Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Calcutta News

১০ মিনিটের মধ্যে অবস্থা খারাপ, দাবি চিকিৎসকের

একবালপুরের সিএম‌আর‌আই হাসপাতালে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন পিঙ্কি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:১১
Share: Save:

দশ মিনিটেই স্থিতিশীল থেকে অতি সঙ্কটজনক অবস্থায় চলে গিয়েছিলেন পিঙ্কি ভট্টাচার্য। সিএমআরআই হাসপাতালের চিকিৎসক বাসব মুখোপাধ্যায় পিঙ্কির পরিজনদের সে কথা জানিয়েছিন বলে শুক্রবার প্রকাশিত একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে।

একবালপুরের সিএম‌আর‌আই হাসপাতালে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন পিঙ্কি। সিজারের ১৮ ঘণ্টা পরে প্রসূতির মৃত্যু কী ভাবে হল, তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ে বাসব মুখোপাধ্যায়ের গালে চড় কষিয়ে দেন মৃতার স্বামী তপেন ভট্টাচার্য। ওই বেসরকারি হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বৃহস্পতিবার থেকে চিকিৎসক সমাজে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এ দিন সেই দৃশ্যের অডিয়ো-সহ একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা গিয়েছে, চিকিৎসক বাসব মুখোপাধ্যায় মৃতার পরিজনদের কাছে দাবি করছেন, অস্ত্রোপচার এবং সন্তান প্রসবের পরে রোগীর শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিল।

ভিডিয়োয় দেখা-শোনা যাচ্ছে, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের কখন‌ও মনে হয়নি, পিঙ্কির কোন‌ও অসুখ বা শারীরিক অসুবিধা রয়েছে। বুধবার রাত ন’টার সময় যখন হাসপাতালে তিনি রাউন্ড দেন, তখন‌ও পিঙ্কি সুস্থ ছিলেন। ভোর তিনটে নাগাদ রোগীর ব্যথা হচ্ছে বলে তিনি জানতে পারেন। চিকিৎসক রোগীর পরিজনদের ভিডিয়োয় বলছেন, ‘‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে অনেক সময়ে ব্যথা হয়। কিন্তু রোগীর নাড়ির স্পন্দন এবং রক্তচাপের মাত্রা ঠিক ছিল।’’ চিকিৎসক রোগীর পরিজনদের জানান, এটা রাত তিনটের ঘটনা। দশ মিনিট পরে তিনি খবর পান, রোগীর অস্বস্তির মাত্রা অস্বাভাবিক বেড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: আট গুণ বেশি দূরত্ব পেরিয়ে ইমার্জেন্সিতে অ্যাম্বুল্যান্স

ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, চিকিৎসক তার পর বলেন, ‘‘রোগীর শরীর তখন ছেড়ে দিয়েছে। রক্তচাপ, নাড়ির স্পন্দন কিছু পাওয়া যাচ্ছে না।’’ এ ধরনের পরিস্থিতিতে ‘কোড ব্লু’ নামে একটি ‘বাটন’ নার্সরা বাজালে জরুরি বিভাগ, আইসিইউ থেকে চিকিৎসকেরা চলে আসেন। পিঙ্কির ক্ষেত্রে তাই হয়েছিল বলে চিকিৎসক দাবি করেন। এর পর আইসিইউয়ে নিয়ে গিয়ে পিঙ্কিকে ‘কার্ডিয়াক ম্যাসাজ’ দেওয়া হয়। তখন চিকিৎসককে থামিয়ে পরিজনেরা জানতে চান, রোগীর ওই অবস্থা হল কী করে! ময়না-তদন্ত ছাড়া তা বলা সম্ভব নয়— চিকিৎসক এ কথা বলতেই মৃতার স্বামী সোফা থেকে উঠে চিকিৎসককে চড় মারেন।

হাসপাতালের কাউন্সেলিং রুমে এক জন চিকিৎসককে মৃতার উত্তেজিত পরিজনদের সামনে কেন দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল, ভিডিয়ো দেখার পরে সেই প্রশ্ন উঠেছে। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওই ঘরে সেই সময় পুলিশ এবং হাসপাতালের রক্ষীরা ছিলেন। তাঁদের ভূমিকা কী ছিল? অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, মৃতার পরিজনেরা যে মানসিক অবস্থায় ছিলেন, তাতে অনভিপ্রেত ঘটনা যে ঘটতে পারে, তা আন্দাজ করা গেল না! হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতিনিধি সেখানে ছিলেন। বাইরে গন্ডগোল কেন হচ্ছে, তা রক্ষীরা বোঝার চেষ্টা করছিলেন। তখনই চড় মারার ঘটনাটি ঘটে।

এ দিন সিএম‌আর‌‌আই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরাম’ এবং ‘ডক্টর ফর পেশেন্ট’-এর প্রতিনিধিরা। ফোরামের সম্পাদক কৌশিক চাকী বলেন, “রোগীর পরিজনদের খারাপ খবর দেওয়া খুব কঠিন কাজ। এমন মুহূর্তে আরও সতর্ক হ‌ওয়া উচিত ছিল। কোন‌ও সভ্য দেশে এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।” সিএম‌আর‌আই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করার পরে ওই সংগঠনের সভাপতি অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, “দোষীদের শাস্তি না হলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।”

অন্য বিষয়গুলি:

Death Ekbalpur CMRI
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE