প্রতিবাদ: থানা ঘেরাও নিখোঁজ ঝুন্নু রানার (বাঁ দিকে) পরিবার ও স্থানীয়দের। বৃহস্পতিবার, ট্যাংরায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
স্থানীয় যুবকের 'উধাও' হওয়ার খবরটা হন্তদন্ত হয়েই থানায় জানিয়েছিলেন পরিজনেরা। এমনকি,মোটরবাইকে কার সঙ্গে তাঁকে শেষ দেখা গিয়েছে, সেটারও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ জোগাড় করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। অভিযোগ, তবু গা করেনি ট্যাংরা থানার পুলিশ। নাম-কা-ওয়াস্তে নিখোঁজ ডায়েরি লেখা হয়। কিন্তু, সামনে দোল, এখনকিছু করা যাবে না বলে পুলিশ বিষয়টি আমল দিতেই চায়নি বলে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ করছিলেন 'নিখোঁজ' ঝুন্নু রানার আত্মীয়েরা। ঝুন্নুর সঙ্গে যাকে শেষ বার দেখা গিয়েছিল, এত দিনে তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেএ দিন খবর আসে। ওই যুবককে (ঝুন্নু) খুন করা হয়েছে সন্দেহে এর পরেই ট্যাংরা থানা ঘেরাও করেবিক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাতে লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৪ বছরের ঝুন্নুর নিখোঁজ-রহস্যে জড়িত সন্দেহে গোলামরব্বানি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে এনেছে পুলিশ। ঝুন্নুর সহোদর ভাই বিক্রম রানা থেকে শুরু করে স্থানীয় লোকজন ঝুন্নুকে খুনই করা হয়েছে বলে সরব হয়ে বিক্ষোভ দেখালেও কলকাতা পুলিশ এখনও খাতায়-কলমে খুনের বিষয়টি মানছে না।
কলকাতা পুলিশের ডিসি (ইএসডি) গৌরব লাল এ দিন বলেন, "নিখোঁজ যুবক যে খুনইহয়েছেন, তা এখনই বলার পরিস্থিতি আসেনি। তবে, শেষ যার সঙ্গে ছেলেটিকে দেখা গিয়েছে, তাকে দিল্লি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে।" পুলিশ সূত্রের খবর, গোলাম রব্বানি প্রথমে বেঙ্গালুরু হয়ে দিল্লিগিয়েছিল। দু'জায়গাতেই থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারেরা যান। এ দিনই রব্বানিকে নিয়ে দিল্লি থেকে ফিরে আসে পুলিশ। অভিযুক্ত গোয়েন্দা বিভাগের হেফাজতেআছে। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিখোঁজ যুবককে খুন করে স্থানীয় কোনও খালে ফেলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে তদন্তচলছে। তবে ঘটনাটি পরিষ্কার নয়। রব্বানির নামে পুরনো অপরাধের অভিযোগ আছে কি না,তা-ও দেখা হচ্ছে। তার সঙ্গে নিখোঁজ যুবকের কী 'সম্পর্ক', তা-ওস্পষ্ট নয়।
ঝুন্নুর ভাই বিক্রম বলেন, "গোলাম রব্বানির বাড়ি তিলজলায়।খুব বেশি দিন আমার দাদার সঙ্গে পরিচয় নয়। ওর বাইকেই দাদা ৩ মার্চ দুপুরে শেষ বেরিয়েছিল। ট্যাংরা থেকে তিলজলার দিকেওগিয়েছিল। এ সব আমরা পুলিশকে জানিয়েছি। দাদাকে রব্বানি ট্যাংরার একটি নামী রেস্তরাঁর সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। সেই রেস্তরাঁয় আমাদের এক ভাই কাজ করে। ওর সাহায্যে সেই রেস্তরাঁর সিসিক্যামেরার ফুটেজও আমরা জোগাড় করি। তাতে বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ রব্বানির মোটরবাইকের পিছনে ওকে (ঝুন্নু) দেখা যায়।" বিক্রমের দাবি, তিলজলা থানার পাশে রব্বানির বাড়ির ফুটেজও পুলিশ পেয়েছে। তবে, রব্বানির বাড়িতে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়।
ঝুন্নুরা তিন ভাই। দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ঝুন্নু স্থানীয়একটি লোহালক্কড়ের কারখানায় কাজ করেন। তিনি বিয়ে করেননি। বিক্রম বলছিলেন, "আমাদের মা এখনও কী হয়েছে, কিছুই জানেন না। জানলে বাঁচবেন না।" তবে,এ দিন ঝুন্নুদের গোটা পাড়া ট্যাংরা থানার সামনে আছড়ে পড়ে। থিকথিকে ভিড় 'পুলিশ হায় হায়' রব তোলে। সহকারীনগরপাল পদমর্যাদার কয়েক জন অফিসার পরিস্থিতি সামলাতে আসেন। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধিওঘটনাস্থলে আসেন। থানার অফিসারদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তোলেন স্থানীয়বাসিন্দারা।
বিক্রমের বক্তব্য, পুলিশকে সব তথ্য সময় মতো জানানো হলেও তখনই ওরা বিষয়টি নিয়েতদন্ত শুরু করেনি। তা হলে হয়তো এত দিন অপেক্ষা করতে হত না। পুলিশের গা-ছাড়া মনোভাবেই'অঘটন' ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy