অপেক্ষা: দ্রুত নিয়োগের দাবিতে এসএসসি-র উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ। সোমবার, ধর্মতলায়। —নিজস্ব চিত্র।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই বিক্ষোভ-আন্দোলনের জোড়া ফলায় নাজেহাল হল কলকাতা। যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ল ধর্মতলা চত্বর ও সংলগ্ন একাধিক রাস্তা। আবার, আন্দোলনের অন্য একটি ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল সল্টলেকের বিকাশ ভবন চত্বরেও।
কেন্দ্র বা রাজ্য, কোনও বাজেটেই তাঁদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়নি— এই অভিযোগে এবং আরও পাঁচ দফা দাবি আদায়ে সোমবার দুপুরে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ধর্মতলা মোড় অবরোধ করেন। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রাস্তায় বসে বা শুয়ে পড়ে অবস্থান চালিয়ে যান তাঁরা। যার জেরে ধর্মতলা চত্বরে গতি হারায় যানবাহন। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, এসপ্লানেড রো-সহ একাধিক রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। অনেককেই দেখা যায়, বাস কিংবা ট্যাক্সি থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। যাঁরা ব্যক্তিগত গাড়িতে ছিলেন, তাঁরা বাধ্য হয়ে বসে ছিলেন গাড়িতেই। যানজটে আটকে যায় স্কুলগাড়িও। তবে, ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সকে ছেড়ে দিতে দেখা গিয়েছে বিক্ষোভকারীদের।
আন্দোলনকারীরা জানান, এ দিন তাঁদের ‘বিধানসভা চলো’ অভিযান ছিল। কিন্তু পুলিশ মিছিল আটকে দেওয়ায় তাঁরা ধর্মতলা মোড়ে এসে বসে পড়েন। কর্মস্থলের নির্দিষ্ট পোশাক পরেই তাঁরা বিভিন্ন জেলা থেকে এসে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন। অবরোধ চলাকালীনই তাঁদের দলের ছ’জন প্রতিনিধি বিধানসভায় গিয়ে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের দাবিদাওয়ার কথা জানান। পরে সেখান থেকে ফিরে পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন জানান, মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাই আজ, মঙ্গলবার থেকে তাঁরা কর্মবিরতির ডাক দিচ্ছেন। সওয়া ২টো থেকে শুরু হওয়া অবরোধ সাড়ে ৪টেয় তুলে নেওয়া হয়। তাঁরা জানান, বছরে অন্তত তিন শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধি এবং মোবাইল ফোনের খরচ বাবদ কর্মী-পিছু ১৫ হাজার টাকা প্রদান-সহ পাঁচ দফা দাবিপত্র তাঁরা অর্থমন্ত্রীকে দিয়েছেন। এ দিন পুলিশ অবরোধ তুলে নিতে বার বার অনুরোধ করে আন্দোলনকারীদের। যদিও বিক্ষোভকারীরা অবস্থান চালিয়ে যান।
এ দিন সকালেও বিক্ষোভ-আন্দোলনের জেরে ধর্মতলা চত্বরে এক দফা যানজটের সমস্যায় ভুগতে হয় সাধারণ মানুষকে। বিক্ষোভকারীদের মিছিল ঘিরে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। ওই বিক্ষোভ দেখান উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। দ্রুত নিয়োগের দাবিতে তাঁরা প্রথমে ধর্মতলা মোড়ে এবং পরে মেট্রো চ্যানেলে বসে বিক্ষোভ দেখান। ৪০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসে থাকা চাকরিপ্রার্থী সুশান্ত ঘোষ বললেন, ‘‘হাই কোর্টে বিচারপতিদের বেঞ্চ বদল হওয়ায় মামলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। গত দশ বছর ধরে আমরা লড়ছি।’’
অন্য দিকে, আন্দোলনের আর এক ছবি দেখা যায় সল্টলেকের বিকাশ ভবন চত্বরে। শূন্য পদ ঘোষণা করে দ্রুত ইন্টারভিউয়ে ডাকার দাবিতে বিকাশ ভবন অভিযান করেন ২০২২ সালের প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা ২০২২ সালে টেট দেওয়ার পরে ২০২৩ সালে ফল বেরোলেও এখনও পর্যন্ত ইন্টারভিউয়ের ডাক আসেনি। শূন্য পদও ঘোষণা করা হয়নি। তাঁদের দাবি, ৫০ হাজার শূন্য পদ ঘোষণা করে অবিলম্বে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী জানান, সম্প্রতি ২০১৪ এবং ২০১৭ সালে টেট পাশদের মধ্যে ৯৫৩৩ জনের নিয়োগ হয়েছে। এ বার শূন্য পদ ঘোষণা করে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
চাকরিপ্রার্থীরা সেন্ট্রাল পার্ক মেট্রো স্টেশনে নেমে বিকাশ ভবনের দিকে যেতেই তাঁদের আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের সঙ্গে কিছু ক্ষণ চাকরিপ্রার্থীদের বচসা হয়। পুলিশ চাকরিপ্রার্থীদের গ্রেফতার করে বিভিন্ন থানায় নিয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy