দিকটা আজ বা কাল ঘুরে সামনের সপ্তাহে ময়দানের দিকে আসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy