বাঁশদ্রোণীতে পাটুলি থানার ওসিকে কাদাজলে নামিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত।
কাউন্সিলরের অপেক্ষায় এখনও বিক্ষোভ চলছে বাঁশদ্রোণীতে। তার মাঝেই পাটুলি থানার ওসিকে কাদাজলে নামিয়ে দেন স্থানীয়েরা। রাস্তার বেহাল দশা বোঝাতেই তাঁকে কাদায় নামানো হয়েছিল। ওসিকে ঘিরে বিক্ষোভও চলেছে দীর্ঘ ক্ষণ। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে ওসিকে উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন তাঁদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। যাকে কেন্দ্র করে নতুন করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এলাকার বাসিন্দারা সকাল থেকে স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে দেখা করবেন বলে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পরেও তিনি এলাকায় পৌঁছননি বলে অভিযোগ।
দুপুরের পর বাঁশদ্রোণীতে ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের সাউথ সাব-আরবান শাখার ডেপুটি কমিশনার। তিনি যাওয়ার পর পরিস্থিতি কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ডিসি জানিয়েছেন, ঘাতক জেসিবির চালকের খোঁজ চলছে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
বাঁশদ্রোণীতে মহালয়ার সকালে এক ছাত্রের মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। কলকাতা পুরসভার ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই ছাত্র। ওই এলাকার রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছিল। অভিযোগ, কোচিং সেন্টারে যাওয়ার সময় ছাত্রকে ধাক্কা মারে জেসিবি। গাছের সঙ্গে তাকে পিষে দেয়। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে ছাত্রকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু তাকে বাঁচানো যায়নি।
ছাত্রের মৃত্যুর পরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বাঁশদ্রোণী। রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার কাউন্সিলর অনিতা কর মজুমদারের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানান তাঁরা। অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে ওই এলাকার রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। কাউন্সিলরের কাছে বার বার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। রাস্তা মেরামত না করে ফেলে রাখা হয়েছিল। রাস্তায় দিকে দিকে গর্ত। সামান্য বৃষ্টিতেও যেখানে জল জমে যায় বলে অভিযোগ। বুধবারের দুর্ঘটনার জন্য রাস্তার ওই বেহাল দশা এবং প্রশাসনের ব্যর্থতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সাধারণ মানুষ।
কাউন্সিলরের দেখা না পেয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ বাড়তে থাকে। অভিযোগ, থানায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি। ফলে পুলিশকে দেখেও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে জনতা। এলাকায় পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে ঘটনাস্থলে যান পাটুলি থানার ওসি। কিন্তু তাঁকেও ঘিরে ধরে উত্তেজিত জনতা। বিরাট পুলিশবাহিনী দিয়ে ওসিকে এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনা প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে কাউন্সিলর বলেছিলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার কাজ চলছে। সেই কাজ করতে তো সময় লাগে। এটা বুঝতে হবে। সাড়ে ছ’ফুট উঁচু পাইপের কাজ চলছে এলাকায়। সেখানে একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এর আগে এত বড় বড় কাজ হয়েছে, এমন তো কখনও হয়নি। এই ঘটনায় আমরা মর্মাহত। মৃতের পরিবারের পাশে আছি। আর কখনও যেন না ঘটে, সেটাই চাইব।’’ এলাকাবাসীর দাবি মেনে সেখানে পৌঁছনোর কথাও জানিয়েছিলেন কাউন্সিলর। কিন্তু দুপুরের পরেও তাঁর দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। আমরা পুরসভার আধিকারিকদের সেখানে পাঠিয়েছি। এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থার অবস্থা খারাপ ছিল। তা নিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি চলছিল। তখন এই ঘটনা ঘটেছে। দোষীরা নিশ্চয়ই শাস্তি পাবে। কনট্র্যাক্টরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy