Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly By-Election

গণনা কেন্দ্রের সামনে উচ্ছ্বাসে উড়ল আবির, তুলনায় শান্ত মানিকতলা

মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল ঘিরে সকাল থেকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাসের পরিচিত ছবি। যদিও খাস মানিকতলায় দেখা যায়নি সেই পর্যায়ের মাতামাতি।

মানিকতলা উপনির্বাচনে জয়ী, তৃণমূলের সুপ্তি পাণ্ডে। শনিবার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনা কেন্দ্রের সামনে।

মানিকতলা উপনির্বাচনে জয়ী, তৃণমূলের সুপ্তি পাণ্ডে। শনিবার, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনা কেন্দ্রের সামনে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

চন্দন বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪ ০৬:১৭
Share: Save:

হাওয়ায় উড়ছে সবুজ আবির। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে মুখে সবুজ আবির মেখে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের জটলা। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বি টি রোডের আশপাশেও জড়ো হয়েছেন তাঁদের অনেকে। গণনার একটি করে রাউন্ডের ফলাফলের খবর বাইরে আসছে, আর উল্লাসে ভিড়ের মধ্যে থেকে আবির বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সমর্থকেরা। বেলা যত বেড়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে ততই বেড়েছে দলীয় সমর্থকদের ভিড়। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পুলিশি তৎপরতাও।

মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফল ঘিরে সকাল থেকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দেখা গেল তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাসের এই পরিচিত ছবি। যদিও খাস মানিকতলায় দেখা যায়নি সেই পর্যায়ের মাতামাতি। সেখানে দু’-এক জায়গায় দলীয় অফিসের সামনে মাইক লাগিয়ে তৃণমূল কর্মীদের আবির খেলতে দেখা গেলেও অধিকাংশ জায়গাই ছিল ফাঁকা। এমনকি, বড়সড় বিজয় মিছিলও চোখে পড়েনি। এ নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের প্রশ্ন করতেই উত্তর এল, ‘‘পরে হবে।’’ কেউ আবার ‘‘দাদারা আলোচনা করে সব ঠিক করবেন’’ বলে দায় সারলেন।

প্রয়াত বিধায়ক সাধন পাণ্ডের থেকেও ব্যবধান বাড়িয়ে মানিকতলা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তাঁর স্ত্রী সুপ্তি পাণ্ডে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবেকে প্রায় ৬৩ হাজার ভোটে পিছনে ফেলেছেন তৃণমূল প্রার্থী। এ দিন সকালে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণনা শুরু হওয়ার পরে প্রথম রাউন্ড থেকেই বড় ব্যবধানের আভাস মিলতে শুরু করেছিল। এর পরে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবধান যত বেড়েছে, ততই ভিড় বেড়েছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের। সেই সঙ্গে চলেছে মিষ্টি খাওয়ানো আর আবির খেলা। একটা সময়ে স্লোগান আর চিৎকারে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কান পাতা যাচ্ছিল না। ভিড়ের মধ্যে দলীয় পতাকা নাড়তে ব্যস্ত এক তৃণমূল কর্মী বললেন, ‘‘এখন এখানে হচ্ছে। পরে দিদিকে নিয়ে পাড়ায় হবে।’’ দুপুরের দিকে পরিস্থিতি এমন হয় যে, বি টি রোডে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখাই কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় পুলিশকর্মীদের পক্ষে।

গণনা কেন্দ্রের সামনে ভিড় থাকলেও মানিকতলায় উচ্ছ্বাস বা ভিড়ের পরিচিত ছবি চোখে পড়েনি। বিজেপি কার্যালয়গুলির সামনে সকালের দিকে তা-ও কয়েক জনকে ভিড় করতে দেখা গেলেও ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতেই তাঁরা চলে যান। দরজা বন্ধ হয়ে যায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়গুলির। এ দিন দুপুরে সুপ্তির বাড়ির সামনে গিয়েও জনাকয়েক পুলিশকর্মী ছাড়া তেমন কারও দেখা মেলেনি। বেশ কিছু ক্ষণ দাঁড়ানোর পরে এক তৃণমূল কর্মীকে দেখা গেল, বাইকে পতাকা লাগিয়ে এগিয়ে আসতে। সামনের রাস্তায় এসে বাইক থামিয়ে তিনি বললেন, ‘‘এখন এখানে কিছু হবে না। সকলে ফিরলে আলোচনা করে সব ঠিক হবে।’’

মানিকতলার বাকি অংশেও কার্যত একই ছবি দেখা গিয়েছে। তবে, কিছুটা ব্যতিক্রমী ছবি দেখা যায় মুচিবাজার মোড় ও মুরারিপুকুরে। সেখানে সকাল থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মাইক বেঁধে বিজয়োৎসবের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। ছিল দেদার আবিরের ব্যবস্থা। মুচিবাজারে বেলা বাড়তেই শুরু হয় আবির খেলা। সেখানে গানের তালে আবির খেলতে ব্যস্ত এক তৃণমূল কর্মী বললেন, ‘‘ভোটের এই খেলায় বিরোধীদের তো দেখাই গেল না। এ তো এক কথায় ফাঁকা মাঠে গোল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Assembly by-election By-Election Manicktala TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE