কালী প্রতিমা দেখতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়েছেন পথচারীরা। শনিবার, আমহার্স্ট স্ট্রিটে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
ভিড় টানতে নজরকাড়া মণ্ডপের সঙ্গে দু’দিন আগেই কোথাও শুরু হয়েছে জলসা। বাইরে থেকে শিল্পীদের আনিয়ে উদ্বোধনের দিন থেকে অনুষ্ঠানও চলছে কোথাও কোথাও। কেউ আবার পুজোর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে মেলার উদ্বোধনও করে দিয়েছেন দু’দিন আগেই। কারও আবার অনুষ্ঠানের ইচ্ছে থাকলেও ভিআইপি এলাকা হওয়ায় পুলিশের অনুমতি মেলেনি। শহর জুড়ে ভিড় টানার প্রতিযোগিতায় রাস্তা আটকে পুজো ও জলসার আয়োজনের খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
তিথি মেনে আজ, রবিবার কালীপুজো। যদিও শহরের বহু জায়গায় পুজোর উদ্বোধন শুরু হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিন আগে থেকেই। এ জন্য শুক্রবার রাত থেকে শহরের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার জেরে ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হয় তাঁদের।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্বোধন হয়েছে মধ্য কলকাতায় ফাটাকেষ্টর পুজো নামে খ্যাত কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট সংলগ্ন সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের কালীপুজো। ওই পুজোর উদ্যোক্তারা প্রতি বছরের মতোই রীতি মেনে জলসার আয়োজন করেছেন। এ জন্য কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে মঞ্চ বেঁধে শুক্রবার রাত থেকেই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সন্ধ্যার পর থেকে রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় সেখানে। একই অবস্থা ছিল শনিবার রাতেও। পুজোর এক উদ্যোক্তা সুকৃতি দত্তের দাবি, ‘‘এমনিতেই আমাদের পুজো বিখ্যাত। ভিড় টানার প্রয়োজন হয় না। বরং সকল দর্শনার্থীকে প্রতিমা দেখার সুযোগ করে দিতেই আগে উদ্বোধন হয়। কালীপুজোর দিন বাদে প্রতিদিনই অনুষ্ঠান থাকছে এখানে। এটা বহু বছরের পুরনো রেওয়াজ। ভিড়ে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য পুলিশই রাস্তা বন্ধ করে দেয়।’’
শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজা রামমোহন রায় সরণি সংলগ্ন একাধিক রাস্তার যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে জানাচ্ছে লালবাজার। রাস্তা জুড়ে মেলা, অনুষ্ঠান ও মণ্ডপ ঘিরে দর্শক সমাগমে সন্ধ্যার পরে গাড়ি চলাচলের উপায় ছিল না। আমহার্স্ট স্ট্রিট সাধারণ শ্রীশ্রী কালীপুজো কমিটি শুক্রবার পুজো উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে উদ্বোধন করেছে মেলারও। এক উদ্যোক্তা সুশান্ত চক্রবর্তী বললেন, ‘‘পুজোর সঙ্গে মেলাও আমাদের আকর্ষণ। কালীপুজো এক দিনের হলেও উৎসব তো এক দিনে শেষ হয় না।’’
মধ্য কলকাতার পাশাপাশি রাস্তা বন্ধ করে অনুষ্ঠান করার অভিযোগ তুলেছেন দমদম রোড সংলগ্ন দীপেন ঘোষ সরণির বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, শাসকদলের প্রভাবশালী এক নেতা জুড়ে রয়েছেন ওই পুজোর সঙ্গে। যে কারণে এই পুরনো পুজো ঘিরে গত কয়েক বছর ধরে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এ দিন সকাল থেকেই ওই পুজোর জলসার জন্য দমদম রোডের সঙ্গে সংযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ এই পঞ্চাশ ফুট রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েক দিন ধরে শিল্পীদের আনিয়ে সেখানে চলছে অনুষ্ঠান। দক্ষিণের রিজেন্ট পার্ক, চেতলা, ভবানীপুরের একাধিক রাস্তাতেও একই কারণে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে ভিড় টানার ইচ্ছে থাকলেও পিছিয়ে আসতে হয়েছে হরিশ মুখার্জি রোডের ভেনাস ক্লাবের কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের। দিন চারেক আগে উদ্বোধন হলেও সাংস্কৃতিক কোনও অনুষ্ঠান করছেন না তাঁরা। এই পুজোর এক উদ্যোক্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভিভিআইপিদের এলাকা। রাস্তা আটকে কিছু করা যাবে না। যা অনুষ্ঠান হবে, পুজোর মাস দুই পরে।’’
পুজোর আগেই রাস্তা বন্ধ করে উৎসব পালন করা প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তা শুধু বলছেন, ‘‘যান চলাচলে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, প্রতিটি থানা এবং গার্ডকে সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy