লকডাউনের জেরে জোড়াসাঁকোর এই ছবি এ বার আর দেখা গেল না। ফাইল চিত্র।
তাঁর গানের সঙ্গে কোরিয়োগ্রাফিতেও ঢুকে পড়েছে মাস্ক বা গ্লাভস। বাড়ির ছাদ, বারান্দা বা গলিই হয়ে উঠেছে মঞ্চ। জোড়াসাঁকো বা রবীন্দ্র সদনের ক্লান্ত দুপুরে সচরাচর এ ভাবে পাওয়া যায় না তাঁকে।
এই পঁচিশে বৈশাখের রবিপুজোয় চড়া রোদ, ঘাম, ভিড় বা খোঁপায় জুঁই ফুলের ঝিম ধরা গন্ধ নেই। তবু কারও কারও কাছে রবীন্দ্রনাথ ধরা দিলেন অন্য ভাবেও। পরিচিত সঙ্গীত বা বাচিক শিল্পীদের অনলাইন অনুষ্ঠানের খবর আগেই ছড়িয়ে পড়েছিল। এ বার বাঁধাধরা গান-কবিতার বাইরেও রবীন্দ্রনাথকে খোঁজার চেষ্টা দেখা গেল।
দেশে লকডাউন-পর্ব শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতায় ডানা মেলেছিল ইন্টারনেট-নির্ভর বেতারমাধ্যম ‘রেডিয়ো কোয়রান্টিন’। শুক্রবার দিনভর খানিক অন্য ধাঁচের রাবীন্দ্রিকতার আমেজ ছড়িয়ে দিয়েছে তারা। দর্শনের অধ্যাপক শামিম আহমেদ যেমন সুফি ভাবনা ও রবীন্দ্রগানের রসায়ন নিয়ে কথা বলেছেন। গবেষক-প্রাবন্ধিক আশিস লাহিড়ী রবীন্দ্র-গাঁধী সম্পর্কের পরত মেলে ধরেছেন। প্রবীণ শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় তাঁর নির্মাণে রবীন্দ্রগানের শিকড়ের কথায় মুখর। সাহানা বাজপেয়ীর কাছে শোনা গিয়েছে অকালপ্রয়াত বিক্রম সিংহ খাঙ্গুরার গল্প। মানানসই গানের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের রাজনীতি, রাষ্ট্রভাবনা বা বিশ্ববীক্ষার মতো ভারী বিষয় কদাচ শোনা যায়।
আরও পড়ুন: এক মাস কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রে থেকেও করোনা জয়
আড়িয়াদহের ধ্রুবাশ্রমের মতো সরকারি হোমে আবাসিকেরা মিলে কবিপ্রণামের আয়োজন করেছিলেন। বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়ারা দূরত্ব বজায় রেখেই শিক্ষিকাদের পাঠানো কোরিয়োগ্রাফি ফোনে দেখে নাচের রেকর্ডিং করে পাঠিয়েছে। সেন্ট পলস মিশন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চিতা বিশ্বাস জোর দিচ্ছিলেন অতিমারি ও লকডাউনে বেহাল দেশে রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতার খোঁজে। ঘরছাড়া শ্রমিকের অন্তহীন পথ চলার পটভূমিতে তাই অনিবার্য ‘তবু বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর, এখনি, অন্ধ, বন্ধ কোরো না পাখা’। ‘ভেঙে মোর ঘরের চাবি...’ বা ‘সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে’ গানগুলিও গভীরতর অর্থ পেয়েছে। চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়ার কলকাতা ডায়োসিসের বিশপ পরিতোষ ক্যানিং যে পিয়ানোয় ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’র সুর তুলতে পারেন, তা-ও জানান দিল এই পঁচিশে বৈশাখ। আমেরিকান কনসুলেটও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই রবীন্দ্রচর্চায় শামিল।
আরও পড়ুন: কলকাতার অবস্থা উদ্বেগজনক, বহু এলাকা নিয়েই চিন্তায় পুরসভা
সকাল-সন্ধ্যায় ফেসবুক লাইভে এসে কবীর সুমন মনে করিয়েছেন, পঁচিশে বৈশাখ কিন্তু বাঙালির সঙ্গীতচর্চার আর এক পুরোধা জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষেরও জন্মদিন। বাঙালির ‘প্রাণে গান নাই মিছে তাই রবিঠাকুর মূর্তি গড়া’ বলে একদা সুমনই গান বেঁধেছিলেন। ঘরবন্দি কবিপক্ষ কিছুটা অন্য রকম রবীন্দ্র-যাপনের স্বাদ এনে দিল।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy