বিক্ষোভ: অবস্থানে বসেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। সোমবার, আর জি কর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
দু’পক্ষেরই অভিযোগ পরস্পরের বিরুদ্ধে। কিন্তু পরিণাম একই— রোগীদের ভোগান্তি!
পড়ুয়া-চিকিৎসকদের এক পক্ষের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁদের দাবি মেনে সমস্যার সমাধান করছেন না। তাই তাঁরা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে অনশন-বিক্ষোভে বসেছেন। আর এক পক্ষের দাবি, ওই পড়ুয়ারা অযথা বিভিন্ন দাবি তুলে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
যুযুধান দু’পক্ষের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে সোমবার সরগরম হয়ে উঠল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। রবিবার রাত থেকে প্রথম পক্ষ অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে মঞ্চ বেঁধে অনশনে বসে। আবার, এ দিন সকাল থেকে ওই কার্যালয়ের সামনেই বিক্ষোভ শুরু করে অপর পক্ষ। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এ হেন বিক্ষোভে রোগী পরিষেবা কি ব্যাহত হচ্ছে না? যদিও উভয় পক্ষেরই দাবি, ‘‘সকলের তো এক সময়ে ডিউটি থাকছে না। তাই রোগী পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটেনি।’’
শেষে স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তাদের হস্তক্ষেপে সন্ধ্যায় কলেজ কাউন্সিলের তরফে বিক্ষোভকারীদের দু’পক্ষেরই পাঁচ জন করে প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা হয়। কিন্তু ঠিক পদ্ধতি মেনে ছাত্র সংসদ গঠন, চারটি হস্টেলের জন্য পৃথক উন্নয়ন কমিটি তৈরি, মহিলা হস্টেলে থাকার জায়গার সমস্যার সমাধান, হস্টেলের পরিকাঠামোর উন্নয়ন এবং হাউসস্টাফ নিয়োগে স্বচ্ছতার দাবিতে যাঁরা প্রায় দু’মাস ধরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাঁরা বৈঠকের পরেও অনশন তোলেননি।
সেই পক্ষের এক পড়ুয়া-চিকিৎসক বলেন, ‘‘সব সমস্যার সমাধান না হওয়ায় অনশন তোলা হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে দাবিগুলি জানালেও সুরাহা হচ্ছে না। উল্টে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা সরকার-বিরোধী নই। শুধু সমস্যাটি সরকারের কানে তুলতে চাইছি।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, গত ১ অক্টোবরও অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি।
তবে এ দিন সকাল থেকে যে পড়ুয়া-চিকিৎসকেরা প্রতিবাদ শুরু করেছিলেন, সন্ধ্যায় বৈঠকের পরে তাঁরা অবস্থান তুলে নেন। সেই পক্ষের তরফে রোহন কুন্ডু, সুমন হাজরা বলেন, ‘‘যাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের কথা মতো হস্টেল উন্নয়ন কমিটি এবং হাউসস্টাফ নিয়োগ, হস্টেল বণ্টনের বিষয়ে নির্দিষ্ট এসওপি তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আবার, আমাদের দাবি মতো কলেজে পড়াশোনার পরিবেশ দ্রুত ফিরিয়ে আনার বিষয়েও তাঁরা আশ্বাস দিয়েছেন। তাই আমরাও আপাতত বিক্ষোভ তুলে নিয়েছি।’’ সম্প্রতি এসএসকেএম হাসপাতালে শহরের মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, চিকিৎসক-বিধায়ক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘কোনও পক্ষেরই বিক্ষোভ দেখানো ঠিক নয়। কলেজ কাউন্সিল ওঁদের নিয়ে বৈঠক করেছে। প্রয়োজনে আমিও দু’পক্ষকে নিয়ে বসব। দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ চিকিৎসার জন্য আসেন। রোগী-পরিষেবার স্বার্থেই দ্রুত কলেজে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে।’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ইতিমধ্যেই কলেজ সংলগ্ন অনাথনাথ দেব লেনে প্রায় ১০ বিঘা জমি দিয়েছে সরকার। সেখানেই অনেকগুলি হস্টেল তৈরি হবে। পাশাপাশি, বর্তমানের হস্টেল-সমস্যার সমাধানে নর্থ সাবার্বান হাসপাতাল এবং ইন্দিরা মাতৃসদনের কোয়ার্টার্সে ব্যবস্থার কথাও বলা হয়েছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ পড়ুয়া-চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, হাসপাতাল থেকে ওই কোয়ার্টার্স অনেক দূরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy